• ঢাকা
  • সোমবার, ২৯ এপ্রিল, ২০২৪, ১৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ শাওয়াল ১৪৪৫

রঙিন সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের


দিনাজপুর প্রতিনিধি
প্রকাশিত: ফেব্রুয়ারি ৮, ২০২৩, ০২:২৮ পিএম
রঙিন সবজি চাষে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের

শীতকাল মানেই শাক-সবজীর সমাহার। দেশে শীত প্রায় শেষের দিকে। ঠিক এই সময় বাজারে উঁকি দিচ্ছে বিভিন্ন রঙের ফুলকপি ও বাঁধাকপি। এর মধ্যে রয়েছে হলুদ ও বেগুনি রঙের ফুলকপি। সঙ্গে আছে বেগুনি রঙের বাঁধকপিও। ব্রোকলিও যেন শোভা দিচ্ছে সবজির বাজারে। রঙিন হওয়ায় ক্রেতাদের দৃষ্টি কেড়েছে আকর্ষনীয় এ সবজীগুলো। দিন দিন এসব রঙিন সবজির চাহিদা বাড়ছে। কৃষকরাও এসব রঙিন সবজি চাষে আগ্রহী হচ্ছেন।

সরেজমিনে বাহাদুর বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বাজারে রঙ-বেরঙের ফুলকপি ও বাঁধাকপি বিক্রি হচ্ছে। সাধারণ ফুলকপি ও বাঁধাকপি থেকে রঙিনগুলোর দাম বেশি।  

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, দিনাজপুর সদরের শেখপুরা ইউনিয়নে আলমগীর নামের এক কৃষক এসব রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপির চাষ করেছেন।

কৃষক আলমীগর জানান, তিনি ২০০টি সাধারণ ফুলকপি, ১৫০টি বেগুনি রঙের ফুলকপি ও ২২০০টি বেগুনি রঙের বাঁধাকপির চারা রোপন করেছিলেন। বাজারে এসব রঙিন ফুলকপি ও বাঁধাকপির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। ভালো দামও পাচ্ছেন তিনি।

আলমগীর হোসেন বলেন, “মহিলা বহুমূখী থেকে এই চারাগুলো দিয়েছিল। এগুলোতে কোনো প্রকার কীটনাশ স্প্রে করা হয়নি। নিমপাতার রস, শ্যাম্পু আর হলুদ দিয়ে চাষ করা হয়েছে। বাজারে এই কপি ৫০ থেকে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। অন্যান্য কপির থেকে এই কপিতে চার গুন লাভ বেশি। বাজারে চাহিদাও বেশি। এবার দেশি বিদেশি মিলিয়ে প্রায় ৯ প্রকার কপির চাষ করেছি।”

প্রতিবেশী কৃষক আতাব উদ্দীন বলেন, “এই কপিগুলো আগে দেখি নাই। আলমগীর চাষ করায় চোখে পড়ল। এখনও খাওয়া হয়নি। তবে একদিন খেয়ে দেখব। আর আগামীতে চাষ করব। দাম নাকি আলমগীর ভালোই পাচ্ছে।”

প্রতিবেশী পলাশ বলেন, “নতুন একটা সবজি চাষ করেছে আলমগীর। বাজারে নতুন জিনিসের ভালো দাম পাওয়া যায়। দেখি আগামীবার আমিও এগুলো চাষ করব।”

রুমানা শারমিন নামের এক ক্রেতা বলেন, “এই হলুদ রঙের ফুলকপি তো আগে চোখে পড়েনি। বাজারে এসে দেখতে পেলাম। তবে এটার পুষ্টিগুন সম্পর্কে আমরা তেমন জানি না। এটা দেখে আমার মনে প্রশ্ন জেগেছে এটার পুষ্টিগুন বা স্বাদ কেমন? যদি ভালো হয় তবে এর গ্রহণ যোগ্যতা পাবে।”

মুন্না পারভেজ নামের এক ক্রেতা বলেন, “ফুলকপিগুলো দেখতে খুবই সুন্দর। কিন্তু এটার দাম খুব বেশি চাচ্ছে। ৮০ টাকা দরে ফুলকপি কিনে খাওয়া সম্ভব নয়। তবে দাম কম হলে সকলেই কিনে খেতে পারবে।”

খোকন নামের এক ব্যবসায়ী বলেন, “বাজারে একজন কৃষকই এই কপিগুলো এনেছেন। অন্যান্য সবজির তুলনায় এর দাম অনেক বেশি। অন্যান্য কপি বিক্রি হচ্ছে ২০ টাকা। আর এই রঙিন কপিগুলো পাইকারী দরে কেজি প্রতি ৬০ টাকা করে হচ্ছে। আর খুচরা ৭০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ওঠার পর কিছু মানুষ খেয়েছে। তারা এসে ভালোই বলেছেন।”

ইয়াকুব আলী নামের এক সবজি বিক্রেতা বলেন, “যেসব ক্রেতা এই কপিগুলো একদিন কিনেছেন। তারা পরদিন বাজারে এসে আবার খোঁজ করছেন। কিন্তু ক্রেতাদের চাহিদার তুলনায় বাজারে খুব কম আছে। তাই দামটা একটু বেশি। তবে উৎপাদন বাড়লে দাম কমে আসবে “

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, “আমাদের বাণিজ্যিক কৃষির দিকে এগিয়ে যেতে হবে। তা না হলে কৃষকরা লাভবান হতে পারবে না। রঙিন ফুলকপি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে তাই অন্য কৃষকরাও এখন আগ্রহ দেখাচ্ছেন। আমরা তাদের বিভিন্নভাবে সহায়তা করবো।”

Link copied!