• ঢাকা
  • শনিবার, ৩১ মে, ২০২৫, ১৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ০৪ জ্বিলহজ্জ ১৪৪৬

জাপানের সঙ্গে যেসব চুক্তি হলো বাংলাদেশের


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মে ৩০, ২০২৫, ০৯:৫৬ এএম
জাপানের সঙ্গে যেসব চুক্তি হলো বাংলাদেশের
ড. মুহাম্মদ ইউনূস ও জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবা। ছবি : সংগৃহীত

প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। শুক্রবার (৩০ মে) টোকিওতে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিগেরু ইশিবার কার্যালয়ে তাদের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে দুই দেশের মধ্যে বেশ কিছু সমঝোতা স্মারক ও চুক্তি স্বাক্ষর হয়। 

দুই নেতার মধ্যে বৈঠক নিয়ে যৌথ প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বাংলাদেশ ও জাপানের মধ্যে বিদ্যমান দীর্ঘস্থায়ী বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্মরণ করে উভয় পক্ষ কৌশলগত অংশীদারিত্বে তাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছে।

উভয় নেতা আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়াবলি নিয়ে আলোচনা করেন এবং জাতিসংঘ সনদের মূলনীতি মেনে চলার মাধ্যমে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় সহযোগিতা জোরদার করার প্রতিশ্রুতি দেন। উভয় পক্ষ নিয়মভিত্তিক বহুপাক্ষিক ব্যবস্থার এবং গণতন্ত্রের প্রতি তাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।
তারা আন্তরিকভাবে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ও পারস্পরিক আগ্রহের বিষয়গুলো নিয়ে গভীর আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী ইশিবা অন্তর্বর্তী সরকার ও ড. ইউনূসের নেতৃত্বে বাংলাদেশের সংস্কারমূলক কর্মকাণ্ড, শান্তিপূর্ণ রূপান্তরের প্রচেষ্টা এবং জাতি গঠনের কর্মকাণ্ডে জাপানের পূর্ণ সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করেন।


বৈঠকে ড. ইউনূস জাপান সরকারকে বাংলাদেশে টেকসই অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে ধারাবাহিক সহায়তার জন্য কৃতজ্ঞতা জানান, বিশেষত ‘বিগ-বি’ উদ্যোগ এবং মহেশখালী-মাতারবাড়ী একীভূত অবকাঠামো উন্নয়ন উদ্যোগের (এমআইডিআই) আওতায় বিভিন্ন প্রকল্পে জাপানের অবদানকে তুলে ধরেন।

এ প্রসঙ্গে উভয় পক্ষ ‘অর্থনৈতিক সংস্কার এবং জলবায়ু পরিবর্তন সহনশীলতা জোরদারকরণে উন্নয়ন নীতিগত ঋণ’ এবং ‘জয়দেবপুর-ঈশ্বরদী সেকশনের মধ্যে ডাবল গেজ ডাবল লাইন নির্মাণ প্রকল্প (পর্ব ১)’ শীর্ষক ঋণচুক্তির বিনিময় নোট স্বাক্ষরকে স্বাগত জানায়।

দুই দেশের নেতা একাধিক সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) ও সহযোগিতা স্মারক (এমওসি) স্বাক্ষরকে স্বাগত জানান, যার মধ্যে রয়েছে—বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (বিডা) ওয়ান স্টপ সার্ভিস (ওএসএস) চালু, প্রিপেইড গ্যাস মিটার স্থাপন, ব্যাটারিচালিত সাইকেল তৈরির কারখানা স্থাপন, তথ্য নিরাপত্তার পাইলট প্রকল্প চালু এবং বাংলাদেশ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (বিএসইজেড)-এর সঙ্গে জমি চুক্তি, যা জাপানি বিনিয়োগে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। উভয় পক্ষ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তি (ইপিএ) পারস্পরিক সুবিধাজনকভাবে সম্পন্ন করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।

দুই নেতা রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা আরও দৃঢ় করার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন, যার মধ্যে রয়েছে জাপানের সরকারি নিরাপত্তা সহায়তা (ওএসএ) কর্মসূচির অধীনে বাংলাদেশ নৌবাহিনীর জন্য পাঁচটি টহল নৌকা দ্রুত সরবরাহ করা। তারা ‘প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি স্থানান্তর সম্পর্কিত চুক্তি’ বিষয়ে মূলত সম্মত হয়েছেন এবং এটি দ্রুত চূড়ান্ত করার আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

উভয় পক্ষ দক্ষ মানবসম্পদ বিনিময়সহ সাংস্কৃতিক সম্পর্ক জোরদারের বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। এ প্রসঙ্গে, ড. ইউনূস বাংলাদেশে মানবসম্পদ উন্নয়নে জাপানের সহায়তা, বিশেষ করে ‘ম্যানপাওয়ার উন্নয়ন স্কলারশিপ প্রকল্প’-এর জন্য প্রধানমন্ত্রী ইশিবাকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী ইশিবা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেওয়ায় বাংলাদেশের মানবিক উদ্যোগের প্রশংসা করেন।

Link copied!