পাল্টাপাল্টি অভিযোগে জাকসুতে ভোট চলছে


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১১, ২০২৫, ০৩:৪০ পিএম
পাল্টাপাল্টি অভিযোগে জাকসুতে ভোট চলছে
ছবি : সংগৃহীত

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্যানেলের প্রার্থীরা ভোটকেন্দ্র দখলের চেষ্টা করেছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ইসলামী ছাত্রশিবির সমর্থিত সাধারণ সম্পাদক (জিএস) প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম।

বৃহস্পতিবার (১১ সেপ্টেম্বর) দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলনে ‘সমন্বিত শিক্ষার্থী জোট’–এর এই প্রার্থী এ অভিযোগ তোলেন। এরআগে অবশ্য ছাত্রদলের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচনী কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগ তুলে বলা হয়, ছাত্রশিবিরের প্যানেলকে বিজয়ী করার লক্ষ্যে কাজ করছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।

জাকসু নির্বাচনে শিবির সমর্থিত প্যানেলের ভিপি পদপ্রার্থী আরিফুল্লাহ আদিব অভিযোগ করেছেন, বিভিন্ন হলে ছাত্রদল তাদের প্যানেলকে ভোট দেওয়ার জন্য ভয়ভীতি দেখাচ্ছে, বিভিন্নভাবে প্রভাব বিস্তার করছে। এমনকি গার্ডকে পর্যন্ত মারধর করা হয়েছে। ১০ নম্বর হলে ভাসানী হল এবং ২১ নম্বর হলসহ এই হলগুলোতে ছাত্রদলের আধিপত্য লক্ষ্য করা গেছে। জাহানারা ইমাম হলের গার্ডকে মারধর করা হয়েছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অফিসের সামনে আয়োজিত জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এসব অভিযোগ করেন তিনি।

অনিয়মের অভিযোগে দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ সাময়িক বন্ধ রাখা হয়। এর মধ্যে শহীদ তাজউদ্দিন আহমেদ হলে প্রায় ২৩ মিনিট ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল। ছবিবিহীন ভোটার তালিকা এবং হাতে কালি না লাগানোর কারণে প্রার্থীদের দাবির মুখে এই ঘটনা ঘটে, যা শিক্ষার্থীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি করে।

বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে কেন্দ্রটিতে এই ঘটনা ঘটে। পরে ১২টা ১৫ মিনিটে আবার ভোট গ্রহণ শুরু হয়।

অনিয়মের অভিযোগ নিয়ে সৃষ্ট জটিলতায় এক ঘণ্টা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন্নেছা হল কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ বন্ধ ছিল।

দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ভোট কারচুপির অভিযোগ এনে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশ করেন ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী শেখ সাদি হাসান। এসময় সব ভোটারকে এবং নারী প্রার্থীকে কেন্দ্র থেকে বের করে দেওয়া হয়। এতে হলের শিক্ষার্থীরা তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানালে ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ রাখা হয়। তবে দেড়টার দিকে আবার ভোটগ্রহণ শুরু হয়েছে।

ক্যাম্পাসে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি: ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থী

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের আশপাশে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের উপস্থিতি সাধারণ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করছে বলে অভিযোগ করেছেন জাকসু নির্বাচনে ছাত্রদল সমর্থিত ভিপি পদপ্রার্থী শেখ সাদী হাসান।

বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে ১২টায় জরুরি সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।

জামায়াতের কোম্পানির ছাপানো ব্যালটে ভোটগ্রহণের অভিযোগ ছাত্রদলের

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদে জামায়াতে ইসলামীর কোম্পানির ছাপানো ব্যালটে ভোটগ্রহণের অভিযোগ তুলেছে ছাত্রদল।

জরুরি সংবাদ সম্মেলনে তারা অভিযোগ করেছে, ভোট কারচুপির নীলনকশা বাস্তবায়ন করছে ইসলামী ছাত্রশিবির । ক্যাম্পাসে জামায়াতের লোকজনদের আনাগোনা রয়েছে বলেও অভিযোগ করেনন তাঁরা। বিস্তারিত পড়ুন


অনিয়মের অভিযোগে এক হলে এক ঘণ্টা ভোটদান বন্ধ

একাধিক কেন্দ্রে ভোটগ্রহণে অনিয়মের অভিযোগ করেছেন সাধারণ শিক্ষার্থীরা। অনিয়মের অভিযোগে এক ঘণ্টা বন্ধ থাকে তাজউদ্দিন হলের ভোটদান। বিস্তারিত পড়ুন

আঙুলে কালি না দেওয়ার অভিযোগ বাগছাসের জিএস প্রার্থীর

ভোটারদের আঙুলে কালি ব্যবহার করা হচ্ছে না বলে অভিযোগ করেছেন বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) সমর্থিত প্যানেলের সাধারণ সম্পাদক (জিএস) পদপ্রার্থী আবু তৌহিদ মোহাম্মদ সিয়াম।

তিনি অভিযোগ করেন বলেন, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর হল, রফিক জব্বার হল, শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ হল ও কাজী নজরুল ইসলাম হলে ভোটারদের আঙুলে কালি দেওয়া হচ্ছে না।

