মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে প্রাইভেটকার ধাওয়া করে ডাকাতির চেষ্টার ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করেছে পুলিশ।
বুধবার (৭ মে) বিকেলে নিজ কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন এসব কথা জানান মুন্সীগঞ্জের পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার।
আটক ব্যক্তিরা হলেন- চক্রের প্রধান কামাল ওরফে সিএনজি কামাল (৪০), ইসমাঈল সরদার (৩৮), রমজান বেপারী (২৭), রাসেল মোল্লা (২৪), লিমন মাতব্বর (২০)। এদের মধ্যে লিমনের বাড়ি মাদারীপুরে আর বাকিদের বাড়ি পটুয়াখালী।
এর আগে সোমবার (৫ মে) দিবাগত রাতে শ্রীনগরের ওমপাড়ায় ডাকাতির চেষ্টার এ ঘটনা ঘটে। চালকের দক্ষতায় ডাকাতের হাত থেকে রক্ষা পান গাড়িতে থাকা সবাই। গাড়ির একটি ড্যাসবোর্ড ক্যামেরায় পুরো ঘটনাটি রেকর্ড হয়। ভিডিওটি মঙ্গলবার বিকেল থেকে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে।
ভিডিওটিতে দেখা যায়, এক্সপ্রেসওয়েতে রাস্তা আটকে ওঁৎ পেতে থাকা ডাকাতরা একটি গাড়ি আসতেই বড় রামদা নিয়ে এগিয়ে আসতে থাকে। কিন্তু গাড়িচালক ঘটনার আকস্মিকতায় হকচকিয়ে না গিয়ে দ্রুত গাড়িটি নিয়ে কেটে পড়েন। হাফপ্যান্ট পরিহিত কয়েক কিলোমিটার জুড়ে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা ছয়জন ডাকাত গাড়িটিকে ধরতে না পেরে একটি রাম দা ছুড়ে মারেন।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পুলিশ সুপার জানান, মাদারীপুরের বাসিন্দা মো. রবিউল আলম হঠাৎ অসুস্থ প্রতিবেশীকে গাড়িতে নিয়ে চারজন ঢাকার উদ্দেশে যাত্রা করেন। ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগর থানাধীন ছনবাড়ি মোড়ে এসে গাড়ির চাপ দেখে ঢাকামুখী সার্ভিস লেন দিয়ে নেমে চলতে থাকে গাড়ি। সে সময় ষোলঘরের নিকটবর্তী এলাকায় রাস্তার ওপর বেশকিছু ছনের আঁটি দিয়ে তৈরি করা একটি ব্যারিকেড দেখতে পান রবিউল। গাড়ি থামাতেই রাস্তার নিচ থেকে রামদা হাতে ছয়জন ডাকাত গাড়িতে আক্রমণ করতে প্রবল বেগে ছুটে আসে। তাদের একজন গাড়ির ডানপাশে আঘাত করতেই রবিউল বুদ্ধিমত্তার সঙ্গে দ্রুত পেছনের দিকে চালিয়ে নেন। এ সময় ডাকাত দল গাড়িটিকে ধরতে ধাওয়া করে।
পুলিশ কর্মকর্তা শামসুল আলম আরও জানান, গাড়িটিকে ধরতে ব্যর্থ হয়ে একজন ডাকাত তার ধারাল অস্ত্রটি গাড়ির দিকে ছুড়ে মারে। তবে গাড়িটি নিরাপদে ডাকাতদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। অস্ত্রের আঘাতে গাড়ির লুকিংগ্লাস ও বনেট কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
ডাকাত দলের প্রধান কামাল অন্যদের নিয়ে গত সেপ্টেম্বরে একইভাবে এক্সপ্রেসওেয়েতে ডাকাতি সংঘটিত করে জানিয়ে পুলিশ সুপার জানান, সে সময় তারা ভিকটিমের মূল্যবান স্বর্ণালঙ্কার ও টাকা পয়সাসহ একটি লাইসেন্সকৃত অস্ত্র লুট করে নিয়ে যায়। সে ঘটনায় শ্রীনগর থানায় করা মামলায় আসামিদের গ্রেফতার করা হয়। সম্প্রতি আসামিরা আদালত থেকে জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও ডাকাতির চেষ্টা চালায়।