• ঢাকা
  • রবিবার, ০৫ মে, ২০২৪, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

ইউক্রেনে বড় জয়ের পথে রাশিয়া


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: মার্চ ৪, ২০২৩, ০১:১৩ পিএম
ইউক্রেনে বড় জয়ের পথে রাশিয়া

ইউক্রেনে সামরিক আগ্রাসনের পর প্রথম বড় বিজয়ের কাছাকাছি মস্কো। ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলে কৌশলগতভাবে গুরুত্বপূর্ণ বাখমুত শহরের বেশির ভাগ জায়গাই ঘিরে ফেলেছে রাশিয়ার ওয়াগনার প্রাইভেট আর্মি। বিবিসি ও রয়টার্স প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।

কয়েক সপ্তাহ ধরে এই শহর দখলকে কেন্দ্র করে তীব্র লড়াই চলছে, এতে উভয় পক্ষেই ব্যাপক প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। এ শহরের নিয়ন্ত্রণ নিতে পারলে রাশিয়া এই এলাকাটিকে ক্রামাটরস্ক ও স্লোভিয়ানস্কের মতো দুটি বড় শহরের দিকে এগিয়ে যাওয়ার জন্য ভিত্তি তৈরি করতে পারবে।

ওয়াগনার গ্রুপের প্রতিষ্ঠাতা ইয়েভগেনি প্রিগোঝিন দাবি করেছেন, রাশিয়ার সেনাবাহিনী ও ওয়াগনার গ্রুপের যোদ্ধারা ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর বাখমুত প্রায় ঘিরে ফেলেছে। শুক্রবার (৩ মার্চ) শহরটিতে শেষ প্রবেশপথ বন্ধ করে দেওয়ার কাছাকাছি অবস্থায় পৌঁছে গেছে রুশ বাহিনী। এই শহর থেকে ইউক্রেন বাহিনীর বের হয়ে যাওয়ার জন্য একটাই পথ খোলা আছে। বাখমুত থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের প্রত্যাহার করে নেওয়ার জন্য তিনি প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।

রয়টার্স বাখমুত থেকে পশ্চিমে রাশিয়ান গোলাবর্ষণ পর্যবেক্ষণ করেছে। তারা বলছে এটি শহরের ভেতরে ও বাইরে ইউক্রেনীয় বাহিনীর প্রবেশকে বাধা দেওয়ার একটি আপাত প্রচেষ্টা। রাশিয়ান ট্যাংকের গোলাগুলিতে খ্রোমোভ শহরের একটি সেতু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

এদিকে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনী স্বীকার করে নিয়েছে যে তাদের সৈন্যরা বাখমুত শহরে প্রচণ্ড চাপের মধ্যে রয়েছে। সেখান থেকে ইউক্রেনীয় সৈন্যদের সরিয়ে নেওয়া হতে পারে বলেও তারা ইঙ্গিত দিয়েছে। এর আগে এই শহরের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখার জন্য সেখানে অতিরিক্ত সৈন্য পাঠানো হয়েছিল।

কিয়েভ বলছে, তাদের সৈন্যরা এখনো সেখানে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে। যদিও তারা স্বীকার করেছে এ সপ্তাহে বাখমুতে তাদের অবস্থার অবনতি হয়েছে।

শুক্রবার বাখমুত পরিদর্শন করেছেন ইউক্রেনের স্থলবাহিনীর কমান্ডার ওলেক্সান্ডার সিরস্কি। কীভাবে ফ্রন্টলাইন বাহিনীর প্রতিরক্ষা ক্ষমতা বাড়ানো যায় এ বিষয়ে স্থানীয় কমান্ডারদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি।

বিবিসি জানিয়েছে, ন্যাশনাল গার্ড অব ইউক্রেনের একজন ডেপুটি কমান্ডার ভলোদিমির নাজারেঙ্কো ইউক্রেনীয় একটি টিভি চ্যানেলকে বলেছেন, বাখমুতের পরিস্থিতি ‘ভয়াবহ’ এবং ‘সারাক্ষণই সেখানে যুদ্ধ’ হচ্ছে। রুশরা নিজেদের ক্ষয়ক্ষতির হিসাব করছে না, তারা আক্রমণ করেই শহর দখল করতে চাইছে। বাখমুতে ইউক্রেনীয় সেনাদের লক্ষ্য হলো যত বেশি সম্ভব রুশ বাহিনীর ক্ষয়ক্ষতি করা। প্রতি মিটার ইউক্রেনীয় ভূখণ্ডের জন্য রাশিয়াকে কয়েক শ সেনার জীবন দিতে হচ্ছে।

ভলোদিমির নাজারেঙ্কো আরও বলেন, “আমাদের যত দ্রুত সম্ভব গোলাবারুদ প্রয়োজন। আমাদের কাছে থাকা গোলাবারুদ দিয়ে যত সেনাকে ধ্বংস করা সম্ভব তার চেয়ে বেশি যোদ্ধা রয়েছে রাশিয়ার।”

ওই শহরে গত কয়েক মাস ধরে যুদ্ধ করছে ইউক্রেনের এ রকম একটি ড্রোন ইউনিটের কমান্ডার সাংবাদিকদের জানিয়েছেন, তাদের সেখান থেকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ১১০ দিন ধরে তিনি সেখানে যুদ্ধ করছেন। তবে কেন তাদের সরে যেতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, সে বিষয়ে তিনি কিছু জানেন না।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বাখমুত শহরে পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করতে পারলে রাশিয়ার পক্ষে পুরো ডনবাস অঞ্চল দখল করে নেওয়া আরও সহজ হয়ে উঠবে। আর এই বাখমুত দখল করার জন্য লড়ছে রাশিয়ার ভাড়াটে বাহিনী ওয়াগনার গ্রুপ।

রয়টার্স বলছে, রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা আরআইএ একটি ভিডিও প্রকাশ করেছে। যেখানে দেখানো হয়েছে যে ওয়াগনার যোদ্ধারা ক্ষতিগ্রস্ত স্থাপনার পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছে। এ সময় একজন যোদ্ধা বলছেন, ইউক্রেনের সেনাবাহিনী রাশিয়ার ঘেরাও ঠেকাতে বাখমুতের কাছের বসতিগুলো ধ্বংস করেছে।

Link copied!