কোরবানি স্বাভাবিক কোনো আমল নয়। এর সঙ্গে মিশে আছে অনেক তাৎপর্য। এতে পশু জবাই করার মাধ্যমে রয়েছে মহান আল্লাহর সন্তুষ্টিলাভের অফুরন্ত সুযোগ। হজরত যায়েদ বিন আরক্বাম (রা.) বলেন, রাসুল (স.)-এর সাহাবিরা জিজ্ঞেস করলেন, হে আল্লাহর রাসুল, এই কোরবানিটা কী? রাসুল (স.) জবাবে বললেন, তোমাদের পিতা ইব্রাহিম (আ.)-এর সুন্নত বা আদর্শ।
তারা জিজ্ঞেস করলেন, এতে আমাদের জন্য কী ফায়েদা রয়েছে হে আল্লাহর রাসুল? তিনি বললেন, (কোরবানির পশুর) প্রতিটি পশমের বিনিময়ে একটি করে নেকি রয়েছে। সাহাবিরা আবার জানতে চইলেন, হে আল্লাহর রাসুল! ভেড়া-দুম্বার পশমের ব্যাপারে কী কথা? তিনি বললেন, এর প্রতিটি পশমের বিনিময়েও এক একটি নেকি রয়েছে। (ইবনু মাজাহ)।
মৃত ব্যক্তিদের জন্য কোরবানি করা জায়েজ ও সওয়াবের কাজ। তাদের নামে যেমন সদকা করা যায়, তেমনি তার নামে কোরবানিও দেওয়া যায়। মৃত ব্যক্তি এর দ্বারা উপকৃত হবে।
মৃত ব্যক্তির জন্য সদকার বিষয়ে হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি রাসলুল্লাহ (সা.)-এর কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে রাসুল! আমার মা হঠাৎ ইন্তেকাল করেছেন। কোনো অসিয়ত করে যেতে পারেননি। আমার মনে হয় তিনি কোনো কথা বলতে পারলে অসিয়ত করে যেতেন। আমি যদি এখন তার পক্ষ থেকে সদকা করি, তাতে কি তার সওয়াব হবে? তিনি উত্তর দিলেন, হ্যাঁ। (সহিহ বুখারি, হাদিস নং ১৩৩৮; সহিহ মুসলিম, হাদিস নং ১০০৪)।
যদি কোনো কারণে মৃত ব্যক্তির জন্য কোরবানি ওয়াজিব হয়ে থাকে তাহলে তার জন্য পূর্ণ একটি কোরবানি করতে হবে। অনেক সময় দেখা যায় ব্যক্তি নিজেকে বাদ দিয়ে মৃত ব্যক্তির জন্য মৃত ব্যক্তির পক্ষে কোরবানি করেন। এটা মোটেই ঠিক নয়। ভালো কাজ নিজেকে দিয়ে শুরু করতে হয় তারপর অন্যান্য জীবিত ও মৃত ব্যক্তির পক্ষ থেকে করা যেতে পারে।
হাদিসে এসেছে, আয়েশা (রা.) ও আবু হুরাইরা (রা.) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সা.) যখন কোরবানি দিতে ইচ্ছা করলেন, তখন দুটি দুম্বা কিনলেন, যা ছিল বড়, হৃষ্টপুষ্ট, শিংওয়ালা, সাদা-কালো বর্ণের এবং খাসি। একটি তিনি তার ওই সব উম্মতের জন্য কোরবানি করলেন; যারা আল্লাহর একত্ববাদ ও তার রাসুলের রিসালাতের সাক্ষ্য দিয়েছে, অন্যটি তার নিজের ও পরিবারের জন্য কোরবানি করেছেন। (ইবনে মাজা, হাদিসটি সহিহ)