• ঢাকা
  • শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

এলজিইডির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ


ফেনী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২৪, ১২:৩০ পিএম
এলজিইডির কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মারধরের অভিযোগ
জেলার মানচিত্র

ফেনীতে সড়কে কার্পেটিং কাজে বিটুমিন কম দেওয়ায় প্রতিবাদ করায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের এক কর্মকর্তা ও দুই কর্মচারীকে মারধর করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে। বুধবার (২৭ মার্চ) ফেনী সদর উপজেলার শর্শদি ইউনিয়নের উত্তর শর্শদি গ্রামে এ ঘটনা ঘটে।

এ ঘটনায় সদর এলজিইডির পক্ষ থেকে ফেনী মডেল থানায় একটি লিখিতভাবে অভিযোগ দেওয়া হয়েছে।

আহতরা হলেন ফেনী সদর উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদ রানা, কার্য সহকারী মো. বেলাল হোসেন মজুমদার, নৈশপ্রহরী মো. নুরুল আবছার রাজু। আহতদের ফেনী জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।

এলজিইডি অফিস সূত্র জানিয়েছে, উত্তর শর্শদি থেকে ধোপাখিলা এলাকার কেল্লা শাহ সড়কের ৯৭০ মিটার সড়ক পাকাকরণের কাজের কার্যাদেশ পায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নয়ন এন্টারপ্রাইজ। শর্শদি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আবদুল আহাদ নয়ন ওই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারী। কার্যাদেশ অনুযায়ী, ২১ মার্চের মধ্যেই কাজটি সম্পন্ন হওয়ার নির্দেশ ছিল।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার এলজিইডির সদর উপজেলা উপসহকারী প্রকৌশলী মাসুদ রানা সরেজমিন পরিদর্শনে গিয়ে কাজে অনিয়ম দেখতে পেয়ে তাদের সতর্ক করেন। কিন্তু ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ওই সতর্কবার্তা আমলে নেয়নি। এমন খবর পেয়ে মাসুদ রানা গতকাল বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় তার অফিসের কার্যসহকারী বেলাল হোসেন মজুমদার ও নৈশপ্রহরী নুরুল আবছার রাজুকে নিয়ে ফের রাস্তাটির কাজ পরিদর্শনে যান। এ সময় কেল্লাশাহ সড়কের নিমতলা নামকস্থানে পিচ ঢালাইয়ের কাজ চলছিল।

ভুক্তভোগী মাসুদ রানা বলেন, “নিমতলা এলাকায় গিয়ে আমি দেখতে পাই, বিটুমিনের পরিমাণ স্পেসিফিকেশনের তুলনায় কম দেওয়া হচ্ছে। এই নিম্নমানের স্পেসিফিকেশন-বহির্ভূত কাজ সংশোধন করে পুনরায় বিটুমিন মিশ্রণ করে কাজ করতে তাদের মৌখিক নির্দেশনা দেই। এতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধি সোহেল ও শ্রমিকদের মাঝি মোফার নেতৃত্বে শ্রমিকরা উত্তেজিত হন। একপর্যায়ে তারা মারধর শুরু করে। আমাকে বাঁচাতে এলে কার্যসহকারী বেলাল হোসেন মজুমদার, নৈশপ্রহরী নুরুল আবছার রাজুকেও মারধর করে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের লোকজন ও কর্মরত শ্রমিকরা।”

উপজেলা প্রকৌশলী দীপ্ত দাস গুপ্ত জানান, ঘটনাটি এলজিইডির ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ এবং জনপ্রতিনিধিদের জানানো হয়েছে। এ বিষয়ে ফেনী মডেল থানায় একটি অবহিতকরণ পত্র দিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ জানানো হয়েছে।

ফেনী সদর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান শুসেন চন্দ্র শীল বলেন, “ফেনীর যে কোনো উন্নয়ন কাজে অনিয়মের ব্যাপারে কোনো ছাড় নেই। সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী এ ব্যাপারে কঠোর অবস্থানে রয়েছেন। যে ব্যক্তিই অনিয়ম করবে, কোনো পরিচয়ই তাকে রেহাই দিতে পারবে না। আমরা এ বিষয়ে আইনগত ও দাপ্তরিক ব্যবস্থা নিতে প্রকৌশল বিভাগকে অনুরোধ করেছি।”

এ বিষয়ে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সত্ত্বাধিকারী আবদুল আহাদ নয়ন প্রবাসে থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

ফেনী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ শহীদুল ইসলাম চৌধুরী বলেন, “এলজিইডির কর্মকর্তা-কর্মচারী লাঞ্ছিত হওয়ার বিষয়ে একটি অবহিতকরণ পত্র হাতে পেয়েছি। এ বিষয়ে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে থানায় একটি অভিযোগ করতে তাদের অনুরোধ করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।”

Link copied!