তিনি বলেন, ‘আমি নির্বাচন কমিশনারদের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা বলেছেন ব্যবস্থা নেবেন। কিন্তু ভোট শুরু হওয়ার আগেই এ ব্যবস্থা নেওয়া উচিত ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে, সেটা করা হয়নি।’

প্রশাসনের বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতির অভিযোগ ছাত্রদলের ভিপি প্রার্থীর
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) নির্বাচন ঘিরে প্রশাসনের বিরুদ্ধে গাফলতি এবং স্বজনপ্রীতির অভিযোগ তুলেছেন ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের ভিপি মো. শেখ সাদী হাসান।

মো. শেখ সাদী হাসান বলেন, নির্দিষ্ট একটি ছাত্র সংগঠন, ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগ এবং তার সংগঠন নিষিদ্ধ ছাত্রলীগকে পনুর্বাসিত করে এমন একটি প্রার্থী, তাদের বিষয়ে প্রশাসন খুবই উদাসীন এবং তাদের বিভিন্নভাবে সুযোগ সুবিধা দিয়ে দিয়ে যাচ্ছে। আমরা গতকাল থেকে প্রশাসনকে লিখিত আকারে এবং মৌখিকভাবে কয়েক দফায় জানিয়েছি যে আসলে আমরা চাই যে আমাদের ভোটটা ম্যানুয়ালি গণনা করা হোক।

তিনি অভিযোগ করেন, আমরা দেখেছি সকালবেলা কাজী নজরুল ইসলাম হলে শিবির সভাপতি ঢুকেছেন এবং শিক্ষার্থীদেরকে ম্যানিপুলেট করার চেষ্টা করেছেন।

জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা হবে ম্যানুয়ালি

ডাকসুর মতো ওএমআর পদ্ধতিতে নয়, জাকসু নির্বাচনের ভোট গণনা ম্যানুয়ালিই হবে। জাকসু নির্বাচন কমিশনের প্রজ্ঞাপনে এমন তথ্য জানানো হয়েছে।

প্রজ্ঞাপনে বল হয়েছে, জাহাঈীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় শিক্ষার্থী সংসদ (জাকসু) ও হল সংসদ নির্বাচনের ভোট গণনা কার্যক্রম ম্যানুয়ালি সম্পন্ন করা হবে।

সাড়ে ১২টায় ছাত্রদলের জরুরি সংবাদ সম্মেলন

বেলা ১২টা ৩০ মিনিটে মওলানা ভাসানী হলের সামনে ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেল জরুরি সংবাদ সম্মেলন ডেকেছে।

এক কেন্দ্রে আঙুলে কালি দেওয়া হচ্ছে না

জাকসু ও হল সংসদ নির্বাচনে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম হল কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার সময় ভোটারের আঙুলে মার্কার দিয়ে দাগ না দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।

এই কেন্দ্রে এসে এক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক (এজিএস) প্রার্থী সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমাদের হলে ভোট দেওয়ার সময় কোন ভোটারের আঙুলের ওপর মার্কার দিয়ে দাগ দেওয়া হচ্ছে না। শুধু স্বাক্ষর নিয়ে ব্যালট পেপার দিচ্ছে।’

এ বিষয়ে হলের পোলিং কর্মকর্তা উজ্জ্বল কুমার মন্ডল বলেন, কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন অফিস থেকে তাঁদের কারও কাছে মার্কার সরবরাহ করা হয়নি।

ডাকসুতে হাতের আঙুলে দাগ দেওয়ার ব্যবস্থা রাখা হলেও জাকসুতে তা রাখা হয়নি। দায়িত্বপ্রাপ্তদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সিসিটিভির মাধ্যমে ভোটের নজরদারি করা হচ্ছে।

তবে ২১ নম্বর ছাত্র হলে (সাবেক শেখ রাসেল হল) হাতে মার্কারের দাগ দিয়ে ভোটগ্রহণ হচ্ছে। এই কেন্দ্রে মোট ভোটার ৭৩৫ জন। বেলা ১০টা ৪৫ মিনিট পর্যন্ত ভোট পড়েছে ৯২টি।

এই কেন্দ্রের রিটার্নিং কর্মকর্তা মোসাব্বের হোসেন বলেন, কেন্দ্রে মার্কার ব্যবহারের কেন্দ্রীয় নির্দেশনা নেই। শিক্ষার্থীদের আবেদনের প্রেক্ষিতে মার্কার ব্যবহার করা হচ্ছে।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর ও জাকসু নির্বাচন কমিশনের সদস্য সচিব অধ্যাপক এ কে এম রাশিদুল আলম বলেন, সব হলেই ভোটারদের ভোট দেওয়া শেষে আঙুলে কালি দেওয়ার নির্দেশ রয়েছে। প্রতিটি কেন্দ্রে অমোচনীয় কালি দেওয়ার জন্য দুটি করে কলম দেওয়া হয়েছে। সব হলেই দেওয়ার কথা। ওই হলে কেন দেওয়া হচ্ছে না তিনি খোঁজ নিচ্ছেন বলে জানান।

Link copied!