• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

মিত্র দেশগুলোর দ্বিমত সত্ত্বেও ইউক্রেনকে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা দিল যুক্তরাষ্ট্র


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুলাই ১৪, ২০২৩, ১২:২১ পিএম
মিত্র দেশগুলোর দ্বিমত সত্ত্বেও ইউক্রেনকে নিষিদ্ধ ক্লাস্টার বোমা দিল যুক্তরাষ্ট্র

ইউক্রেনকে ক্লাস্টার বোমা দেওয়ার ঘোষণার মাত্র ছয় দিনের মধ্যে নিষিদ্ধ এ বোমা দিল যুক্তরাষ্ট্র। রাশিয়ার সেনাদের বিরুদ্ধে ব্যবহারের জন্য ইতোমধ্যেই দেশটিতে পৌঁছেছে বিপজ্জনক এ বোমা। যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় পেন্টাগন বৃহস্পতিবার বিষয়টি নিশ্চিত করেছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। এতে বলা হয়, ইউক্রেনকে এ অস্ত্র দেওয়ার আগে কয়েক মাস বিষয়টি পর্যালোচনা করেন মার্কিন সামরিক কর্মকর্তারা। এরপর গত সপ্তাহে উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক শেষে কিয়েভকে ক্লাস্টার বোমা দিতে সম্মত হন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।

এই বোমাটির ব্যবহার বিশ্বের ১২০টি দেশে নিষিদ্ধ রয়েছে। কারণ, বোমাটি বেসামরিক মানুষের জন্যও বিপদের কারণ হতে পারে। ক্লাস্টার বোমা রকেটসদৃশ একটি কাঠামোর ভেতর থেকে।

যুক্তরাষ্ট্রের দাবি, তারা ইউক্রেনে যে বোমা পাঠিয়েছে, সেগুলোর অবিস্ফোরিত থাকার সম্ভাবনা খুবই কম। রুশ সেনাদের এই প্রতিরোধ ভাঙার জন্য এখন সবচেয়ে কার্যকরী অস্ত্র হবে ক্লাস্টার বোমা। ইউক্রেনকে কয়েক হাজার রাউন্ড ক্লাস্টার বোমা দেওয়া হবে। তবে সংখ্যাটি ঠিক কত, সেটি তারা প্রকাশ করেনি।

তবে এ বোমার বিপজ্জনক দিক হলো—ছোট বোমাগুলোর সব কটি সঙ্গে সঙ্গে বিস্ফারিত হয় না। আর অবিস্ফোরিত এ বোমাগুলো কয়েক বছর পর্যন্ত অক্ষত থাকতে পারে। ফলে যুদ্ধকালীন ও যুদ্ধ-পরবর্তী সময়ে যদি বেসামরিক কোনো মানুষ এগুলোর কাছে যান, তাহলে বোমা বিস্ফোরিত হয়ে প্রাণহানি ঘটতে পারে।

মার্কিন জয়েন্ট চিফ অব স্টাফের অপারেশন্স পরিচালক লেফটেনেন্ট জেনারেল ডগলাস সিমস বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের বলেন, “এ মুহূর্তে ইউক্রেনে ক্লাস্টার বোমা পাঠানো হয়েছে।” তবে ইউক্রেনীয়রা এ বোমা ব্যবহার শুরু করেছে কি না, সেটি নিশ্চিত নয়।

এর আগে জুনের প্রথম সপ্তাহে দখলকৃত স্থান থেকে রুশ সেনাদের হটিয়ে দিতে পাল্টা আক্রমণ শুরু করে ইউক্রেন। তবে তাদের এ অভিযান প্রত্যাশা অনুযায়ী হয়নি। কারণ, ইউক্রেন পাল্টা আক্রমণ শুরুর আগেই দখল করা অঞ্চলগুলোতে শক্তিশালী প্রতিরোধ ব্যবস্থা গড়ে তোলে রুশ সৈন্যরা।

এদিকে রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ১২০টি দেশে ক্লাস্টার বোমা নিষিদ্ধ। ক্লাস্টার বোমা রকেটসদৃশ একটি কাঠামোর ভেতর থাকে। এ বোমা বিমান, কামান ও রকেট লঞ্চার থেকে ছোড়া যায়। ক্লাস্টার বোমা যখন ছোড়া হয় তখন এর ভেতর থাকা ছোট ছোট বোমা ছড়িয়ে যায় এবং এগুলো লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানে। আর এটি আঘাত হানার পর বিস্তৃত এলাকাজুড়ে মানুষকে নির্বিচার হত্যা করতে পারে।

ক্লাস্টার বোমাসংক্রান্ত কনভেনশনে স্বাক্ষর করেনি রাশিয়া, ইউক্রেন ও যুক্তরাষ্ট্র। মূলত ওই কনভেনশনে এই ধরনের অস্ত্র উৎপাদন, মজুত, ব্যবহার এবং স্থানান্তর নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

আগের যুদ্ধগুলোতে ক্লাস্টার বোমায় বোমার সংখ্যা ছিল বেশি। হাজার হাজার ছোট অবিস্ফোরিত বোমাগুলো তাজা অবস্থায় রয়ে যেত। ইরাক ও আফগান যুদ্ধে এই বোমা প্রচুর ব্যবহার হয়েছে। বিস্ফোরণে অনেক বেসামরিক মানুষের প্রাণ গেছে।

Link copied!