শিশুর সুস্বাস্থ্য অনেকটাই নির্ভর করে মা-বাবার ওপর। কারণ, শিশুরা সঠিক সিদ্ধান্ত নিতে পারে না।
এদিকে অনেক মা-বাবাই মনে করেন, শিশু সবকিছুই খেতে পারবে। কারণ তাদের বয়স কম, তারা সক্রিয়, দ্রুত হজম করার ক্ষমতা রাখে এবং এত অল্প বয়সে কোনো রোগ শরীরে বাসা বাঁধবে না।
কিন্তু বিশেষজ্ঞরা বলছেন অন্য কথা, যত তাড়াতাড়ি সম্ভব স্বাস্থ্যকর খাওয়ার অভ্যাস শিশুদের মধ্যে গড়ে তুলতে হবে। শুধু সচেতনতা থাকলেই শুরু থেকে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গ্রহণ করা সম্ভব। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলেন, আমরা আজ যা খাই তা আগামীকাল নয় বরং আগামী বছরগুলোতে ফলাফল দেয়।
তাই কিছু প্রতিদিনের কিছু খাদ্যাভ্যাস রয়েছে, যা শিশুদেরও অনুসরণ করা উচিত। চলুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো।
সকালের খাবার
বড়রা অনেক সময় তাড়াহুড়ার কারণে সকালের নাশতা এড়িয়ে যান। কিন্তু শিশুদের জন্য যেহেতু এটি বৃদ্ধি এবং বিকাশের সময়, তাই খাবার এড়িয়ে যাওয়া, বিশেষ করে সকালের নাশতা, তাদের স্বাস্থ্যকে বিভিন্নভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে। কিংস কলেজ লন্ডনের করা একটি গবেষণা বলছে, যে শিশুরা সকালের নাশতা বাদ দেয় তারা অপুষ্টির ঝুঁকিতে পড়ে। কারণ, তারা স্বাস্থ্যের জন্য অত্যাবশ্যক মূল পুষ্টির প্রস্তাবিত পরিমাণ গ্রহণ থেকে বঞ্চিত হয়। আর যেসব শিশু সকালের নাশতা বাদ দেয়নি তারা দৈনিক প্রধান পুষ্টি যেমন ফোলেট, ক্যালসিয়াম, আয়রন এবং আয়োডিন তুলনামূলক বেশি গ্রহণ করেছে।
ফ্যাটযুক্ত খাবার
শিশুরা মুখরোচক খাবার খেতে খুব পছন্দ করে। সব সময় দৌড়াদৌড়ি এবং খেলার পরে ক্ষুধার্ত হলে তারা মুখরোচক কিছু খেতে চায়। এ ক্ষেত্রে বাড়িতে সমুচা বা চিজি পিৎজা বানিয়ে খাওয়ানো যাবে না। মা-বাবার উচিত সপ্তাহজুড়ে শিশুর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবারের পরিকল্পনা করা। গবেষকদের মতে, রিলিনের নিম্নস্তর আচরণগত নমনীয়তা এবং স্মৃতিশক্তিকে বাধাগ্রস্ত করে। সেই সঙ্গে স্থূলতা, ডায়াবেটিস এবং আরও অনেক সমস্যা ডেকে আনে। এর ফলে পরবর্তী জীবনে আলঝাইমার্স রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে।
চিনি
ক্যান্ডি, বাবল গাম, আইসক্রিম এবং ললি শিশুদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে। অন্যদিকে চিনিকে ডায়াবেটিসের মতো মারাত্মক রোগের পেছনে অপরাধী হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই চিনি ছোটদেরও প্রভাবিত করে। তাই শিশুদের চিনি খাওয়ার দিকে নজর রাখা আগের চেয়ে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। একটি ভারতীয় সমীক্ষায় দেখা গেছে যে, শিশুরা প্রতিদিন তাদের প্রয়োজনের চেয়ে তিন গুণ বেশি চিনি খাচ্ছে। এত লাগাম টানা উচিত। তবে তাদের মিষ্টি খাবার থেকে একেবারে বঞ্চিত করা উচিত নয়।
সবুজ শাকসবজি
শিশুকে সব সময় সবুজ শাকসবজি খেতে দিতে হবে। শিশুর বেড়ে ওঠা এবং বিকাশের পাশাপাশি প্রাপ্তবয়স্কদেরও সুস্থতার জন্য সবুজ শাক খাওয়ানো অপরিহার্য। শিশুদের জন্য আকর্ষণীয় উপায়ে সবজি দিয়ে বিভিন্ন খাবার তৈরি করতে পারেন। যেমন টিক্কা, পাকোড়া, স্যান্ডউইচ, বেকড ওয়াফেলস, সালাদ এবং সবজি নুডলসের মতো খাবার। বিশেষজ্ঞদের মতে, শিশুর জীবনের প্রথম দিকে একটি নতুন সবজির সঙ্গে পরিচিত করিয়ে দিলে তারা বড় হয়েও এই অভ্যাস ধরে রাখে। তাই শুরু থেকে স্বাস্থ্যসম্মত খাবারের অভ্যাস করানো গুরুত্বপূর্ণ।