• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

খুলনার সবজি যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে


খুলনা প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৬, ২০২৩, ০৮:২৯ পিএম
খুলনার সবজি যাচ্ছে বিভিন্ন দেশে

শস্য ভাণ্ডার খ্যাত খুলনা জেলার ডুমুরিয়া উপজেলায় ১৪টি ইউনিয়নের এবার শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। এই উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে এ বছর প্রায় ২২০ কোটি টাকার শীতকালীন সবজি উৎপাদন হয়েছে। সবজি উৎপাদন, বীজ উৎপাদন ও সবজি আবাদে নতুন নতুন প্রযুক্তি ব্যবহারে সফলতা পেয়েছেন কৃষক ও কৃষি কর্মকর্তারা।

ভালো উৎপাদনের ফলে ডুমুরিয়ার বিভিন্ন এলাকায় গড়ে উঠেছে শাকসবজির পাইকারি বাজার। সারাবছরই ডুমুরিয়ায় সবজির আবাদ হয়। তবে সবচেয়ে বেশি আবাদ হয় শীতকালে। নিরাপদ ও বালাইমুক্ত হওয়ায় এই অঞ্চলের সবজি দেশের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে। নিজেদের কষ্টার্জিত সবজি বিদেশে রপ্তানি হওয়ায় মহাখুশি এ অঞ্চলের কৃষকরা।

ব্যবসায়ী ও কৃষকরা জানান, ভালো দাম পাওয়ায় প্রতি বছর শাকসবজির আবাদ বাড়ছে। বিশেষ করে আগাম জাতের শাকসবজি আবাদ করে ভালো লাভ পাওয়া যাচ্ছে। অনুকূল আবহাওয়ায় সবজির উৎপাদন ভালো হওয়া ও বাজার দর ভালো পেয়ে লাভবান হয়েছেন চাষিরা।

শুধু নিজেদের চাহিদাই নয়, বাণিজ্যিকভাবে চাষ হচ্ছে এসব সবজি। সবুজে সবুজে ভরে উঠছে মাঠ। বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন শোভা পাচ্ছে সারি সারি লাউ, শিম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, ওলকপি, মরিচ, লালশাক, মুলাশাক, পালংশাক, লাউশাকসহ হরেক রকমের শীতকালীন সবজি। তাই মাঠে মাঠে এসব ফসল পরিচর্যায় এখন ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। কাকডাকা ভোরে কোদাল, নিড়ানি, বালতি, স্প্রে মেশিন ইত্যাদি নিয়ে বেরিয়ে পড়ছেন। সন্ধ্যা অবধি মাঠে থেকে চারার গোড়ায় পানি ঢেলে, গাছের পরিচর্যা করে বাড়ি ফিরছেন। নানা জাতের শীতকালীন সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন এই এলাকার কৃষকরা।

ডুমুরিয়ার খর্নিয়ার বঙ্গবন্ধু কৃষি পদকপ্রাপ্ত দেশসেরা সবজি চাষি আবু হানিফ মোড়ল বলেন, “শীতকালীন শাকসবজির ফলন ভালো হয়েছে। বিশেষ করে ফুলকপি, ওলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো, সিম, বেগুন, লালশাক। এ বছর দামও ভালো পাচ্ছি।”

শোভনার মলমলিয়া গ্রামের কৃষক কামাল বাওয়ালী বলেন, “শীতকালীন শাকসবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। সিম, টমেটো, ওলকপি চাষ করেছিলাম। ৬ বিঘার ঘেরের ভেড়িতে এসব সবজি চাষ করেছিলাম। দাম ভালো পেয়েছি। ডুমুরিয়ার সবজি এখন বিদেশেও রপ্তানি করা হচ্ছে।”

ডুমুরিয়া উপজেলার ৫ নম্বর আটলিয়া ইউনিয়ন বরাতিয়ার কৃষক তাপস বলেন, “ডুমুরিয়ার কৃষককে সার, বীজ, প্রশিক্ষণ এবং পরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করছে কৃষি বিভাগ। এর কারণে এই এলাকায় বাম্পার ফলন হচ্ছে। ফসল উৎপাদনের দিক থেকে এখানকার কৃষকরা সারাদেশে তাক লাগিয়ে দিচ্ছে। এ উপজেলার বিষমুক্ত সবজি এখন বিদেশে যাচ্ছে, যা আমাদের জন্য খুবই খুশির খবর।”

ডুমুরিয়া উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. ইনসাদ ইবনে আমিন বলেন, “ডুমুরিয়া উপজেলায় শীতকালীন সবজির বাম্পার ফলন হয়েছে। শীতের সবজিতে দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকের মুখে হাসি ফুটেছে। নানা জাতের শীতকালীন সবজি চাষ করে স্বাবলম্বী হয়ে উঠছেন হাজারও কৃষক। ডুমুরিয়ার সবজি স্থানীয় চাহিদা পূরণ করে সরাসরি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সরবরাহ হচ্ছে। শুধু তাই নয়, ইতালি, ইংল্যান্ড, কোরিয়াসহ বিভিন্ন দেশে এই অঞ্চলের সবজি রপ্তানি করা হয়। এবার প্রায় ২২০ কোটি টাকার শীতকালীন শাকসবজি উৎপাদন করা হয়েছে।”

Link copied!