ঘরের সাজসজ্জা ও ব্যবহারিক প্রয়োজন মেটাতে আসবাবপত্র অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তবে আসবাবপত্র কিনতে গিয়ে অনেকেই শুধু ডিজাইন বা দাম দেখে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু ব্যবহারিক দিক থেকে তা সমস্যা করে। আসবাবপত্র যেন দীর্ঘস্থায়ী, সুন্দর, আরামদায়ক ও কার্যকর হয়, সে জন্য কেনার আগে কিছু বিষয় বিবেচনায় নেওয়া জরুরি।
ঘরের আয়তন ও আসবাবের মাপ
প্রথমেই ঘরের আয়তন অনুযায়ী আসবাবের আকার বেছে নিন। ছোট ঘরে বড় সোফা বা বেড রাখলে ঘর ভরাট দেখাবে ও চলাফেরা অসুবিধা হবে। তাই
ঘরের মাপজোখ করে নিন, আসবাবের আকার সেই অনুযায়ী ঠিক করুন, আসবাবপত্র ঘরে বসালে চারপাশে পর্যাপ্ত জায়গা থাকবে কি না, তা বিবেচনা করুন।
আসবাবের ব্যবহারিক প্রয়োজন
কোন আসবাবটি শুধু শোভাবর্ধন করছে আর কোনটি বাস্তব কাজে লাগছে, তা ভাবুন। অপ্রয়োজনীয় ফার্নিচার ঘর ভারী করে তোলে।
বেশি গেস্ট এলে সোফার সাইজ বড় হতে পারে
পড়াশোনার জন্য ডেস্ক দরকার হলে ছোট ও কম জায়গা নেওয়া টেবিল বেছে নিন।
টেকসই উপাদান
আসবাবপত্রের মূল কাঠামো কী দিয়ে তৈরি তা খুব গুরুত্বপূর্ণ। সাধারণত কাঠ, মেটাল, প্লাইউড বা এমডিএফ বোর্ড দিয়ে তৈরি হয়ে থাকে। খেয়াল রাখুন আসবাবপত্রে শক্ত ও টেকসই কাঠ (যেমন সেগুন, শিমুল) ব্যবহার করা হয়েছে কি না, পানির সংস্পর্শে আসবে এমন আসবাবে জলরোধী কোটিং আছে কি না।
ডিজাইন ও রঙের সঙ্গে ঘরের সামঞ্জস্য
ঘরের দেয়ালের রং, পর্দা, ফ্লোরিং-এর সঙ্গে মিল রেখে আসবাব বাছাই করুন। খুব বেশি চাকচিক্য বা উল্টোপাল্টা রঙের আসবাব ঘরের ভারসাম্য নষ্ট করতে পারে। সাদামাটা ও মিনিমাল ডিজাইন ঘরকে প্রশান্তিময় রাখে৷ ফিউচার-প্রুফ ডিজাইন বেছে নিন, যেন কয়েক বছর পরেও পুরনো না দেখায়।
আরামদায়ক হতে হবে
বিশেষ করে সোফা, চেয়ার, বেড ইত্যাদি কেনার সময় আরাম কতটা, তা যাচাই করা জরুরি। অনলাইন থেকে কিনলেও শোরুমে গিয়ে একবার বসে দেখা ভালো। বেডের গদি কতটা শক্ত বা নরম, তা দেখা জরুরি। সোফার কুশন সাপোর্ট কতটা দিচ্ছে তাও দেখে নিন।
আসবাবপত্রের ওজন ও স্থানান্তরের সুবিধা
ঘন ঘন ঘরের জায়গা বদল করলে ভারী আসবাব অসুবিধা করে। তাই হালকা ও সহজে খুলে-ফেলা যায় এমন ডিজাইন বেছে নিন। মডুলার ফার্নিচার বা ফোল্ডিং ফার্নিচার ভালো বিকল্প হতে পারে।
রক্ষণাবেক্ষণ সহজ কি না
কিছু আসবাব অতিরিক্ত যত্ন ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা চায়। যদি আপনি ব্যস্ত থাকেন, তাহলে কম রক্ষণাবেক্ষণ প্রয়োজন হয় এমন উপকরণে তৈরি আসবাবপত্র বেছে নিন। যেমন_ সিনথেটিক ফ্যাব্রিক বা ওয়াশেবল কাভার, সহজে মুছে ফেলা যায় এমন ফিনিশ দেখে কিনুন।
বাজেট ও গুণমানের ভারসাম্য
দাম কম দেখে মানহীন ফার্নিচার কিনলে তা বেশি দিন টিকবে না। আবার খুব দামি আসবাব সবসময় প্রয়োজন নয়। তাই নির্দিষ্ট বাজেট ঠিক করুন। মান, স্থায়িত্ব ও ডিজাইনের তুলনায় মূল্য বিচার করুন।
ওয়ারেন্টি ও বিক্রয়োত্তর সেবা
বিশেষ করে ইলেকট্রনিক্স যুক্ত বা মেকানিক্যাল ফার্নিচার কিনলে ওয়ারেন্টি আছে কি না দেখুন। কোনো ক্ষতি হলে মেরামত সুবিধা পাওয়া যায় কি না জেনে নিন।
পরিবেশবান্ধব ও নিরাপদ কি না
বর্তমাম সময়ে পরিবেশবান্ধব ফার্নিচার ব্যবহার করার প্রবণতা বাড়ছে। পাশাপাশি আসবাব থেকে কোনো বিষাক্ত গন্ধ বা রাসায়নিক নির্গত হয় কি না, তাও খেয়াল রাখা জরুরি — বিশেষ করে শিশুর ঘরের ফার্নিচারের কিনতে আরও যত্নবান হতে হবে।