• ঢাকা
  • বুধবার, ০৮ মে, ২০২৪, ২৫ বৈশাখ ১৪৩১, ২৮ শাওয়াল ১৪৪৫

‘ঘরোত শুতি থাকলে কেউ ভাত দিবা নয়, এ জন্যে ভিক্ষাত বের হইছি’


মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
প্রকাশিত: জানুয়ারি ১৩, ২০২৪, ০৯:১২ পিএম
‘ঘরোত শুতি থাকলে কেউ ভাত দিবা নয়, এ জন্যে ভিক্ষাত বের হইছি’
মুরশিদা বেগম। ছবি : প্রতিনিধি

‘শীত গরম যাই হোক মোর এক কাপড় বাবা। কয়দিন থাকি খুব শীত নাগছে। মেলা মানুষের কাচে একটা কম্বল চাইছি কেউ দেয় না বাবা। ঠান্ডা বাতাসে হাত-পাও কাঁপে। মোর শরীলও থরথর করি কাঁপছে। কী আর করমো। ঘরোত তো শুতি থাকলে কেউ ভাত দিবা নয়। এ জন্যে ভিক্ষাত বের হইছি। পেট তো আর শীত মানে না বাবা।’

এভাবেই কথাগুলো বলছিলেন বাগেরহাটের মোংলার বালুর মাঠের বস্তির শতবর্ষী বৃদ্ধা মুরশিদা বেগম। তিনি জানান, একযুগ আগে তার স্বামী মারা গেছেন। সহায় সম্বল বলতে কিছু নেই। আছে একটি ছাপড়া ঘর। এখানে জরাজীর্ণভাবে বসবাস করেন। এখন জীবন সংগ্রামে করছেন ভিক্ষাবৃত্তি। শীতের তীব্রতায় জবুথবু অবস্থায় তিনি। তবুও শীতের কাঁপুনি নিয়ে মুরশিদা বেড়িয়েছেন ভিক্ষা করতে।

শুধু মুরশিদা নয়, গত কয়েকদিনে শীতে বেকায়দায় পড়েছেন খেটেখাওয়া অনেক নিম্নআয়ের মানুষ। স্থবির হয়ে পড়ছে তাদের জীবন। শীতের কারণে কমেছে আয়-রোজগার।

জানা যায়, পৌষের শেষ সপ্তাহে এসে মোংলাসহ উপকূলীয় এলাকায় শীতের তীব্রতা বেড়েই চলেছে। কনকনে শীতে জবুথবু হয়ে পড়ছেন বয়স্ক ও শিশুরা। আর এই ঠান্ডার কবলে অনেকের দেখা দিয়েছে শ্বাসকষ্ট, নিউমোনিয়া ও ডায়রিয়াসহ নানা ধরনের ঠান্ডাজনিত রোগ।

মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা যায়, শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন বৃদ্ধ ও শিশুরা। হাসপাতালে আসা অধিকাংশ রোগী ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত।

মোংলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের উপসহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার প্রকাশ কুমার দাস বলেন, সম্প্রতি শীতের কারণে ডায়রিয়া, শ্বাসকষ্ট ও নিউমোনিয়া রোগীর সংখ্যা বাড়ছে। বিশেষ করে শিশু ও বয়ষ্কদের মাঝে এর প্রকোপ ব্যাপক দেখা দিচ্ছে। মোংলা ছাড়াও আশপাশের উপজেলা থেকেও রোগীরা চিকিৎসা সেবা নিতে আসছেন। এখনো প্রায় ৩০ থেকে ৪০ জন রোগী ভর্তি রয়েছে।

স্বদেশ বিভাগের আরো খবর

Link copied!