• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০১ মে, ২০২৫, ১৮ বৈশাখ ১৪৩২, ৩ জ্বিলকদ ১৪৪৬

গৃহকর্মীকে মেরে অজ্ঞান করলেন পরীমনি, থানায় জিডি


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ৫, ২০২৫, ১০:৩৮ এএম
গৃহকর্মীকে মেরে অজ্ঞান করলেন পরীমনি, থানায় জিডি
অভিনেত্রী পরীমনি। ছবি:ফেসবুক থেকে

সন্তানকে খাবার খাওয়ানোকে কেন্দ্র করে গৃহকর্মীকে মেরে অজ্ঞান করার অভিযোগ উঠেছে নায়িকা পরীমনির বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার বৃহস্পতিবার (৩ এপ্রিল) রাজধানীর ভাটারা থানায় একটি অভিযোগ দায়ের করেছেন।
অভিযোগের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন ভাটারা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মাজহারুল ইসলাম। তিনি বলেন, পরীমনির বাসার এক গৃহকর্মীকে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। বিষয়টি তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে এসআই আরিফুল ইসলামকে। তার সঙ্গে কথা বললে বিস্তারিত জানতে পারবেন।  এসআই আরিফুল ইসলাম জানান, ভুক্তভোগী পিংকি আক্তার কোনো সাধারণ ডায়েরি বা জিডি করেননি। শুধু অভিযোগ জানিয়েছেন। আমরা বিষয়টি তদন্ত করে দেখছি।

এদিকে নির্যাতনের কথা উল্লেখ করে গৃহকর্মী পিংকি আক্তার গণমাধ্যমকে বলেন, এক মাস আগে আমি কাদের নামে এক ব্যক্তির মাধ্যমে চিত্রনায়িকা পরীমনির বাসায় কাজ পাই। আমার দায়িত্ব ছিল পরীমনির এক বছর বয়সী মেয়ের দেখাশোনা করা এবং তাকে খাবার খাওয়ানো। ওনার বাচ্চাকে প্রতি দুই ঘণ্টা পরপর খাওয়ানোর নিয়ম।

আমি সেটা মেনে প্রতিদিন বাচ্চাকে দুই ঘণ্টা পরপর খাবার খাওয়াই। তবে আমাকে বাচ্চার দেখাশোনার জন্য নিয়ে যাওয়া হলেও, বাসার অন্যান্য কাজও করানো হতো। গত ২ এপ্রিল আমি পরীমনির বাসায় তার বাচ্চাটিকে বসিয়ে বাজারের লিস্ট করছিলাম   কি কি লাগবে। এ সময় বাচ্চাটা কান্না শুরু করে। এরমধ্যে কান্না শুনে সৌরভ নামে এক ব্যক্তি, যিনি পরীমনির পরিচিত এবং মাঝেমধ্যেই তার বাসায় আসেন, আমাকে বললেন, বাচ্চাটাকে একটু সলিড খাবার দাও।

তখন আমি সৌরভ ভাইকে বললাম, ভাই, বাচ্চাটা কিছুক্ষণ আগে সলিড খাবার খেয়েছে; দুই ঘণ্টা হয়নি এখনো। আমি একটু কাজ করি, তারপর তাকে দুধ খাওয়াই। আমি এখানে এসে জেনেছি, আমার আগে যে গৃহকর্মী ছিলেন, তিনিও বাচ্চাটা কান্না করলে মাঝেমধ্যে দুধ দিতেন। এই কথা বলে আমি বাচ্চাটার জন্য দুধ রেডি করছিলাম।

 এরই মধ্যে চিত্রনায়িকা পরীমনি মেকআপ রুম থেকে বের হয়ে আমাকে তুই-তোকারি করে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করেন—আমি কেন বাচ্চার জন্য দুধ নিয়েছি। আমি তখন তাকে বললাম, যেহেতু সলিড খাবার দেওয়ার সময় এখনো হয়নি, তাই আমি দুধ নিয়েছি। তখন পরীমনি আমাকে গালি দিয়ে বলেন, বাচ্চাটা কি তোর না আমার? এরপরই তিনি আমাকে ক্রমাগত থাপ্পড় দিতে থাকেন এবং মাথায় জোরে জোরে আঘাত করতে থাকেন।

ভুক্তভোগী গৃহকর্মী আরও বলেন, তিনি যখন আমাকে থাপ্পড় দিতে শুরু করেন, তখন আমি হতবাক হয়ে তার দিকে তাকিয়ে ছিলাম। আমি ভেবেছিলাম, তিনি হয়তো দুই-একটি থাপ্পড় দিয়ে থেমে যাবেন। কিন্তু তিনি থামলেন না—উল্টো আমার মাথায় আরও জোরে আঘাত করতে থাকলেন। তার মারধরে আমি তিনবার ফ্লোরে পড়ে যাই। এরপর তিনি আমার বাম চোখে অনেক জোরে একটি থাপ্পড় মারেন।এই থাপ্পড়ের কারণে আমি এখনো বাম চোখে কিছু দেখতে পাই না।

ভয়ংকর এই মারধরের পর আমি জোরে জোরে কান্না করতে থাকি এবং তাকে বলি, আমি আর পারছি না, আমাকে হাসপাতালে নিয়ে যান। তখন তিনি আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিয়ে বলেন, তুই এখান থেকে কোথাও যেতে পারবি না। তোকে এখানেই মারবো এবং এখানেই চিকিৎসা করবো। এই কথা বলে তিনি আবার আমাকে মারতে আসেন। তখন সৌরভ তাকে বাধা দেন।

সৌরভ কেন বাধা দিলেন, এই কারণে পরীমনি তাকেও গালিগালাজ করেন। একপর্যায়ে আমি অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যাই।

পিংকি আক্তার অভিযোগ করে আরও বলেন, প্রায় এক ঘণ্টা পর আমার জ্ঞান ফেরে। তখন বাসার আরেকজন গৃহকর্মী, বৃষ্টিকে আমি বলি, আমাকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করো। তখন বৃষ্টি আমাকে বলেন, পরীমনি ঘুমিয়েছেন, তাকে এখন ডিস্টার্ব করা যাবে না। কোনো উপায় না দেখে আমি বাধ্য হয়ে জাতীয় জরুরি সেবার নম্বর ৯৯৯-এ ফোন করি এবং পুলিশকে জানাই যেন তারা আমাকে উদ্ধার করে নিয়ে যায়।

তিনি আরো বলেন, এরই মধ্যে আমি আমার এক কাজিনকে ফোন দিয়ে বিষয়টি জানাই। তিনিও ঘটনা জানতে পেরে পরীমনির বাসার সামনে আসেন। একই সময় পুলিশও আসে পরীমনির বাসার সামনে।

এসব ঘটনা পরীমনি জানার পর তিনি বাসার আরেক গৃহকর্মী বৃষ্টিকে বলেন, আমাকে বাসার নিচে নামিয়ে দিতে। পরে বৃষ্টি আমাকে বাসার নিচে নামিয়ে দেন। আমি তখন রিকশা নিয়ে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা নিই। তার মারধরের কারণে আমি এখনো অসুস্থ।

বিনোদন বিভাগের আরো খবর

Link copied!