• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ০২ মে, ২০২৪, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১, ২২ শাওয়াল ১৪৪৫

২২ মণ ওজনের ‘কালু মামা’র দাম ১০ লাখ


সুজন সেন, শেরপুর
প্রকাশিত: জুন ২২, ২০২৩, ১২:৩১ পিএম
২২ মণ ওজনের ‘কালু মামা’র দাম ১০ লাখ

এবার শেরপুরের কোরবানির হাট কাঁপাবে ২২ মণ ওজনের হলস্টেইন জাতের ষাঁড় গরু কালু মামা। ইতিমধ্যে কালু মামার আকৃতি ও সৌন্দর্য সবার নজর কেড়েছে। গরুটির মালিকের দাবি, এটিই শেরপুর জেলার সবচেয়ে বড় আকৃতির গরু। কালু মামার গায়ের রং কালো, উচ্চতা ৫ ফুট আর লম্বায় ৯ ফুট। এর দাম হাঁকা হচ্ছে ১০ লাখ টাকা। শেরপুর পৌরসভার কসবা কাঠগড় এলাকার বাহাদুর ইসলাম গুরুটির মালিক। তিনি পেশায় একজন গাড়ি চালক।

খামারি বাহাদুর ইসলাম বলেন, “করোনার সময় পাবনা ঘুরতে গিয়েছিলাম। সেখানকার গরুগুলা অনেক বড় আকৃতির হয়। তাই সেখান থেকে একটি গরু কেনার খুব ইচ্ছে জাগে। পরে এক বন্ধুর মামা পাবনা থেকে ৮৫ হাজার টাকায় একটি হলস্টেইন জাতের ষাঁড় গরু কিনে দেন। সেখান থেকে গরুটি বাড়িতে নিয়ে আসতে সব মিলে খরচ হয় এক লাখ ১০ হাজার টাকা। প্রায় দুই বছর ধরে গরুটি লালন-পালন করতে গিয়ে মায়া জন্মেছে। প্রতিদিন এর পিছনে একজন লোকের খাটতে হয়। আর প্রতিদিন গরুটি ৬০০ থেকে ৭০০ টাকার খাবার খায়। গোসল দিতে হয় ২-৩ বেলা। এখন পর্যন্ত তার পেছনে খরচই হয়েছে ৪ লাখ টাকা। তাহলে কেনা খরচসহ পড়লো পাঁচ লাখ টাকা। এখন কালু মামাকে বিক্রির জন্য ১০ লাখ টাকা চাচ্ছি। বিভিন্ন জায়গা থেকে কেনার জন্য মানুষ আসছে, দরদাম করছে। এখন পর্যন্ত পাঁচ লাখ টাকা দাম উঠেছে। উপযুক্ত দাম পেলে বিক্রি করবো।”

বাহাদুর আরও বলেন, “সম্পূর্ণ দেশীয় খাবার খাইয়ে লালন-পালন করা হয়েছে ষাঁড়টি। ভুট্টা, জব, কাঁচা ঘাস, কালাইয়ের ভুষি, গমের ভুষি এবং ধানের খড় খাইয়ে বড় করেছি। সঙ্গে আরও বিভিন্ন রকমের ফল খাইয়েছি। এটি আমার আদরের গরু। তাই যখন যা হাতের কাছে পেয়েছি তাই খাইয়েছি। তার পছন্দের ফল আঙ্গুর।”

ষাঁড় গরুটির নাম কালু মামা রাখার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, “এই ষাঁড় গরুটি পছন্দ করে এক বন্ধুর মামা কিনে দিয়েছিলেন। আর ষাঁড়টির রং ছিলো কালো। তাই দুইজন মিলে ষাঁড়টির নাম রেখেছি কালু মামা।”

বড় আকৃতির এই ষাঁড় নিয়ে উৎসাহী আশপাশের এলাকার মানুষও। শেরপুর শহর থেকে দেখতে আসা জিহাদ বলেন, “আমি কখনও এত বড় ষাঁড় দেখিনি। শহরের মধ্যেই এত বড় ষাঁড় রয়েছে তা ফেসবুকে দেখে এখন তা বাস্তবে দেখতে আসলাম। একটা সেলফিও নিলাম।”

সদর উপজেলার চরশেরপুর এলাকা থেকে আসা রফিক বলেন, “সব সময় টিভিতে দেখি, বড় বড় গরু কোরবানির হাটে ওঠে। আজ বাস্তবে দেখলাম।”

বড় ষাঁড়ের কথা শুনে দরদাম করতে আসছেন পাইকাররা। গরুর পাইকার হাসান বেলাল জানান, “ষাঁড়টি কেনার জন্য এসেছি। দরদাম করে যদি নিতে পারি তাহলে ঢাকায় নিয়ে বিক্রি করবো।”

জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ড. মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, কোরবানির জন্য শেরপুরের অনেক খামারি বড় বড় গরু তৈরি করেছেন। অনেকের বাড়ি থেকেই গরু বিক্রি হয়ে যাচ্ছে। এবার গরুর যে বাজার রয়েছে এতে খামারিরা বেশ লাভবান হবেন।

ড. মোস্তাফিজুর রহমান আরও বলেন, প্রাণিসম্পদ বিভাগ থেকে খামারিদের প্রশিক্ষণসহ বিভিন্নভাবে সহযোগিতা করা হচ্ছে । ফলে প্রাকৃতিক উপায়ে খামারিরা গরু মোটাতাজাকরণ করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।

জেলায় এবার মোট ২০টি কোরবানির হাট বসবে। পাশাপাশি পাঁচটি অনলাইন প্লাটফর্ম থাকবে। প্রতিটা হাটে প্রাণিসম্পদ বিভাগের পক্ষ থেকে একটি করে ভ্যাটেনারি টিম নিয়োজিত থাকবে।

Link copied!