নওগাঁর বাজারগুলোতে সপ্তাহের ব্যবধানে বেড়েছে বিভিন্ন নিত্যপণ্যের দাম। সরকারের পক্ষ থেকে কয়েকটি পণ্যের মূল্য নির্ধারণ করে দিলেও সেগুলো মানছেন না ব্যবসায়ীরা। এতে বাজার করতে এসে নাভিশ্বাস বাড়ছে ক্রেতাদের।
জেলার বিভিন্ন বাজার ঘুরে দেখা যায়, প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজের দাম সপ্তাহের ব্যবধানে ২০ টাকা বেড়ে ১০০ টাকায় গিয়ে ঠেকেছে। ব্রয়লার মুরগির দামও ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজিতে। আর ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে আলু। এছাড়া ডিম, আদা, রসুনসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় প্রায় সকল পণ্যের দামই ঊর্ধ্বমুখী।
সরকারি সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশের (টিসিবি) গত সপ্তাহের তথ্য অনুযায়ী, সপ্তাহের ব্যবধানে প্রতি হালি ডিমের দাম বেড়েছে ৯.১৮ শতাংশ। ব্রয়লার মুরগির দাম বেড়েছে ৫.৫৬ শতাংশ। আমদানি করা আদার দাম বেড়েছে ৪ শতাংশ। সাত দিনের ব্যবধানে আমদানি করা রসুনের দাম বেড়েছে ২.৬৩ শতাংশ। আর দেশি পেঁয়াজের দাম বেড়েছে ৮.৮২ শতাংশ।
খুচরা বাজারের বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১০০ টাকা কেজি। যা সাত দিন আগে ৮০ টাকা ছিল। সরকার নির্ধারণ করে দিলেও আলুর দাম কমেনি। প্রতিকেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা। প্রতি পিস ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৪ টাকা। যা সাত দিন আগে ছিল ১৩ টাকা। এছাড়া প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। আর প্রতিকেজি আমদানি করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২২০ টাকা। যা আগে ২০০ টাকা ছিল। আমদানি করা আদা প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকা, যা সাত দিন আগে ২৮০ টাকা ছিল।
নওগাঁ পৌর বাজারের ক্রেতা সুলতানা পারভীন বলেন, “বাজারে সবধরনের পণ্যের দাম আবারও নতুন করে বাড়ছে। বিক্রেতাদের কোনো ধরনের জবাবদিহিতা নেই। তারা ক্রেতার কাছে পণ্যের দাম বাড়িয়ে বিক্রি করছে। যারা দেখবে তারাও কিছু করছে না। ফলে পণ্যের বাড়তি দামে আমাদের মতো ক্রেতার নাজেহাল হতে হচ্ছে।”
তিনি বলেন, “ব্রয়লার মুরগি হঠাৎ করে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কেজিতে ২০ টাকা বাড়িয়েছেন বিক্রেতারা। কিন্তু কী কারণে বাড়ল তা কেউ তদারকি করছে না।”
মান্দার প্রসাদপুর বাজারে নিত্যপণ্য কিনতে আসা রেজাউল করিম বলেন, “সরকার শুধু পণ্যের দাম নির্ধারণ করে ক্রেতাকে বোকা বানায়। কিন্তু বিক্রেতারা বাড়তি দরেই বিক্রি করে। এমনকি পণ্যের দাম আরেক দফা বাড়িয়ে ক্রেতার পকেট কাটে। ৩৫-৩৬ টাকা আলুর দাম নির্ধারণ করলেও বাজারে প্রতিকেজি আলু ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।”
শফিক মিয়া নামের আরেক ক্রেতা বলেন, “১২ টাকা নির্ধারণ করা ডিমের দাম বিক্রেতারা ১৪ টাকায় বিক্রি করছে। ৬৫ টাকার পেঁয়াজ কিনতে হচ্ছে ১০০ টাকায়। দেখার যেন কেউ নেই।”
এ বিষয়ে নওগাঁ জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. রুবেল আহমেদ বলেন, “পণ্যের দাম সহনীয় রাখতে অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে নিয়মিত বাজার তদারকি করা হচ্ছে। অযৌক্তিকভাবে পণ্যের দাম বাড়ালেই আইনের আওতায় এনে শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। জরিমানা করা হচ্ছে।”