প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বুধবার (৭ ডিসেম্বর) কক্সবাজার সফরে আসছেন। প্রায় সাড়ে পাঁচ বছর পর পর্যটন নগরীতে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী। এদিকে সরকারপ্রধানের সফরকে ঘিরে সাজ সাজ বর পড়েছে কক্সবাজারে। প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছে কঠোর নিরাপত্তাব্যবস্থা।
দলীয় সূত্র জানিয়েছে, বুধবার সকালে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভের ইনানী-পাটোয়ারটেক সৈকতে অনুষ্ঠিতব্য তিন দিনব্যাপী আন্তর্জাতিক নৌশক্তি প্রদর্শন মহড়ার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে কক্সবাজার সমুদ্রসৈকতের নিকটবর্তী লাবণীর পয়েন্টের শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত বিশাল জনসভায় ভাষণ দেবেন তিনি। ইতিমধ্যে জনসভাস্থলের সার্বিক কর্মযজ্ঞ সম্পন্ন হয়েছে। সভাস্থলের আশপাশসহ পুরো শহর তোরণ, ব্যানার-ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে।
সভাস্থলের মূল মঞ্চটি তৈরি করা হচ্ছে নৌকার আদলে। এর সঙ্গে থাকবে ৪টি উপমঞ্চ। যেখানে কেন্দ্রীয় ও জেলা নেতারা অবস্থান নেবেন। একই সঙ্গে উদ্বোধন ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের জন্য থাকবে আলাদা মঞ্চ। প্রধানমন্ত্রী ভাষণ প্রচারের জন্য পুরো শহর ও আশপাশের এলাকায় লাগানো হচ্ছে দুই শতাধিক মাইক। অন্যদিকে নিরাপত্তার জন্য নেওয়া হচ্ছে নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তাব্যবস্থা।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মেয়র মুজিবুর রহমান জানিয়েছেন, কেবল সভাস্থল শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়াম নয়, পুরো কক্সবাজার শহর হবে জনারণ্য। এবারের জনসভায় সাড়ে চার লাখ মানুষের জমায়েত হতে পারে। প্রাথমিকভাবে শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামের অভ্যন্তরে তিন লাখের বেশি মানুষ অবস্থান নিতে পারবে। এ ছাড়া সৈকতের লাবণী পয়েন্ট, সুগন্ধা পয়েন্ট, বাহারছড়ার মুক্তিযোদ্ধা চত্বর, হলিডের মোড়, শহীদ সরণি এলাকা, কলাতলীর হোটেল মোটেল জোন হয়ে কলাতলীর ডলফিন মোড় পর্যন্ত মানুষ জমায়েত হবে। জনসভার ভাষণ প্রচারের জন্য পুরো এলাকায় দুই শতাধিক মাইক ব্যবহার করা হচ্ছে।
মেয়র মুজিবুর রহমান আরও জানান, প্রধানমন্ত্রীর এবারের জনসভা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের অন্য এলাকার চাইতে কক্সবাজারে বেশি মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন হচ্ছে। কক্সবাজারে রয়েছে মাতারবাড়ী কয়লা বিদ্যুৎকেন্দ্র, গভীর সমুদ্রবন্দর, কক্সবাজার রেললাইন প্রকল্প, কক্সবাজার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, মেরিন ড্রাইভ প্রশস্তকরণ, সাব মেরিনের মাধ্যমে কুতুবদিয়ায় বিদ্যুৎ প্রকল্প, কক্সবাজার মেডিকেল কলেজ, সাবরাং এক্সক্লুসিভ ট্যুরিজম জোন, মহেশখালী এলএমজি টার্মিনালসহ অসংখ্য প্রকল্প।
কক্সবাজার জেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ফরিদুল আলম চৌধুরী জানান, শহীদ শেখ কামাল ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সকাল ১০টা থেকে মানুষ সমাগম শুরু হবে। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে অনেকেই কক্সবাজার শহরে আসবে বলে জানিয়েছেন। সভায় দলীয় নেতারা সাড়ে চার লাখ মানুষের সমাগমের তথ্য জানিয়েছে। সেভাবে প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
কক্সবাজারের পুলিশ সুপার মাহফুজুল ইসলাম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ইতিমধ্যে কয়েক দফা বৈঠক করেছে। প্রধানমন্ত্রী ও জনসভাস্থলসহ পুরো শহরের নিশ্ছিদ্র নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। ৫ ডিসেম্বর থেকে শহরের বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। পুলিশ, র্যাব, বিজিবিসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা সমন্বয় করে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। এ ছাড়া পুরো শহর সাদাপোশাকে বিভিন্ন সংস্থার সদস্যদের সার্বক্ষণিক নজরদারি থাকবে।