• ঢাকা
  • শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১১ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

উচ্চতায় খাটো হলেও স্বপ্ন অনেক বড় মেম্বার প্রার্থী মশুর


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ২৮, ২০২২, ১২:২৭ পিএম
উচ্চতায় খাটো হলেও স্বপ্ন অনেক বড় মেম্বার প্রার্থী মশুর

বয়স ২৬ বছর। উচ্চতা ২৬ ইঞ্চি। শারীরিক প্রতিবন্ধী। তবু স্বপ্ন তার অনেক বড়। ২৬ ইঞ্চির মশু ভোটে দাঁড়িয়েছেন সাধারণ সদস্য পদে। অন্য প্রার্থীদের মতো সমানতালে প্রচারণা চালাচ্ছেন। দিচ্ছেন প্রতিশ্রুতি, চাচ্ছেন ভোট। মোশারফ হোসেন মশুর ভোটে লড়ার খবর এলাকাজুড়ে এখন আলোচনায়।

ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের বাগভান্ডার কদমতলা গ্রামের হরমুজ আলীর ছেলে মোশাররফ হোসেন মশু জন্ম থেকে প্রতিবন্ধী। মা মারা গেছে ৮ বছর বয়সে। অন্যের উপকারে নিজেকে জড়ান সুযোগ পেলেই। দরিদ্র বাবাও সহজ-সরল। এলাকার স্কুলে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত পড়তে পেরেছেন। জন্ম তারিখ ২০ আগস্ট ১৯৯৫ সালে। সেই হিসেবে তার বয়স ২৬ বছর। উচ্চতাও ২৬ ইঞ্চি।

মশু ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ভূরুঙ্গামারী সদর ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে। প্রতীক পেয়েছেন ভ্যানগাড়ী। তিনি প্রার্থী হওয়ায় ভোটের মাঠে যুক্ত হয়েছে বাড়তি চাঞ্চল্য। সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে ভোটারদের ঘরে ঘরে যাচ্ছেন মশু। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন কাঙ্ক্ষিত সেবা দেবেন। অন্য প্রার্থীর মতো তিনিও এখন নির্বাচনী প্রচারণায় ব্যস্ত।

এলাকাবাসী জানায়, মনোনয়নপত্র জমা দিলে অনেকে শঙ্কায় ছিলেন মশু ভোটে থাকবেন কি না। যাচাই শেষে ভ্যানগাড়ী প্রতীক পেলে অনেকে এগিয়ে আসেন তার পক্ষে। দরিদ্র মশুর নির্বাচনী সব খরচ করছেন কর্মী-সমর্থকরা।

এলাকায় মশুর সমর্থক আবু তালেব বলেন, “দরিদ্রের কষ্ট দরিদ্রই বুঝবে। এ জন্য মশুকে মেম্বার করা দরকার।”

আরও এক সমর্থক রেশমা বেগম বলেন, “মোটাসোটা, ভুঁড়িওয়ালা মানুষকে ভোট দিয়ে দেখছি। ভোট গেইলে চেনে না। খাটো-লম্বা যাই দাঁড়াক ভোট দেম দেহি শুনি।”

ভোটের মাঠে তার শরীরের আকার দেখে কেউ ছোট করে দেখছেন  না তাকে। ওয়ার্ডের আরও এক প্রার্থী আব্দুল মোত্তালেব বলেন, “মশু আমার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী। অন্যভাবে ভাবার কারণ নাই। সবাই ভোট চাচ্ছি। ভোটাররা বুঝেশুনে ভোট দেবে।”

ভোটে জয়ের আশা করে মোশারফ হোসেন মশু বলেন, “সব সময় নিজের সামর্থ্য দিয়ে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর চেষ্টা করেছি। ভোট করবো কখনো ভাবি নাই। এলাকার লোকজন আমাকে দাঁড় করাইছে। ভোটের খরচও তারাই দিচ্ছে। ইনশা আল্লাহ জিতলে ভোটারদের সর্বোচ্চ সেবা দিব।”

ভূরুঙ্গামারী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান বলেন, “সব নাগরিকের নির্বাচনে অংশগ্রহণের সুযোগ আছে। সবাই যাতে আচরণবিধি মানে, আমরা সেদিকে নজর রাখছি।”

ষষ্ঠ ধাপে ৩১ জানুয়ারি ভূরুঙ্গামারীর ৩টি ইউনিয়নে ভোট গ্রহণ হবে। এই ভোটে মশুর নির্বাচনী ওয়ার্ডে সাধারণ সদস্য পদে মোট ৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।

Link copied!