সাতক্ষীরার দেবহাটা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবু রায়হান ও আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুল আজিজ হত্যা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং বাড়িঘর ভাঙচুর, নাশকতাসহ অন্তত ২০ মামলার আসামি আফগানিস্তানে প্রশিক্ষণ নেওয়া জামায়াত ক্যাডার জিয়াউর রহমান ওরফে আফগান জিয়াকে (৪০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
সোমবার (২৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানী ঢাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে দেবহাটা থানা পুলিশ।
আফগান জিয়া দেবহাটা উপজেলার সখীপুর ইউনিয়নের নারিকেলি গ্রামের আব্দুল করিম সরদারের ছেলে।
পুলিশের একাধিক সূত্র জানায়, সখীপুর মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সপ্তম শ্রেণি পর্যন্ত পড়াশুনা করে কিশোর বয়সেই বড়ভাই জাহাঙ্গীরের সঙ্গে সৌদি আরব পাড়ি জমিয়েছিলেন জিয়া। কিন্তু বয়স কম হওয়ায় সেখানে থাকতে না পেরে আফগানিস্তানে গিয়ে জড়িয়ে পড়েন জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে।
জঙ্গি প্রশিক্ষণ শেষে দেশে ফিরে পারুলিয়াতে বড় ভাইয়ের হার্ডওয়্যার ব্যবসা দেখাশোনা করতেন। এ সময় স্থানীয় এক বিএনপি নেতার হাত জাতীয়তাবাদী দলের রাজনীতিতে পা রাখেন। পরে জামায়াত নেতাদের বয়ানে উদ্বুদ্ধ হয়ে তিনি জামায়াতের রাজনীতিতে যোগ দেন। ২০১০ সালে পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তার হলে আফগান জিয়ার জঙ্গি সম্পৃক্ততার বিষয়টি প্রকাশ্যে আসে।
পরে জামিনে মুক্তি পেয়ে আবারও জামায়াতের রাজনীতিতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। অস্ত্র চালনায় সিদ্ধহস্ত আফগান জিয়া সখীপুর ইউনিয়ন জামায়াতের সেক্রেটারি ছিলেন। ২০১৩ সালের ২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াতের নায়েবে আমীর মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর রায়কে ঘিরে দেবহাটাসহ সাতক্ষীরা জেলাজুড়ে আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের ওপর হামলা, হত্যা, গাড়ি ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ, রাস্তাঘাট ও গাছ কেটে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিচ্ছিন্ন করাসহ বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সীমাহীন নাশকতা কর্মকাণ্ডের নেতৃত্বে ছিলেন আফগান জিয়া। পরে জঙ্গিবাদ ও নাশকতারোধে পুলিশের অভিযান শুরু হলে আফগান জিয়া ভারতে আত্মগোপন করেন।
দেবহাটা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বাবুল আক্তার বলেন, সম্প্রতি আত্মগোপনে থেকে আবারও নাশকতার ছক কষছিলেন আফগান জিয়া। তথ্য প্রযুক্তির সহায়তা নিয়ে কিছুদিন ধরে পুলিশ তাকে ট্র্যাকিংয়ে রেখেছিল। সোমবার দুপুরে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে অভিযান চালায় পুলিশ। গ্রেপ্তার পর আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।