• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২০ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

গরমে হিটস্ট্রোক হওয়ার পূর্ব লক্ষণ এবং করণীয়


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২১, ২০২৪, ০৩:২১ পিএম
গরমে হিটস্ট্রোক হওয়ার পূর্ব লক্ষণ এবং করণীয়
ছবি: সংগৃহীত

বৈশাখের কড়া রোদে নাজেহাল হয়ে পড়েছে জনজীবন। দৈনন্দিন কাজকর্মও যেন চাঞ্চল্যতা হারাচ্ছে। প্রতিদিনের ব্যস্ততা চলছে নিয়মমতোই। কিন্তু রোদে তীব্রতায় শারীরিক পরিশ্রমে অনেকেই অসুস্থ হয়ে পড়ছে। এমনকি রোদে বেশি সময় থাকলে হিটস্ট্রোকও হচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা জানান, মানুষের শরীরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ দশমিক ৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট। কোনো কারণে এই তাপমাত্রা ১০৪ ডিগ্রির বেশি হলেই রক্তচাপ কমে যায় এবং অজ্ঞান হয়ে যায়। এটিই হচ্ছে ‘হিট স্ট্রোক’। এই অবস্থার তাত্ক্ষণিক চিকিৎসা না করলে মানুষের মৃত্যুও হতে পারে।

হিট স্ট্রোক কেন হয়

সাধারণত মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে। শরীরের রক্তনালি প্রসারণের মাধ্যমে অথবা ঘামের মাধ্যমে তাপমাত্রার ভারসাম্য নিয়ন্ত্রণ করে। গরমে বেশিক্ষণ থাকলে কিংবা অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম করলে শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে এবং ‘হিট স্ট্রোক’ হয়।

হিটস্ট্রোক যাদের হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে

সাধারণত বৃদ্ধ ও শিশুদের শরীরে তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা কম থাকে। তাই তাদের হিটস্ট্রোক হওয়ার সম্ভাবনা বেশি। এছাড়াও যারা প্রতিনিয়ত গরমে দীর্ঘ সময় শারীরিক পরিশ্রম করে তারাও ঝুঁকিতে থাকে। আবার কিছু ওষুধ সেবনের কারণেও হিট স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। বিশেষজ্ঞরা জানান, প্রস্রাব বেশি হওয়ার ওষুধ অথবা মানসিক রোগের ওষুধ কিংবা দীর্ঘমেয়াদি কোনো রোগের ওষুধ সেবন থেকেও শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা হারাতে পারে। তাই এসব রোগীর জন্য হিটস্ট্রোকের ঝুঁকি বেশি থাকে।

হিট স্ট্রোক হচ্ছে যেভাবে বুঝবেন

বিশেষজ্ঞরা জানান, হিট স্ট্রোক হলে প্রথমেই শরীর প্রচণ্ড দুর্বল লাগবে, মাথা ঝিমঝিম করবে, অসংলগ্ন আচরণ করবে, নিশ্বাস দ্রুত হবে, রক্তচাপ কমে যাবে, ঘাম বন্ধ হয়ে যাবে, ত্বক শুষ্ক হয়ে যাবে, প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাবে, ত্বকে লালচে ভাব দেখা যাবে এবং হঠাত্ অজ্ঞান হয়ে যেতে পারে। এইসব উপসর্গ দেখা দিলেই দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।

হিট স্ট্রোক হলে করণীয়

হিট স্ট্রোক হলে দ্রুত চিকিত্সা নিতে হবে। প্রথমেই রোগীকে রোদ থেকে সরিয়ে শীতল কোনো স্থানে নিতে হবে। এরপর ভেজা কাপড় দিয়ে বারবার শরীর মুছে দিতে হবে। রোগীকে ফ্যানের বাতাসের নীচে রাখুন। প্রচুর পানি এবং খাবার স্যালাইন পান করতে হবে। কাঁধে, বগলের নীচে এবং পায়ের কুচকিতে বরফ দিয়ে রাখতে হবে। এরপর রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে। চিকিত্সকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে।

হিট স্ট্রোকে প্রতিরোধে যা করতে হবে

হিট স্ট্রোক থেকে বাঁচতে প্রথমে গরম থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখতে হবে। গরমে আরামদায়ক পোশাক পরতে হবে। যতটা সম্ভব ঢিলেঢালা পোশাক পরুন। হালকা রঙ এবং সুতির কাপড়ের তৈরি পোশাক পরবেন। কাজ ছাড়া বাড়ির বাইরে যাবেন না। ঘরের ভেতরে শীতল স্থানে থাকুন। রোদে বাইরে গেলে ছাতা ব্যবহার করুন। প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন। দুর্বল লাগলে খাবার স্যালাইন খেতে পারেন। অতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রম হয় এমন কাজ এড়িয়ে চলুন।

Link copied!