• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

গোলাপের সঙ্গে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন


সাভার প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ১১, ২০২৩, ০৪:১৫ পিএম
গোলাপের সঙ্গে দুলছে কৃষকের রঙিন স্বপ্ন

গোলাপগ্রাম খ্যাত সাভারের বিরুলিয়ায় লালের সমাহারে দুলছে কৃষকদের রঙিন স্বপ্ন। চলতি মাসে পরপর তিনটি দিবসকে ঘিরে লাভের স্বপ্ন দেখছেন ফুল চাষিরা।

জানা গেছে, ফেব্রুয়ারি মাসে পহেলা ফাল্গুন, ভালোবাসা দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ফুলের বেশ চাহিদা থাকে। তাই এই তিন দিবসকে ঘিরে সাভারের ফুল চাষিদের ব্যস্ততা বেড়ে যায়। গেল কয়েক বছরে করোনা ও গোলাপের বাগানের মড়কের প্রভাবে লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছিলো সাভারের ফুলচাষিদের। এ বছর করোনা ও ফুলের বাগানে মড়কের প্রভাব না পড়ায় লাভের আশা করছেন চাষিরা।

সরেজমিনে দেখা যায়, উপজেলার বিরুলিয়া ইউনিয়নের শ্যামপুর, মৈস্তাপাড়া, বাগ্নীবাড়ি, কালিয়াকৈর, সাদুল্লাপুর, আকরাইন, ভবানীপুর, রাজারবাগ, সারুলিয়াসহ মোট ২০টি গ্রামে প্রায় ৩০শ হেক্টর জমিতে বাণিজ্যিকভাবে গড়ে উঠেছে গোলাপ ফুলের বাগান। চলতি মাসে তিনটি দিবসকে ঘিরে ফুলের পরিচর্যায় ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। এ যেন লালের সমারোহে সজ্জিত বাগানের প্রতিটি গোলাপে দুলছে কৃষকদের রঙিন স্বপ্ন।  

গোলাপ চাষি আকবর জানান, কয়েক বছর করোনা ও গত বছরে বাগানে মড়ক লাগায় লোকসানের সম্মুখীন হতে হয়েছে। তবে এ বছর করোনার প্রভাব ও বাগানে মড়ক না লাগায় ফুলের উৎপাদন ভালো হয়েছে।  

বাগ্নীবাড়ি এলাকার ফুলচাষি শরীফ জানান, তিন দিবসকে ঘিরে গোলাপ চাষিদের অনেক স্বপ্ন রয়েছে। প্রতিবছর ফেব্রুয়ারিকে ঘিরে ফুলের বেচা-বিক্রির হিসাব করেন তারা। তবে স্বাভাবিক দিনগুলোতে ফুলের চাহিদা তেমন থাকে না। তাই বেচা-বিক্রিও কম থাকে। সেই সময় ফুলের যোগান বেশি থাকলেও দাম ভালো পাওয়া যায় না বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি।
সাদুল্লাপুরের গোলাপ চাষি কবির জানান, বিরুলিয়া ইউনিয়ন মিরিন্ডা জাতের গোলাপ চাষের উপযোগী। উর্বর ও নিষ্কাশিত জমিতে গোলাপ চাষ অধিকতর লাভজনক। তবে এ বছর গোলাপের আবাদ ভালো হয়েছে।

৩ বিঘা জমিতে গোলাপের বাগান করেছেন সারুলিয়ার হোসেন আলী। হোসেন আলী জানান, বছরের অন্য সময় ফুলের দাম প্রতি পিস ১ থেকে ২ টাকা বিক্রি করতে হয়। তবে বিভিন্ন দিবসে ফুলের দাম বাড়ে। এ বছর জানুয়ারিতে ফুলের দাম পাইকারি ২টাকা করে বিক্রি করা হয়েছে। ফেব্রুয়ারিতে তিনটি দিবসকে কেন্দ্র করে ফুলের দাম কিছুটা বৃদ্ধি পাবে। ওই দিবসগুলোতে ফুলের দাম ১০-১৫ টাকায় বিক্রি হতে পারে বলে আশা তার।

এদিকে সন্ধ্যা হলেই মৈস্তাপাড়ায় গোলাপ ফুলের পাইকারি হাটে শুরু হয় চাষিদের হাঁক-ডাক। সেখানে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে খুচরা ও পাইকারি বিক্রেতারা আসেন ফুল কিনতে।

হাটে আসা শাহবাগের পাইকারি ফুল বিক্রেতা নবীন ইসলাম বলেন, “ফেব্রুয়ারিতে ফুলের চাহিদা অনেকটাই বেশি থাকে। তাই কয়েক বছরের তুলনায় এবার খুচরা বিক্রেতাদের ফুলের চাহিদাও বেশি। এ বছর ফুলের যোগানও গত বছরের থেকে বেশি দেখা যাচ্ছে। তবে ১শ পিস গোলাপ ৭ থেকে ৮শ টাকায় কিনতে হচ্ছে।”

এ বিষয়ে সাভার উপজেলার কৃষি অফিসার নাজিয়াদ আহমেদ জানান, এ বছর ফুলের উৎপাদন তুলনামূলকভাবে ভালো হয়েছে। করোনা ও বাগানে মড়ক লাগায় যে ক্ষতি হয়েছিল। সেই ক্ষতি এবছর পুসিয়ে নেওয়ার জন্য চাষিদের সহযোগিতা করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।

Link copied!