• ঢাকা
  • সোমবার, ০৬ মে, ২০২৪, ২৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ শাওয়াল ১৪৪৫

গাজায় ‘ক্ষুধা’কে যুদ্ধের অস্ত্র বানিয়েছে ইসরায়েল : এইচআরডব্লিউ


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: ডিসেম্বর ১৮, ২০২৩, ০৯:৫৮ পিএম
গাজায় ‘ক্ষুধা’কে যুদ্ধের অস্ত্র বানিয়েছে ইসরায়েল : এইচআরডব্লিউ
গাজায় স্বেচ্ছাসেবীদের একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রে বুভুক্ষ শিশুদের লাইন। ছবি : সংগৃহীত

ইসরায়েল গাজাবাসীর অনাহারকে (ক্ষুধা) যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেছে হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডব্লিউ)।

সংস্থাটি সোমবার (১৮ ডিসেম্বর) জারি করা এক বিবৃতিতে বলেছে, ইসরায়েল ইচ্ছাকৃতভাবে ফিলিস্তিনিদের খাদ্য, পানি ও অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয়তা থেকে বঞ্চিত করছে। বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে ক্ষুধার অস্ত্র ব্যবহার একটি যুদ্ধাপরাধ, এনজিওটি বিশ্ব নেতাদের এ বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে।

সংস্থাটির প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে ইসরায়েলি কর্মকর্তাদের বিবৃতি, বেঁচে যাওয়া ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার, সাহায্য সংস্থার প্রতিবেদন এবং স্যাটেলাইট ইমেজ থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে, ইসরাইল ইচ্ছাকৃতভাবে ‘প্রতিদিনের জীবন নির্বাহের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ থেকে ফিলিস্তিনিদের বঞ্চিত করার নীতি’ বাস্তবায়নে নিযুক্ত রয়েছে।

ইসরাইল এবং ফিলিস্তিন হিউম্যান রাইটস ওয়াচের পরিচালক ওমর শাকির বলেন, “দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে, ফিলিস্তিনিদের অনাহারে রাখার ঘৃণিত এই কাজটিকে ইসরায়েলি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা যুদ্ধের অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করতে মদদ দিয়ে যাচ্ছেন।”

ওমর শাকির আরও বলেন, “বিশ্ব নেতাদের এই ঘৃণ্য যুদ্ধাপরাধের বিরুদ্ধে কথা বলা উচিত। ইসরায়েলের ঘৃণ্য এই কাজ গাজার জনসংখ্যার উপর বিধ্বংসী প্রভাব ফেলেছে।”

এদিকে, ইসরায়েল যখন গাজা উপত্যকায় ‘নির্বিচার’ বোমাবর্ষণের ফলে বেসামরিক হতাহতের সংখ্যা বৃদ্ধির বিষয়ে ক্রমবর্ধমান অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক চাপের মুখে রয়েছে তখনি এইচাারডব্লিউ’র এই বিবৃতিটি আসলো।

সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুসারে, ইসরায়েল ১৮,৭৮৭ জন ফিলিস্তিনিকে হত্যা করেছে এবং আরও ৫০,৮৯৭ জনকে আহত করেছে, যেখানে আরও হাজার হাজার মানুষ ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।

এইচআরডাব্লিউ বলছে, সাধারণ মানুষের নিত্যপ্রয়োজনীয় বেঁচে থাকার অবলম্বনগুলি যাতে গাজায় প্রবেশ করতে না পারে, সেজন্য ইসরায়েলি কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে বক্তৃতা এবং বিবৃতি দিয়ে পথ রুদ্ধ করেছেন। 
এমনকি গাজায় আক্রমণের শুরুতেই, ইসরায়েলের প্রতিরক্ষামন্ত্রী ইয়োভ গ্যালান্ট ফিলিস্তিনিদের ‘পশুমানব’ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বলেছিলেন যে, ‘ইসরায়েল গাজাকে সম্পূর্ণ অবরোধ করছে। …না বিদ্যুৎ, না খাবার, না জল, না গ্যাস - সবই বন্ধ।’

এইচআরডব্লিউ বিবৃতিতে আরও বলেছে, আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের বিধান মতে ‘ইচ্ছাকৃতভাবে ত্রাণ সরবরাহে বাধা সহ বেসামরিক নাগরিকদের বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য বস্তু থেকে বঞ্চিত করা’ একটি যুদ্ধাপরাধ।

গাজার প্রায় ২৩ লাখ মানুষ দুই মাসেরও বেশি সময় ধরে যুদ্ধের মধ্যে চরম এই দুর্দশায় সাহায্যের জন্য মরিয়া হয়ে উঠেছে। ৮০ শতাংশ মানুষ সহিংসতায় উদ্বাস্তু হয়েছে। গাজা উপত্যকায় ব্যাপক ধ্বংসযজ্ঞ, খাদ্য ব্যাংকে মরিয়া ফিলিস্তিনিদের অভিযান, মানবিক সহায়তা বিতরণকারী ট্রাক এবং ইচ্ছাকৃতভাবে কৃষিজমি ধ্বংসের প্রতিবেদনের চিত্রগুলি এই অভিযোগকে শক্তিশালী করে।

উদ্বিগ্ন মানবিক সংস্থাগুলি একের পর এক গাজায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়েছে, কিন্তু তা নিষ্ফল হয়েছে।

ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র লিওর হায়াত এএফপিকে জানিয়েছেন, তার সরকার এইচআরডব্লিউ-কে একটি ‘এন্টি-সেমেটিক এবং ইসরায়েলবিরোধী’ সংস্থা বলে অভিযুক্ত করেছে।

সূত্র : আল-জাজিরা এবং নিউজ এজেন্সি

Link copied!