সারা দেশে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকার তিনটি পণ্যের দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে। এরপরও নওগাঁর বাজারগুলোতে নির্ধারিত দামে মিলছে না আলু ও পেঁয়াজ। ব্যবসায়ীরা ইচ্ছামতো সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বেশি দামে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি করছেন। এতে বিপাকে পড়েছেন মধ্য ও নিম্ন আয়ের মানুষ।
মঙ্গলবার (২৬ সেপ্টেম্বর) সকালে নওগাঁ পৌর কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতি কেজি আলু ৫০ থেকে ৫৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আবার প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা দরে। প্রতি হালি ডিম বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫২ টাকায়। এ ছাড়া আমদানি করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬৫ থেকে ৭০ টাকায়। ব্যবসায়ীদের দাবি, সরকারের বেধে দেওয়া দামে আলু কিনতে পারছেন না তারা। তাই আগের দামেই আলু বিক্রি করছেন।
খুচরা আলু বিক্রেতা করিম বলেন, “সরকার আলুর দাম নির্ধারণ করে দিয়েছে ৩৫ টাকা। এই দামে আমরা কিনতেও পারি নাই। এসব আলু আমার আগের কেনা। কেজি প্রতি ৪০ টাকায়ও বিক্রি করার সুযোগ নাই।”
পেঁয়াজ বিক্রেতা আমজাদ বলেন, “সরকার দাম নির্ধারণ করে দেওয়ার পরও মোকামগুলোতে পেঁয়াজের দাম এখনো আগের মতোই রয়েছে। মোকামে পেঁয়াজের দাম কমে গেলেই পাইকারি ও খুচরা বাজারে দাম কমে যাবে।”
মান্দা উপজেলার আইওর পাড়া এলাকার আলু চাষি নজরুল ইসলাম বলেন, “আমরা ধার-দেনা করে আলু চাষ করি। দেনা শোধ করার জন্য মৌসুমে শুরুতেই আলু বিক্রি করতে হয়। তখন এক মণ আলু ৬০০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হয়। আমরা আলু উৎপাদন করে দাম পায় না, কিন্তু ক্রেতাদের ঠিকই বেশি দামে আলু কিনে খেতে হচ্ছে। আলু ব্যবসায়ী আর কোল্ডস্টোরেজের কাছে এখন সবাই জিম্মি।”
বাজারে আসা এক এনজিওকর্মী আবু হাসনাত বলেন, “বাজারে ভোগ্যপণ্যের দামের ঊর্ধ্বগতির কারণে চাহিদামতো ক্রয় করতে পারি না। সব ধরনের সবজির দামের পাশাপাশি গরিবের একমাত্র ভরসা আলু, সেই আলুর দামও হাফ সেঞ্চুরি। মাছে তো হাত দেওয়াই যায় না। কাঁচাবাজারে প্রশাসনের নজরদারি না থাকায় আলু পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে নেই।”
এ ব্যাপারে নওগা জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রুবেল আহমেদ বলেন, “আমাদের নিয়মিত অভিযান অব্যাহত রয়েছে। বেশি দামে আলু ও পেঁয়াজ বিক্রির সুনির্দিষ্ট কোনো অভিযোগ থাকলে দোষীদের বিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার মনিটরিং কমিটির সদস্যরা কাঁচাবাজারে নিয়মিত যোগাযোগ রাখছে।”