• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

পদ্মার চরে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন ফসল


রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩, ০৬:৪৬ পিএম
পদ্মার চরে চাষ হচ্ছে বিভিন্ন ফসল

রাজশাহীর পদ্মা নদীর পানি শুকিয়ে জেগে উঠেছে চর। চরের বেশিরভাগ এলাকায় বালু থাকলেও কোথাও কোথাও জমেছে পলি মাটি। আর সেই উর্বর পলি মাটিতে বিভিন্ন ধরণের ফসল চাষ করছেন কৃষকরা। ফলে পদ্মার চরে এখন সবুজের সমারোহ।

শুক্রবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিকালে সরেজমিনে দেখা যায়, ধু ধু বালুচরে এখন কেবলই সবুজের সমারোহ। রাজশাহীর লালনশাহ্ মুক্তমঞ্চের নিচ থেকে শুরু করে পশ্চিমে টি-বাঁধ এলাকা পর্যন্ত শত শত হেক্টর জমিতে এবার বিভিন্ন ধরণের ফসল ফলানো হয়েছে। মরা পদ্মার বুক চিরে যেন ফসলের বিপ্লব ঘটেছে।

রাজশাহী জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, পদ্মার চরে চাষযোগ্য প্রায় ১৩ হাজার ৫৬৬ হেক্টর জমি রয়েছে। রাজশাহী মহানগরী ছাড়াও বাঘা, চারঘাট, পবা ও গোদাগাড়ী উপজেলায় রয়েছে এসব জমি। নদীর বাম পাশের গ্রাম ঘেঁষে এসব জমিতেই প্রতি বছর চাষ হয় বিভিন্ন ধরণের ফসল। কম খরচে উৎপাদনও ভাল হয়। ভূমিহীনরাই এই চরে বেশি চাষাবাদ করেন।

খন্দকার মাইনুল ইসলাম নামের এক কৃষক জানান, চরে সাধারণত মসুর ও খেসারি ডাল ভালো হয়। তাই তিনি এবার প্রায় তিন বিঘা জমিতে ডাল চাষ করেছেন। এসব চাষ করতে বেশি খরচ হয় না। এবার প্রায় চরেই মসুর ও খেসারি ডালের চাষ হয়েছে। এসব ফসল চাষের জন্য সেচেরও প্রয়োজন হয় না।

মাইনুল ইসলাম বলেন, “আগে চরের জমিতে সরিষা ও গমের ভালো ফলন হতো। গম চাষ করতে হলে পানি ব্যবস্থা রাখতে হয়, যা আমাদের জন্য অনেক ব্যয়বহুল। সে কারণে অনেকেই গম চাষ ছেড়ে দিয়েছেন। তবে এখন খুব অল্প সংখ্যক কৃষক আছে যারা গম চাষ করেন। এছাড়া ভুট্টা ও বাদাম চাষ করেছেন কেউ কেউ।”

আবুল কালাম নামের আরেক কৃষক জানান, বিভিন্ন এলাকায় শ্যালো মেশিন দিয়ে ধানের চাষ করা হচ্ছে। তিনি নিজেও নগরীর আলুপট্টি এলাকায় পদ্মার চরে ধান চাষ করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করছেন গত বছরের তুলনায় এবার ফলন ভালো হবে।

রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক শামসুল হক বলেন, “চরে কৃষকরা যেন ভালোভাবে চাষাবাদ করতে পারে সেজন্য আমরা প্রযুক্তিগত এবং তথ্য বিষয়ে সার্বিকভাবে সহযোগিতা করছি। কোন মৌসুমে কি ধরণের ফসল চাষ করতে হয়, কীভাবে বীজ বপন ও চারার পরিচর্যা করতে হয় সে বিষয়গুলোও কৃষকদের জানাচ্ছি। এর ফলে কৃষকরা ভালোভাবে চাষাবাদ করতে পারেন।”

শামসুল হক আরও বলেন, “চরে নানা ধরণের ফসল চাষ হলেও এবার ডালের চাষ অনেক বেশি হয়েছে। চরে মসুর, খেসারি, মাস কালাইয়ের চাষ বেশি হলেও এখন ধান, ভুট্টা, বাদাম, ফুলকপি, বাঁধাকপি, পটোল, টমেটো, আলু, মরিচ, পেঁয়াজসহ অন্যান্য ফসলেরও চাষাবাদ হয়। উর্বর পলি মাটির কারণে উৎপাদনও হয় ভালো। এতে চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।”

Link copied!