• ঢাকা
  • শনিবার, ০৪ মে, ২০২৪, ২২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন ভাবনায় বদলে যাচ্ছে দুর্গম জনপদ


জীতেন বড়ুয়া, খাগড়াছড়ি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৫, ২০২৪, ০৩:৪৮ পিএম
প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন ভাবনায় বদলে যাচ্ছে দুর্গম জনপদ
খাগড়াছড়ির দুর্গম জনপদ ‘লম্বাছড়া গ্রাম। ছবি প্রতিনিধি

পরিকল্পিত ও সমন্বিত উন্নয়ন ভাবনায় বদলে যাচ্ছে খাগড়াছড়ির দুর্গম জনপদ ‘লম্বাছড়া’ গ্রাম। এখানে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘গ্রাম হবে শহর’ ধারণার এক সুন্দর প্রতিফলন হয়েছে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গ্রামটি এখন গ্রামীণ উন্নয়নের মডেলে পরিণত হয়েছে।

জেলার দীঘিনালা উপজেলা সদর থেকে দুর্গম লম্বাছড়ার দূরত্ব প্রায় ১৮ কিলোমিটার। সরেজমিনে দেখা যায়, সবুজ পাহাড়ের পাদদেশে ছোট্ট একটি গ্রাম। এই গ্রামে অন্তত ৬৭ ত্রিপুরা পরিবারের বসবাস। গ্রামের অধিকাংশরাই অসচ্ছল জুমচাষি। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণের ঘর বরাদ্দ পাওয়ার পর থেকে বদলাতে শুরু করে এই গ্রামের মানুষ জীবন। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়েছে গ্রামের ২০ পরিবার। নতুন ঘরের পাশাপাশি সুপেয় পানির জন্য নতুন নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। এ ছাড়া কমিউনিটি ক্লিনিকে গ্রামে বসেই মিলছে প্রাথমিক স্বাস্থ্য সেবা।

আশপাশের ১৯ গ্রামে প্রাথমিক বিদ্যালয় থাকলেও এই গ্রামে ছিল না উচ্চ বিদ্যালয়। সেই সংকট নিরসনে এগিয়ে আসে জেলা প্রশাসন। ৯ জানুয়ারি  জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান। জেলা প্রশাসনের অর্থায়নে স্কুল এন্ড কলেজ নির্মাণে ব্যয় হবে ২০ লাখ টাকা।

লম্বাছড়া গ্রামের বাসিন্দা তরুণ বিকাশ ত্রিপুরা বলেন, “আমাদের গ্রাম আগে এরকম ছিল না। অনুন্নত ছিল। এখানে নতুন ঘর দেওয়া হয়েছে। নলকূপ দেওয়া হয়েছে। ক্লিনিক আছে। সম্প্রতি স্কুল এন্ড কলেজের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপিত হয়েছে। গ্রামের ছেলে-মেয়েদের ৬ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পড়াশোনা করতে হবে না।”

গ্রামের বাসিন্দা সন্দীপন ত্রিপুরা বলেন, “গ্রামে কমিউনিটি ক্লিনিক ছিল না। আগে অসুখ বিসুখ হলে ১৮ কিলোমিটার দূরের দীঘিনালা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেতে হত। এখন গ্রামেই স্বাস্থ্য সেবা মিলছে। বিশেষত গ্রামের নারীরা বেশি উপকৃত হয়েছে।”

প্রধানমন্ত্রীর উপহারের নতুন ঘর পেয়ে খুশি গ্রামের ত্রিবেণী ত্রিপুরা। তিনি বলেন, “আমার মতো গ্রামের ২০ জন নতুন ঘর পেয়েছে। আগে ভাঙা বেড়ার ঘর ছিল। এখন পাকা ঘর পেয়েছি।”

দীঘিনালা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ আরাফুল আলম বলেন, “এটি দুর্গম এলাকা। আমরা দেখেছি এখানে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার হার বেশি। এখন জেলা প্রশাসন স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপিত হওয়ায় ১৯টা গ্রামে শিক্ষার্থীরা এখানে পড়ার সুযোগ পাবে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ণ প্রকল্পের আওতায় ২০টি ঘর দেওয়া হয়েছে। প্রতি ৩ ঘরের জন্য একটি করে টিউবওয়েল বসানো হয়েছে।”

লম্বাছড়া গ্রামের উন্নয়ন কর্মকাণ্ডকে প্রধানমন্ত্রীর ঘোষিত ‘গ্রাম হবে শহর’ ধারণা সুন্দর প্রতিফলন বলে মন্তব্য করে খাগড়াছড়ির জেলা প্রশাসক মো. সহিদুজ্জামান বলেন, “এরকম একটি দুর্গম গ্রামে জেলা প্রশাসনের স্কুল এন্ড কলেজ স্থাপন একটা ভালো উদ্যোগ। পাহাড়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধে এই প্রতিষ্ঠান বড় ভূমিকা রাখবে। গ্রামের বাসিন্দাদের নতুন ঘর দেওয়া হয়েছে। সুপেয় পানি পাওয়ায় দীর্ঘদিনের সংকট দূর হয়েছে। কমিউনিটি ক্লিনিকের মাধ্যমে স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে।”

Link copied!