মুক্তিযোদ্ধাকে গলা কেটে হত্যার ঘটনায় মামলা

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলীকে প্রথমে গলা কেটে ও পরে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় মামলা হয়েছে।

শনিবার (২১ জানুয়ারি) মধ্যরাতে তার ছেলে রিফাত হাসান বাদী হয়ে নাহিদুজ্জামান প্রধান ওরফে বাবু (২৫) নামের একজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। এর আগে শুক্রবার (২০ জানুয়ারি) রাতে পাটগ্রাম পৌরসভার নিউ পূর্বপাড়ায় নিজ বাসার গেটের সামনে দুর্বৃত্তের হামলায় নিহত হন তিনি।

এম ওয়াজেদ আলী পাটগ্রাম পৌরসভার নিউ পূর্বপাড়া এলাকার বাসিন্দা ছিলেন। তিনি পাটগ্রাম মহিলা কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ এবং লালমনিরহাট-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আবেদ আলীর ছোট ভাই। তিনি জেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক উপকমান্ডার ছিলেন।

এ মামলায় উল্লেখিত বাবু পাটগ্রাম পৌরসভার রসুলগঞ্জ নিউপুর্বপাড়া এলাকার আব্দুস সামাদ প্রধানের ছেলে। তিনি স্থানীয় ফাতেমা প্রি ক্যাডেট কিন্ডার গার্টেন স্কুলের চাকরিরচ্যুত সহকারী শিক্ষক।

মামলার এজাহারে জানা যায়, পাটগ্রাম মহিলা কলেজের প্রতিষ্ঠা অধ্যক্ষ হিসেবে অবসর গ্রহণের পর এলাকায় ফাতেমা প্রি ক্যাডেট কিন্ডার গার্টেন স্কুল নামে একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করেন বীর মুক্তিযোদ্ধা এম ওয়াজেদ আলী। এ প্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ ও পরিচালক পদে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। সেই প্রতিষ্ঠানের সহকারী শিক্ষক নাহিদুজ্জামান প্রধান বাবুকে গুরুতর অপরাধে সহকারী শিক্ষক পদ থেকে চাকরিচ্যুত করেন ওয়াজেদ। যা নিয়ে বেশ বিতর্ক ও সমালোচনার জন্ম দেয়। এতে এম ওয়াজেদ আলীর বিরুদ্ধে ক্ষেপে যান বাবু। এরই জের ধরে শুক্রবার রাতে অজ্ঞাত সন্ত্রাসীদের নিয়ে এম ওয়াজেদ আলীর বাসার সামনে গোপনে অবস্থান নেন নাহিদুজ্জামান প্রধান। রাত ১০টার দিকে শহরের কাজ শেষে বাসার সামনে পৌঁছালে নাহিদুজ্জামান প্রধানসহ বাকী অভিযুক্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে এম ওয়াজেদ আলীকে কুপিয়ে হত্যা করে পালিয়ে যায়। তার চিৎকার স্থানীয়রা এগিয়ে এসে তাকে উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিলে সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে লালমনিরহাট সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। ঘটনা অনুসন্ধানে মাঠে নামে পুলিশ। শনিবার (২১ জানুয়ারি) পাটগ্রাম টিএন উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে নামাজে জানাজা শেষে জগতবেড় ইউনিয়নে নিহতের গ্রামের বাড়ির পারিবারিক কবর স্থানে দাফন করা হয়।

পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক বলেন, নিহতের ছেলে রিফাত হাসান বাদী হয়ে একজনের নামসহ অজ্ঞাতদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। অভিযুক্তদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা অব্যহত রয়েছে।