আফগানিস্তানের পশ্চিমে হেরাত প্রদেশে বেশ কিছু বাদ্যযন্ত্র এবং এ সংক্রান্ত সরঞ্জাম পুড়িয়ে দিয়েছে তালেবানরা। তালেবানের নীতিপুলিশ এই কাজ করেছে। তাদের দাবি, সঙ্গীত অনৈতিকতাকে উৎসাহিত করে এবং যুবকদের বিপথগামী করে। রোববার (৩০ জুলাই) এ ঘটনা ঘটেছে।
আফগানিস্তান টাইমস এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। প্রদেশের প্রোমোশন অফ ভার্চু অ্যান্ড দ্য প্রিভেনশন অফ ভাইস মন্ত্রণালয়ের প্রধান আজিজ আল-রহমান আল-মুহাজির জানিয়েছেন, তার বিশ্বাস সঙ্গীত নৈতিক দুর্নীতির দিকে নিয়ে যায় এবং যুবকদের বিপথগামী করে। কর্তৃপক্ষ বাদ্যযন্ত্রগুলো প্রথমে জব্দ করে। তারপর সেগুলো পুড়িয়ে দিয়েছে।
২০২১ সালের আগস্টে পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর থেকে তালেবান সরকার নিজেদের মতাদর্শ প্রতিষ্ঠা করতে একের পর এক বিতর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। সম্প্রতি বিয়ে বা এ জাতীয় যে কোনো শুভ অনুষ্ঠানের হল মালিকদের নির্দেশ দেওয়া হয় যাতে সেখানে কোনোরকম বাদ্যযন্ত্র না বাজানো হয়। সবরকম সংগীতকে নিষিদ্ধ করে ফতোয়া জারি করা হয়।
ক্ষমতায় আসার পর থেকেই আফগানিস্তানের একাধিক শিল্পী ও সঙ্গীতজ্ঞ পশ্চিমা দেশগুলোয় রাজনৈতিক আশ্রয় চেয়েছেন। পোড়ানো বাদ্যযন্ত্রগুলোর মধ্যে ছিল একটি গিটার, একটি হারমোনিয়াম, দুটি অন্যান্য তারের যন্ত্র এবং একটি তবলা (ড্রাম) ছিল। বিয়ের হল থেকে বাদ্যযন্ত্রগুলো বাজেয়াপ্ত করা হয়েছিল।
তালেবান কর্তৃপক্ষ সংগীতকে এক ধরনের ‘দুর্নীতি’ বলে উল্লেখ করেছে। কর্তৃপক্ষের, ‘সংগীত তরুণ প্রজন্মকে ভুলপথে চালিত করে। সমাজের ধ্বংস ডেকে আনে।’
সঙ্গীতের বাইরেও তালেবানরা নতুন করে দেশটিতে ক্ষমতায় আসার পর নারীদের বিভিন্ন অধিকারকে খর্ব করে তাদের দৈনন্দিন জীবনে কঠোর বিধিনিষেধের সম্মুখীন করে তুলেছে। এর মধ্যে রয়েছে- নারীদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, বিশ্ববিদ্যালয় এবং জনপ্রশাসন থেকে বাদ দেওয়া। তাদের সামাজিক অংশগ্রহণ সীমিত করা। আন্তর্জাতিক সংস্থায় কাজের নিষেধাজ্ঞা, পাবলিক পার্ক, উদ্যান, জিম, এমনকি শৌচাগারে কোনো পুরুষ আত্মীয় ছাড়া প্রবেশ করা নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এমনকি বাড়ির বাইরে থাকার সময়ও তাদের শরীর ঢেকে রাখা বাধ্যতামূলক করা হয়েছে।
আপনার মতামত লিখুন :