অনেকের ধারণা, চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণের সময়কালে কিছু সতর্কতা মেনে চলতে হয়। বিশেষ করে গর্ভবতী দেরকে এই সময় বিশেষ বিধিনিষেধ মানতে হয়। নয়তো গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে।
প্রচলিত এই ধারণা সত্য নয় বলে ইসলাম ধর্মে উল্লেখ করা হয়। ইসলাম ধর্মে উল্লেখ করা হয় যে, চন্দ্রগ্রহণ বা সূর্যগ্রহণ সাধারণ একটি প্রাকৃতিক ঘটনা। এটা আল্লাহর কুদরতের অন্যতম নিদর্শন। এই গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষ কোনো সমস্যা হয় বা তারা কোনো ঝুঁকিতে থাকেন না। বরং চন্দ্রগ্রহণের সময় আল্লাহর প্রতি আরো বেশি নিবিষ্ট হওয়া, ইবাদত করতে হয়।
মহানবী মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "চন্দ্রগ্রহণ এবং সূর্যগ্রহণ মহান আল্লাহর নিদর্শনসমূহের মধ্যে একটি নিদর্শন। এগুলো কারো মৃত্যু বা জন্মের কারণে সংঘটিত হয় না। সুতরাং তোমরা যখন এদের দেখতে পাও, তখন নামাজ পড় এবং আল্লাহকে ডাকো।" (বুখারি ১০৪৪, মুসলিম ৯০১)
এই হাদিস অনুযায়ী বলা যায়, চন্দ্রগ্রহণ কোনো অশুভ বা বিপদের নিদর্শন নয়। মহানবী (সা.) এই সময় মানুষকে আল্লাহর ইবাদত করতে বলেছেন।
পবিত্র কোরআনে চন্দ্র ও সূর্যের নিদর্শন সম্পর্কে বলা হয়েছে, "তিনিই (আল্লাহ) যিনি সূর্যকে করেছেন আলোদাতা এবং চন্দ্রকে করেছেন আলোপ্রাপ্ত। এবং তিনি তার বিভিন্ন অবস্থান নির্ধারণ করেছেন যাতে তোমরা বছরের সংখ্যা ও হিসাব জানো। আল্লাহ এগুলো কেবলমাত্র যথার্থতা এবং সত্যের ভিত্তিতে সৃষ্টি করেছেন।" (সুরা ইউনুস, আয়াত ৫)
এ আয়াতে মহান আল্লাহ চন্দ্র ও সূর্যের নিদর্শন উল্লেখ করে বলেছেন যে, এগুলো সৃষ্টির মধ্যে আল্লাহর মহান কুদরতের একটি অংশ। এখানে কোনো অশুভ লক্ষণের কথা উল্লেখ নেই।
কোরআনের আয়াতে ও হাদিস অনুযায়ী চন্দ্রগ্রহণের সময় গর্ভবতী নারীদের জন্য বিশেষ কোনো বিধিনিষেধ উল্লেখ নেই। তবে এই সময় আল্লাহর ইবাদত করার নির্দেশনা রয়েছে। তাই সূর্যগ্রহণ ও চন্দ্রগ্রহণের সময় আল্লাহর কাছে নামাজ পড়া, দোয়া করা এবং তার সৃষ্টির কুদরত নিয়ে সন্তুষ্টি আদায় করা উচিত।