দীর্ঘ ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে বহুল প্রতীক্ষিত পটুয়াখালী জেলা যুবলীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন।
সোমবার (২০ ডিসেম্বর) সকাল ১০টায় পটুয়াখালী আবুল কাসেম স্টেডিয়ামে এ সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন যুবলীগের চেয়ারম্যান শেখ ফজলে শামস্ পরশ।
প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক মো. মাইনুল হোসেন নিখিল। সম্মেলনকে ঘিরে ইতিমধ্যে পুরো জেলায় যুবলীগ কর্মীদের মধ্যে নতুন উদ্যোমের সৃষ্টি হয়েছে। জেলা শহরসহ গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলো বর্ণাঢ্য সাজে সজ্জিত করা হয়েছে।
জেলা যুবলীগ সূত্র জানায়, সম্মেলনে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী সংসদের সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট মো. আফজাল হোসেন, স্থানীয় সংসদ সদস্য সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী আলহাজ অ্যাডভোকেট মো. শাহজাহান মিয়া এমপি, সাবেক চিফ হুইপ আ স ম ফিরোজ এমপি, মো. মহিব্বুর রহমান এমপি, এসএম শাহজাদা এমপি, কাজী কানিজ সুলতানা হেলেন এমপি, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. খলিলুর রহমান মোহন মিয়া, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী আলমগীর, সাধারণ সম্পাদক ভিপি আব্দুল মান্নানসহ সংগঠনের কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ উপস্থিত থাকবেন।
আরও জানা যায়, ২০০৫ সালের ৭ জুলাই জেলা আওয়ামী যুবলীগের সর্বশেষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে অভ্যন্তরীণ বিরোধে বিবাদমান দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষে সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী মাহমুদুর রহমান পলাশ মৃধাসহ অন্তত ১০ গুরুতর আহত হন এবং ১১ জুলাই পলাশ মৃধা মারা যান। পরবর্তীতে ২৯ জুলাই টুঙ্গিপাড়ায় এক বিশেষ কাউন্সিলর অধিবেশনের মাধ্যমে আহসান হাবিব খানকে সভাপতি ও কাওসার আহমেদ মৃধাকে সাধারণ সম্পাদক করে জেলা আওয়ামী যুবলীগের কমিটি ঘোষণা করা হয়। ২০১২ সালের ২৮ ডিসেম্বর সংগঠনের সভাপতি আহসান হাবিব খান মৃত্যুবরণ করেন। পরবর্তীতে ২০১৩ সালের ২৫ এপ্রিল অ্যাডভোকেট মো. আরিফুজ্জামান রনিকে আহ্বায়ক ও অ্যাডভোকেট মো. শহীদুল ইসলাম শহীদকে যুগ্ম-আহ্বায়ক করে জেলা আওয়ামী যুবলীগের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হয়।
যুবলীগের একাধিক সূত্র জানায় ২০১৩ সালে আহ্বায়ক কমিটি গঠনের পর একাধিকবার কেন্দ্রে জেলা যুবলীগের সম্মেলনের জন্য আবেদন করে স্থানীয় নেতৃবৃন্দ। কিন্তু বিভিন্ন জটিলতার কারণের শেষ পর্যন্ত সম্মেলন করতে ব্যর্থ হয় জেলা কমিটি।
জেলা যুবলীগের সাবেক সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য মিজানুর রহমান মনির জানান, তিনি এক সময় জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক প্রার্থী হতে আগ্রহী ছিলেন। বার বার আবেদন করার পরও তারা যুবলীগের সম্মেলন করাতে পারেন নি। দীর্ঘদিন প্রতীক্ষার পর এই সম্মেলন হাজার হাজার নেতাকর্মীর প্রাণের স্পন্দন বলে দাবি করেন তিনি।
এদিকে দীর্ঘ ১৬ বছর পর অনুষ্ঠিতব্য জেলা আওয়ামী যুবলীগের এই সম্মেলনে কাকে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচন করা হচ্ছে তা নিয়ে শহরজুড়ে এখন চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। যুবলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা জানান, এবার ক্লিন ইজেমের যোগ্য যুবনেতাদের মধ্য থেকেই নেতৃত্ব নির্বাচন করা হবে। কারণ যুবলীগের ঐতিহ্য এবং ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হয় এমন কারো নেতৃত্বে আসার সম্ভবনা নেই বলে জানান তারা।
এদিকে অনুসন্ধানে জানা গেছে সংগঠনের সভাপতির পদের জন্য বর্তমান আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. আরিফুজ্জামান রনি, যুবলীগ জেলা কমিটির সদস্য মো. হাফিজুর রহমান, জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আবুল কাসেম এবং সাধারণ সম্পাদক পদের জন্য বর্তমান যুগ্ম-আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. শহীদুল ইসলাম শহীদ, সদর উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ভাইস চেয়ারম্যান সৈয়দ মো. সোহেল, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. নাসির উদ্দিন হাওলাদার ও হাসান সিকদার, সাবেক সাধারণ সম্পাদক শাহানুর রহমান সুজন, পটুয়াখালী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগে সাবেক আহবায়ক রেজাউল করিম সোয়েব, ছাত্রলীগ নেতা জামাল হোসেনের নাম শোনা যাচ্ছে।
জেলা আওয়ামী যুবলীগের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মো. আরিফুজ্জামান রনি বলেন, “সম্মেলনের সকল প্রস্তুতি এখন শেষ পর্যায়ে। দীর্ঘদিন পর সম্মেলন হওয়ায় নেতাকর্মীদের মধ্যে বেশ উৎসাহ-উদ্দীপনা দেখা দিয়েছে। আহ্বায়ক হিসেবে আমার দায়িত্ব একটি সুন্দর সম্মেলন উপহার দেওয়া। আমি সেটাই করছি। কেন্দ্রীয় নেতৃবৃন্দ আগামী দিনে যাদের যোগ্য মনে করে যে কমিটিই দিবেন, সেই কমিটিকেই স্বাগত জানাব।”