ছোট বাচ্চাদের সামলাতে এমনিতেও ঘাম ঝরাতে হয় বাবা-মায়ের। তার ওপর যদি একাধিক সন্তান থাকে তাহলে তো আর কথাই নেই। আর যদি পিঠেপিঠি হয় তবে তো আরও মুশকিল। খুনসুঁটি, মারামারি, ঝগড়াঝাটি সামলানো কী চাট্টিখানি কথা? পরিবারে ছোট ভাই বোনের ঝগড়া মাঝে মাঝে চরম আকার নিয়ে নেয়। ছোটরা ঝগড়া করলে অবশ্যই বাবা-মা হিসেবে তা আপনাদের অশান্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু তার জন্য নিজেদের ধৈর্য্য হারালে চলবে না। যতটা সম্ভব শান্ত থেকে ধৈর্য্য ধরে পরিস্থিতির মোকাবিলা করতে হবে। তাহলে আজ জেনে নেওয়া যাক ছোট সন্তানদের এই ঝগড়া সামলাবেন কীভাবে-
খারাপ মন্তব্য থেকে দূরে রাখুন
ভাই কিংবা বোন আসার খবর পেয়ে সাধারণত ছোটরা খুশি হয়। কিন্তু পরিচিত কিছু মানুষ খানিকটা মজার ছলেই ছোটো শিশুকে বলতে দেখা যায় মা-বাবা এবার আর তাকে ভালোবাসবে না। ছোট ভাই কিংবা বোনকেই বেশি ভালোবাসবেন। এসব শুনে ছোটোদের মনে এক ধরণের কষ্ট কাজ করে। যার ফলে হিংসাত্বক আচরণ শুরু করে দেয়। তার ওপর যখন সত্যিই ছোটো ভাই বা বোনকে মা-বাবা যত্ন নিতে শুরু করে তখন সে ভাবে তাকে আর কেউ ভালোবাসেন না। সুতরাং এই ধরণের মন্তব্য থেকে সন্তানকে দূরে রাখবেন।
তুলনা করবেন না
মনে রাখবেন হাতের পাঁচটা আঙুল এক রকম হয় না। তাই আপনার সন্তানও পুরো একরকম হবে এরকম মনে করার কোনো কারণ নেই। কেউ হয়তো পড়াশোনায় বেশি ভালো, কেউ খেলাধুলোয়। সন্তানদের মধ্যে কখনো তুলনা টানতে যাবেন না। কোনো একজনের প্রতি আপনার বেশি ভালোবাসা এবং নির্ভরতা থাকলেও তা কোনোভাবে আপনার আচার ব্যবহারে যেন বোঝা না যায়। আপনার আচরণের বৈষম্য কিন্তু সন্তানদের মধ্যে অশান্তির কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এককভাবে কাউকে দোষ দেবেন না
দুই পক্ষের মধ্যে মিটমাট করানোর সময় আগে তাদের কথা মন দিয়ে শুনবেন। তারপর ঠান্ডা মাথায় বুঝিয়ে বলুন। হতে পারে কোনো একজন বেশি দোষ করে ফেলেছে। তাই বলে সবটা বকাঝকা একজনকেই করবেন না। উভয়কেই বুঝিয়ে বলুন। প্রয়োজনে একটু কড়া হয়ে বোঝান যে বেশি দোষ করেছে তাকে।
বোঝাপড়া করিয়ে দেওয়া
ভাই-বোনের মধ্যে ঝগড়া হতেই পারে। সেইজন্য যেন তারা কথা বলা বন্ধ না করে দেয়। বাবা মা হিসেবে আপনাদের দায়িত্ব এটা খেয়াল রাখা যে আপনাদের সন্তানেরা পরস্পরের সঙ্গে যথেষ্ট কথা বলা, ভালো সময় কাটানো, নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ও খেলাধুলা করছে কি না। বড়দের মতো ছোটদের মধ্যেও কথা বলার মাধ্যমে অনেক ভুল বোঝাবুঝি মিটে যায়।
মধ্যস্থতা করতে যাবেন না
সবসময় সন্তানের ঝগড়ায় আপনি মধ্যস্থতা করতে যাবেন না। চেষ্টা করুন যাতে ওরা নিজেরাই নিজেদের অশান্তি মিটিয়ে নিতে পারে। নিজেদের সমস্যা নিজেরা মেটাতে পারলে ভবিষ্যতের অনেক বড় সমস্যাও নিজেরা মিটিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা অর্জন করতে পারবে।
দায়িত্বশীল করে তোলা
ভাই-বোনের মধ্যে একজন অন্যজনের প্রতি যত্নশীল কি না সেটি খেয়াল করে দেখুন। যদি এমনটি না হয় তাহলে এখন থেকেই তাদেরকে পরষ্পরের প্রতি যত্নশীল ও দায়িত্বশীল হতে শেখান।