• ঢাকা
  • রবিবার, ১৯ মে, ২০২৪, ৪ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,

তারা শিখতে পারেন না, তবে তাদের ডিজাইনগুলো অনেক স্পেশাল


আসিফ মাহমুদ
প্রকাশিত: অক্টোবর ৩১, ২০২২, ০৫:৪৪ পিএম
তারা শিখতে পারেন না, তবে তাদের ডিজাইনগুলো অনেক স্পেশাল

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদেরকে সাধারণত কর্মক্ষেত্রে দেখা যায় না। সব কাজের ক্ষেত্র তাদের জন্য এখনো উন্মুক্ত না। কাজের ক্ষেত্রের অভাব এবং তাদেরকে কাজে নেওয়ার মানসিকতার অভাব, এই দুই কারণেই মূলধারার কর্মক্ষেত্রে বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষদের দেখা যায় না।

বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন বলতে আমরা এমন মানুষদের বোঝাই, যারা শিখতে না পারা রোগে আক্রান্ত, অটিজমের শিকার কিংবা স্কিৎজোফ্রেনিয়াতে ভুগছেন বা যারা আমাদের থেকে একটু আলাদা।

এই মানুষদের নিয়ে কাজ করছেন অনেকেই। তাদের প্রয়োজন অনুসারে শিক্ষা ও সেবা প্রদান করে স্বাভাবিক জীবনযাপনে অভ্যস্ত করতে নিরলস কাজ করে যাচ্ছেন অনেক ব্যক্তি, সংগঠন বা প্রতিষ্ঠান।

তবে কেউ কেউ কাজ করছেন এই বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন মানুষগুলোকে আরও স্বাভাবিক জীবনযাপনে নিয়ে আসার জন্য। অর্থাৎ, আনুষ্ঠানিক কর্মক্ষেত্রে। এই মানুষগুলো কাজ শিখবেন, কাজ করবেনে, অর্থ উপার্জন করবেন, নিজের উপার্জিত অর্থে নিজের ভরনপোষণ করবেন তথা স্বাবলম্বী হবেন। এই বিষয়গুলো তো বৃহত্তর অর্থে স্বাভাবিক জীবনযাপনেরই অংশ, তাই না?

স্পেনের একটি ডিজাইন প্রতিষ্ঠান, নাম ‘লা কাসা দে কারলোতা’। এই প্রতিষ্ঠানটি নিজেদের কর্মযজ্ঞে যুক্ত করেছে বেশ কয়েকজন বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কর্মীকে। তারা কাজ করেন কয়েকজন পেশাদার ডিজাইনার ও গ্রাফিক ডিজাইনারের সঙ্গে। টিম ওয়ার্কের মাধ্যমে তারা তাদের সেরা কাজগুলো মানুষের সামনে নিয়ে আসেন।

বিভিন্ন পণ্যের প্যাকেজিং ডিজাইন কিংবা স্বয়ং পণ্যটির বাহ্যিক রূপের ডিজাইন করেন তারা। যেমন, আমাদের ব্যবহার করা পানির বোতল, ফ্লাস্ক, বিভিন্ন বক্স এসবের ওপর ভালো লাগে এমন বিশেষ কিছু ডিজাইন তারা করেন। আবার খাদ্যদ্রব্যের প্যাকেট যেমন: চিপস, সবজির প্যাকেট, নুডুলস, বিস্কিট কিংবা চানাচুরের প্যাকেট এই সবকিছু ডিজাইন করে প্রতিষ্ঠানটি।

প্রথমে একজন ডিজাইনিং সুপারভাইজার তার টিমের বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন কর্মীকে কিছু একটা বিষয়ে আঁকতে দেন। সেই কর্মী তার মনের মতো করে বিষয়টি আঁকেন। স্পষ্ট সেই বিষয়টি না আঁকতে পারলেও তার কাছাকাছি কিছু একটা আঁকেন তিনি। যদি তাকে আপেল বা ঘোড়া আঁকতে দেওয়া হয়, তবে তিনি আপেল বা ঘোড়ার কাছাকাছিই কিছু একটা আঁকেন। এটাই তার সক্ষমতা। তবে আঁকাটি দেখলে বোঝা যায় তিনি কী আঁকতে চেয়েছেন।

কিছুটা অস্পষ্ট সেই আঁকাটিকে কম্পিউটারে স্ক্যান করে বোধগম্য ও পরিপাটি রুপ দেন পেশাদার গ্রাফিক ডিজাইনাররা। ফলে শেষ পর্যন্ত সেই আঁকাটি যে পর্যায়ে দাঁড়ায়, সেটি হয় অনন্য এবং ক্রেতা আকর্ষণের জন্য অদ্ভূতভাবে মোনোহর।

বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন কর্মীরা সেই প্রতিষ্ঠানে স্বাভাবিক কর্মী এবং এই কাজের জন্য তারা অন্যান্য কর্মীদের মতোই ঘন্টাভিত্তিক সমপরিমাণ বেতন পান। পাশাপাশি, ডিজাইনিং ইন্ডাস্ট্রিতে যে পরিমাণ পারিশ্রমিক ও সুযোগ-সুবিধা প্রচলিত আছে, তার সবটাই প্রতিষ্ঠান থেকে তাদের দেওয়া হয়। প্রতিষ্ঠানটিতে তারা পার্ট-টাইম কর্মী হিসেবে নিযুক্ত এবং তারাও তাদের পারিশ্রমিক নিয়ে সন্তুষ্ট।


সূত্র: বিবিসি 

Link copied!