বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, “১০ মাসের অন্তর্বর্তী সরকার এখনো জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। ফলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে।”
বৃহস্পতিবার (২৯ মে) বিকেলে রাজধানীর রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে বিএনপি আয়োজিত এক আলোচনা সভায় ভার্চুয়ালি সংযুক্ত হয়ে প্রধান আলোচকের বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।
তারেক রহমান বলেন, “আমরা মনে করি প্রস্তাবিত সংস্কার শেষ করে, যদি তাদের (সরকার) ইনটেনশন ভালো থাকে, গণতন্ত্রের পক্ষে থাকে, তাহলে ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন দেওয়া সম্ভব। তবে বিভিন্ন বিষয়ে বিবেচনা করে আমি এটাও মনে করি যে, ডিসেম্বরের আগেও নির্বাচন অনুষ্ঠান সম্ভব।“
তিনি বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকারের কাছে আবারও আহ্বান জানাচ্ছি- জনগণের আকাঙ্ক্ষা ধারণ করুন। ডিসেম্বরের মধ্যেই সুনির্দিষ্ট করে নির্বাচনের দিন-তারিখ ঘোষণা করুন। এখানে অন্তর্বর্তী সরকারের জয় বা পরাজয়ের কোনো কিছু নেই। বরং স্বাধীনতাপ্রিয় জনগণকে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন উপহার দিয়ে গণতন্ত্রকে বিজয়ী করুন।”
বিএনপির এই নেতা আরও বলেন, “দেড় দশকের ফ্যাসিবাদী শাসনের পতন হয়েছে। একটি অন্তর্বর্তী সরকার দেশ পরিচালনা করছে। গণঅভ্যুত্থানের পরে বিশেষ পরিস্থিতিতে দায়িত্ব নেওয়া এই সরকার হয়তো বৈধ। তবে এটি কোনোভাবেই জবাবদিহিমূলক সরকার নয়। ১০ মাসের অন্তর্বর্তী সরকার এখনো জাতীয় নির্বাচনের সুনির্দিষ্ট তারিখ ঘোষণা করেনি। ফলে রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে এক ধরনের অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। আর এই অনিশ্চয়তার কারণে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রায় স্থবির হয়ে পড়েছে। জনগণের ভোটে একটি স্থিতিশীল সরকার না থাকায় কাঙ্ক্ষিত বিনিয়োগও হচ্ছে না।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “রাষ্ট্র পরিচালনায় জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে প্রাধান্য দেওয়া জরুরি। সরকার বা সরকারপ্রধানের চিন্তা-চেতনা জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার প্রবণতা থেকেই স্বৈরাচারের জন্ম হয়। রাষ্ট্র ও জনগণের ওপর যেন স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠিত না হয়, সেজন্য রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা প্রতিষ্ঠা করা অত্যন্ত জরুরি। জনগণের ভোট ও জবাবদিহিতার মাধ্যমেই রাষ্ট্র ও সরকারকে জনগণের কাছে দায়বদ্ধ করা সম্ভব।”
তিনি আরও বলেন, “শহীদ জিয়ার রাষ্ট্রচিন্তা থেকে প্রত্যেকটি রাজনীতিবিদের জন্য একটি বার্তা রয়েছে। সেটি হলো- রাষ্ট্র পরিচালনায় সফল হতে হলে জনগণের আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করতে হবে। দেশ ও জনগণের স্বার্থকে আগে বিবেচনা করতে হবে। স্বাধীনতার ঘোষকের আদর্শ বাস্তবায়ন করতে চাইলে শহীদ জিয়ার প্রতিটি সৈনিক, খালেদা জিয়ার প্রত্যেকটি কর্মীকে আমি আহ্বান জানাই-আপনারা জনগণের সঙ্গে থাকুন, জনগণকে অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।”
বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। সভায় গুলশানের বাসা ‘ফিরোজা’ থেকে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে প্রধান অতিথির রেকর্ডকৃত লিখিত বক্তব্য দেন বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া। আলোচনাকালীন সময়ে জিয়াউর রহমানের ওপর নির্মিত একটি ভিডিও ডকুমেন্টারি প্রদর্শন করা হয়।