রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) প্রায় সাত বছর পর ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। রোববার (২২ অক্টোবর) সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের পেছনে দলীয় টেন্টে এই ঘোষণা দেন নতুন কমিটিতে সহসভাপতির পদ পাওয়া শাহিনুল ইসলাম ওরফে ডন। এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগের সদ্য ঘোষিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে সাধারণ সম্পাদকের কক্ষে ভাঙচুর চালায় সংগঠনের একাংশের নেতা-কর্মীরা।
এর আগে শনিবার (২১ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি সাদ্দাম হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে মোস্তাফিজুর রহমান বাবুকে সভাপতি এবং আসাদুল্লাহ হিল গালিবকে সাধারণ সম্পাদক করে ৩৯ সদস্যবিশিষ্ট কমিটি ঘোষণা করা হয়েছে।
এদিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাদার বখশ হলে নতুন কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিবের কক্ষে ভাঙচুর করা হয়েছে। প্রত্যক্ষদর্শীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আজ বেলা ১১টা ২০ মিনিটের দিকে অনুসারী নেতা–কর্মীদের নিয়ে মাদার বখশ হলে যান বিদায়ী কমিটির কাজী আমিনুল ইসলাম, নতুন কমিটির সহসভাপতি শাহিনুল ইসলাম সরকার ও তাওহিদুল ইসলাম এবং কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান। তারা ওই হলের ২১৫ নম্বর কক্ষ ও ওই কক্ষের দুই পাশের ২টি কক্ষে ভাঙচুর চালান। ২১৫ নম্বর কক্ষে থাকেন বর্তমান কমিটির সাধারণ সম্পাদক আসাদুল্লা হিল গালিব।
বর্তমান কমিটির সহ -সভাপতি শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন বলেন, ইন্টার পাশ ছেলেকে রাবির নেতৃত্ব দিবে আমরা তা মানি না। যে ছেলেটা সম্মেলনের তারিখ ঘোষণার পর ক্যাম্পাসে রাজনীতি শুরু করছে তাকে আমরা রাবির ছাত্রলীগের নেতৃত্বে মেনে নিতে পারি না। ছাত্রলীগের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কোন বিবাহিত ছেলে ছাত্রলীগের নেতা হতে পারে না অথচ সকল তথ্য প্রমাণ থাকা সত্বেও সাধারণ সম্পাদক গালিবকে রাবি শাখার ছাত্রলীগের দায়িত্ব দেওয়া হয়। সনদ জালিয়াতির মাধ্যমে গালিব গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে ভর্তি হয়েছে। আমরা এই নেতৃত্ব মানব না। বিতর্কমুক্ত কমিটি ঘোষনা করতে হবে অন্যথায় বিশ্ববিদ্যালয়ে ওরা আসতে পারবে না।
বর্তমান কমিটি গঠিত হওয়ার আগে পর্যন্ত আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকলেও পদ পাননি কাজি লিংকন। এ নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে তিনি বলেন, নবগঠিত কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিবাহিত। ক্যাম্পাসের রাজনীতিতে সে নিস্ক্রিয় অথচ সে রাবি ছাত্রলীগের দায়িত্ব পেয়ে গেছে। টাকার বিনিময়ে বর্তমান কমিটি প্রদান করা হয়েছে। ক্যাম্পাসে দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করে আমরা যোগ্য সম্মান পেলাম না। আমরা এই কমিটি মানি না।
এসময় অবস্থান কর্মসূচিত ছাত্রলীগের নবগঠিত কমিটির সহ-সভাপতি শাহিনুল ইসলাম সরকার ডন, তাওহিদুল ইসলাম দুর্জয়, যুগ্ন -সাধারণ সম্পাদক নিয়াজ মোর্শেদ, সাবেক সহ-সভাপতি কাজি আমিনুল হক লিংকন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সদস্য সাকিবুল হাসান বাকিসহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
অবাঞ্ছিত ঘোষণার বিষয়ে জানতে চাইলে নতুন কমিটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক যাচাই-বাছাই করেই কমিটি ঘোষণা করেছেন। যারা এ কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে আসলে তারা ব্যক্তিগত স্বার্থ হাসিল করার জন্য এমনটা করছেন। এসব থেকে বিরত থাকার আহ্বান জানিয়ে সামনে নির্বাচনে ভূমিকা রাখতে ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানাতে সবার প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
সাধারণ সম্পাদক পদ পাওয়া আসাদুল্লাহ হিল গালিবের মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল করলেও তিনি ফোন রিসিভ না করায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি।