বিজ্ঞানীরা ছাড়াও মহাকাশের রহস্যের প্রতি আকর্ষণ এখন সাধারণ মানুষেরও কম নয়। বুধবার চন্দ্রযান বিক্রমের সফল ‘সফট ল্যান্ডিং’-এর পর চাঁদে যাওয়ার স্বপ্ন হয়তো অনেকের মনেই উঁকি মারছে। স্পেসফ্লাইট কিন্তু মানুষের জন্য একটি কঠোর অভিজ্ঞতা।
প্রথমত, মহাজাগতিক যে বিকিরণ রয়েছে, তা শরীরের ওপর মারাত্মক প্রভাব ফেলে এবং তার ওপরে মাইক্রোগ্র্যাভিটি যা শরীর মধ্যস্থ তরল এবং রক্তচাপের ওপর হস্তক্ষেপ করে প্রতিনিয়ত। এ ছাড়া পরিবার-পরিজন ছেড়ে দীর্ঘদিনের জন্য এতটা দূরে থাকা মন দুর্বল করে দেয়। এতে মানসিক স্বাস্থ্যের ব্যাপক ক্ষতি হয়।
মহাকাশচারীদের এ ধরনের পরিস্থিতির সঙ্গে মোকাবিলা করার জন্য বছরের পর বছর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তবু মহাকাশে গিয়ে তাদের নানান শারীরিক সমস্যা হওয়ার আশঙ্কা থাকে। স্পেস হেলথ রিসার্চ অনুযায়ী দীর্ঘ সময় মহাকাশযাত্রা শরীরের প্রায় প্রতিটি তন্ত্র, শরীরের কার্ডিয়োভাসকুলার এবং মেটাবলিক সিস্টেম থেকে শুরু করে ইমিউন সিস্টেমের ওপরেও প্রভাব ফেলতে পারে।
দীর্ঘমেয়াদি মহাকাশ মিশনের সময় মহাকাশচারীরা সবচেয়ে বেশি যে সমস্যার মুখোমুখি হয়, তা হলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়া। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে মহাকাশচারীরা মহাকাশে অনেক ক্ষেত্রেই ভাইরাল সংক্রমণেই কাবু হয়ে যান। অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় যে, সেই ভাইরাসগুলো কিন্তু তারা পৃথিবী থেকেই নিজের শরীরে বহন করে নিয়ে যান।
আর তাই অনেক ক্ষেত্রেই মহাকাশচারীদের ত্বকে বিভিন্ন রকম সংক্রমণ শুরু হয়। আমাদের শরীরে কোনো ভাইরাল সংক্রমণ হলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ শক্তি সেই ভাইরাসের মোকাবিলা করে এবং সময়ের সঙ্গে আমরা সুস্থ হয়ে উঠি।
তবে শরীরে কিন্তু সেসব ভাইরাস দীর্ঘদিন লুকিয়ে থাকে। মহাকাশে গেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে সেই ভাইরাসগুলো আবার সক্রিয় হতে থাকে দ্রুত সময়ে। আবার পৃথিবীতে ফিরে আসার পাঁচ সপ্তাহের মধ্যে রোগ প্রতিরোধ শক্তি স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে। তারপর ভাইরাল সংক্রমণগুলো কমতে শুরু করে।
সূত্র: আনন্দবাজার