ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৩৯ জনের মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়েছে। মৃতর সংখ্যা আরো বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা।
এদিকে আহত ৭৫ জনকে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে জানিয়েছে ফায়ার সার্ভিস। এ ঘটনায় দুইটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে।
জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৩ ডিসেম্বর) রাতে তিটার দিকে লঞ্চটি ঝালকাঠি টার্মিনালের কাছাকাছি পৌঁছালে ইঞ্জিনরুমে আগুন লাগে। মুহূর্তেই আগুন পুরো লঞ্চে ছড়িয়ে পড়ে। ফায়ার সার্ভিসের ৫টি ইউনিটের চেষ্টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে। আগুন লাগার কারণ এখনো জানা না গেলেও ধারণা করা হচ্ছে ইঞ্জিন রুমের পাশের রান্নাঘর থেকে আগুনের সূত্রপাত।
ঝালকাঠি জেলা প্রশাসক মো. জোহর আলী জানান, এখন পর্যন্ত ৭৫ জন আহত যাত্রীকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। হতাহতদের পরিচয় এখনও নিশ্চিত করা যায়নি।
মো. জোহর আলী আরো জানান, বরিশাল থেকে ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে লঞ্চ টার্মিনালের দূরবর্তী দিয়াকুল এলাকায় এলে ঘটনাটি ঘটেছে। লঞ্চটির ইঞ্জিনরুমের কাছে রান্নাঘরের গ্যাস সিলিন্ডার থেকে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে।
ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের দায়িত্বে থাকা বরিশাল ফায়ার সার্ভিসের উপপরিচালক মো. কামাল উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, “এখনও উদ্ধার কাজ চলছে। এখানে মোট ৫টি ইউনিট আগুন নেভানোর কাজ করেছে। উদ্ধার কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত বিস্তারিত কিছুই বলা যাচ্ছে না।”
এদিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিদল ও কোস্টগার্ডের সদস্যরা জানান, সুগন্ধা নদী থেকে তারা নয় জন যাত্রীর মৃতদেহ উদ্ধার করেছেন।
লঞ্চটির কয়েকজন যাত্রী বলেন, বৃহস্পতিবার গভীর রাতে হঠাৎ যাত্রীরা আগুন দেখে চিৎকার শুরু করে। কিন্তু কিছু বুঝে ওঠার আগেই লঞ্চটিতে আগুন ধরে যায়। এসময় কিছু যাত্রী লাফিয়ে নদীতে পড়ে সাঁতরে পাড়ে ওঠেন। এছাড়া স্থানীয় ট্রলার চালকরা এগিয়ে গিয়ে লঞ্চ ও নদী থেকে বেশ কিছু যাত্রীকে উদ্ধার করেন।
চাঁদপুর থেকে বরগুনাগামী লঞ্চের যাত্রী মো. মোহসীন বলেন, “রাতে হঠাৎ নিচ থেকে দাউদাউ করে আগুন জ্বলতে দেখি। এরপর আগুনের তীব্রতা বেড়ে যাওয়ায় আমি তিনতলা থেকে লাফ দিয়ে প্রাণে বেঁচে যাই।”
ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আব্দুল কাইয়ুম বলেন, “আমি দোতলায় ঘুমিয়ে ছিলাম। আগুনের তাপে ঘুম ভেঙে দেখি পুরা লঞ্চটিতে আগুন ধরে গেছে। তখন লাফ দিয়ে নদীতে ঝাঁপ দেই।”