রাজউকের পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে প্লট বরাদ্দে অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, তার বোন শেখ রেহানা এবং রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ সিদ্দিকসহ ১৭ জনের বিরুদ্ধে করা মামলার রায় আজ ঘোষণা করা হবে।
ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ এর বিচারক মো. রবিউল আলম এই মামলার রায় ঘোষণার জন্য দিন নির্ধারণ করেছেন।
গত ২৫ নভেম্বর মামলার যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হয়। উভয় পক্ষের বক্তব্য শোনার পর আদালত আজকের দিনটি রায় ঘোষণার জন্য ঠিক করেন।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন-জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পুরবী গোলদার, অতিরিক্ত সচিব অলিউল্লাহ, সচিব কাজী ওয়াছি উদ্দিন, রাজউক-এর সাবেক চেয়ারম্যানের পিএ মো. আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, তন্ময় দাস, মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, মেজর (ইঞ্জি.) সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী (অব.), সাবেক পরিচালক মো. নুরুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক মাজহারুল ইসলাম, উপ-পরিচালক নায়েব আলী শরীফ, সাবেক প্রধানমন্ত্রীর একান্ত সচিব-১ মোহাম্মদ সালাহ উদ্দিন এবং সাবেক গৃহায়ন ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ। এদের মধ্যে আসামি খুরশীদ আলম কারাগারে আটক রয়েছেন।
মামলার নথি অনুযায়ী, শেখ রেহানা ১০ কাঠা প্লট বরাদ্দ নিতে ক্ষমতার অপব্যবহার করেছেন—এ অভিযোগে চলতি বছরের ১৩ জানুয়ারি দুদকের উপ-পরিচালক সালাহউদ্দিন মামলা করেন। তদন্ত শেষে ১০ মার্চ দুদকের সহকারী পরিচালক আফনান জান্নাত কেয়া ১৭ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করেন।
৩১ জুলাই আদালত অভিযোগ গঠন করে বিচার শুরুর নির্দেশ দেন। বিচার প্রক্রিয়ায় মোট ৩২ জন সাক্ষী আদালতে জবানবন্দি দেন।
পূর্বাচল প্রকল্পে প্লট বরাদ্দের অনিয়ম নিয়ে দুদক জানুয়ারিতে আরও ৬টি মামলা করে। সেসব মামলায় শেখ হাসিনার পাশাপাশি তার ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুল, বোন শেখ রেহানা, রেহানার সন্তান টিউলিপ সিদ্দিক, রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেকে আসামি হয়েছেন। তারা পলাতক থাকায় আদালত তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, সরকারপ্রধান থাকার সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও তার পরিবার ক্ষমতার অপব্যবহার করে পূর্বাচলের সেক্টর–২৭ এ একই সড়কের ছয়টি প্লট অবৈধভাবে বরাদ্দ নেন, যা বরাদ্দের নীতিমালার সুস্পষ্ট লঙ্ঘন।
দীর্ঘ তদন্ত ও বিচারকাজ শেষে আজ ঘোষণা হতে যাচ্ছে বহুল আলোচিত এই মামলার রায়। রাজনৈতিক মহল থেকে সাধারণ মানুষ—সবার মধ্যেই রায় নিয়ে তীব্র আগ্রহ দেখা দিয়েছে।
