• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স, হত্যার অভিযোগে হেফাজতে পুলিশ সদস্য


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: জুন ৩০, ২০২৩, ০৮:৫৩ এএম
বিক্ষোভে উত্তাল ফ্রান্স, হত্যার অভিযোগে হেফাজতে পুলিশ সদস্য

ফ্রান্সের রাজধানী প্যারিসে পুলিশের গুলিতে কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনায় দেশটিতে বিক্ষোভ চলছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পাশাপাশি অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে হত্যার অভিযোগ আনা হয়েছে এবং তাকে হেফাজতে রাখা হয়েছে।

ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এক প্রতিবেদনে এ খবর জানিয়েছে। কিশোর হত্যার প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দেশজুড়ে তৃতীয় দিনেরমতো বিক্ষোভ হয়েছে। এদিন বিকেলে নিহত কিশোরের মায়ের নেতৃত্বে একটি মিছিল আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে।

বিক্ষোভের তৃতীয় রাতে লিলি ও মার্সেইতে বিক্ষোভকারীদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে। চলমান বিক্ষোভে পুলিশ এরই মধ্যে বিভিন্ন শহর থেকে অন্তত ৪২১ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাদের অধিকাংশের বয়স ১৪ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে ৪০ হাজার পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।

বৃহস্পতিবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ছবি ও ভিডিওতে দেখা গেছে, বেশ কিছু জায়গায় আবর্জনার স্তূপে আগুন জ্বলছে। কিশোর নিহত হওয়ার ঘটনাস্থল নান্টেরে শহরে একটি ভবনের নিচতলায় আগুন জ্বলতে দেখা গেছে।

সন্ধ্যার পর পরই প্যারিস ও প্যারিসকেন্দ্রিক বৃহত্তর অঞ্চলে বাস ও ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। ক্লামার্ত শহরে ৩ জুলাই পর্যন্ত কারফিউ জারি করা হয়েছে।

এর আগে মঙ্গলবার ট্রাফিক পুলিশের নির্দেশে গাড়ি থামাতে ব্যর্থ হওয়া ১৭ বছর বয়সী এক কিশোরকে গুলি করে হত্যা করেছে পুলিশ। পেনশন সংস্কারের বিক্ষোভে টালমাটাল হয়েছিল ইউরোপের এই দেশটি।

পুলিশ বলছে, কিশোরের নাম নাহেল এম। তাকে গাড়ি থামানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল। সে তা অমান্য করায় গুলি করতে তারা বাধ্য হয়েছে। নাহেলের এই হত্যাকে ‘অমার্জনীয় অপরাধ’ বলে আখ্যা দিয়েছেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়্যেল ম্যাক্রোঁ।

রয়টার্স এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, ২০১৭ সাল থেকে দেশটির ট্রাফিক পুলিশের গুলিতে নিহতের বেশিরভাগই কৃষ্ণাঙ্গ অথবা আরব।

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া এক ভিডিওতে দেখা যায়, একজন পুলিশ অফিসার একটি গাড়ির চালকের দিকে বন্দুক তাক করে আছেন। এরপরই একটি গুলির শব্দ শোনা যায়। গাড়িটি কিছুদূর গিয়ে ধাক্কা খেয়ে থামে। জরুরি বিভাগের লোকজন তড়িঘড়ি করে ঘটনাস্থলে পৌঁছালেও গুলিবিদ্ধ কিশোর তৎক্ষণাৎ মারা যায়।

বার্তাসংস্থা এএফপি কর্তৃক যাচাইকৃত ফুটেজে দুই পুলিশ কর্মকর্তাকে গাড়ি থামানোর চেষ্টা করতে দেখা যায়। একজন তার অস্ত্রটি জানালা দিয়ে ড্রাইভারের দিকে তাক করে এবং চালক গাড়ি চালানোর চেষ্টা করলে পুলিশকে গুলি করতে দেখা যায়। ঘটনার পর পরই উদ্ধারকারীরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে যুবকটিকে পুনরুজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছিল। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই সে মারা যায়।

গাড়িতে কিশোরসহ আরও দুজন ছিলেন। একজন পালিয়ে যান এবং অপরজনকে আটক করা হয়েছে। মঙ্গলবার ঘটনার পর ওই এলাকায় বেশ কয়েক দফা বিক্ষোভ হয়েছে। গাড়ি, ময়লার বিন ও কাঠের গুঁড়ি পুড়িয়ে দিয়েছেন বিক্ষোভকারীরা।

নিহতের একজন আইনজীবী স্থানীয় মিডিয়াকে বলেছেন, যা ঘটেছে তা কিছুতেই ন্যায়সঙ্গত হতে পারে না। এ মৃত্যুকে একটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে বর্ণনা করেছেন তিনি।

Link copied!