• ঢাকা
  • রবিবার, ০৬ জুলাই, ২০২৫, ২১ আষাঢ় ১৪৩২, ১০ মুহররম ১৪৪৬

সনদ বাণিজ্যে কোটিপতি সহকারী শিক্ষক


রাজশাহী প্রতিনিধি
প্রকাশিত: আগস্ট ২৮, ২০২২, ০১:২৫ পিএম
সনদ বাণিজ্যে কোটিপতি সহকারী শিক্ষক

রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার জোতকার্তিক বিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সাবেক এক সহকারী শিক্ষক সনদ বাণিজ্য করে হয়েছেন কোটিপতি। সাবেক ওই সহকারী শিক্ষকের নাম আবুল হাসনাত মো. কামরুজ্জামান মুকুল (৪৬)। কিন্তু শেষ রক্ষা হলো না। ধরা পড়লেন দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) জালে।

এক কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮৪ টাকা অবৈধ সম্পদ অর্জনের দায়ে ২৫ আগস্ট তার বিরুদ্ধে মামলা করেছে দুদক। দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ে এই মামলা করা হয়েছে। মামলাটির বাদী সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক আমির হোসাইন।

অভিযুক্ত আবুল হাসনাত মো. কামরুজ্জামান রাজশাহীর চারঘাট উপজেলার নন্দনগাছি জোতকার্তিক এলাকার মৃত আবুল হোসেনের ছেলে। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে রাজশাহী নগরীর দড়িখড়বোনা এলাকায় বসবাস করেন। মো. কামরুজ্জামান চারঘাটের জোতকার্তিক বিএন উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক ছিলেন।

রোববার (২৮ আগস্ট) সকালে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন মামলার বাদী আমির হোসাইন। তিনি বলেন, “সাবেক সহকারী শিক্ষক মো. কামরুজ্জামান মুকুলের বিরুদ্ধে সনদ বাণিজ্য করে রাজশাহী মহানগরীতে এক দশকে কোটি টাকার সম্পদের মালিক হওয়ার অভিযোগ ছিল।
অনুসন্ধান শেষে দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের সাবেক উপসহকারী পরিচালক সুদীপ কুমার চৌধুরী প্রতিবেদন দাখিল করেন।”

গত বছরের ৪ জানুয়ারি দুদকে দাখিল করা সম্পদ বিবরণীতে ওই শিক্ষক উল্লেখ করেন, তার নামে ৪৬ লাখ ৫০ হাজার ৯০০ টাকা মূল্যের স্থাবর ও ১৬ লাখ ৩৩ হাজার ৫০ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ রয়েছে। কিন্তু তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণী যাচাইয়ে গিয়ে ওই শিক্ষকের নামে ১ কোটি ৭২ লাখ ১২ হাজার ৪৪৭ টাকা মূল্যের স্থাবর ও ৪২ লাখ ৩৫ হাজার ৫০২ টাকা মূল্যের অস্থাবর সম্পদ পায় দুদক। ১ কোটি ৫১ লাখ ৬৩ হাজার ৯৯৯ টাকা মূল্যের সম্পদের তথ্য গোপন করেন ওই শিক্ষক।

অন্যদিকে, মো. কামরুজ্জামান মুকুলের আয়কর নথি ও অন্যান্য রেকর্ডপত্র অনুযায়ী তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মোট মূল্য ২ কোটি ১৪ লাখ ৪৭ হাজার ৯৪৯ টাকা। তবে ঋণ পাওয়া যায় ১৩ লাখ ৭২ হাজার ৩৯৯ টাকা। ঋণ বাদে তার স্থাবর-অস্থাবর সম্পদের মূল্য দাঁড়ায় ২ কোটি ৭৫ হাজার ৫৫০ টাকা। যদিও ওই শিক্ষকের বৈধ আয় ২৯ লাখ ৫৯ হাজার ৩৭২ টাকা। পারিবারিক ব্যয় ১৩ লাখ ৩৭ হাজার ৮০৬ টাকা বাদে তার বৈধ সঞ্চয়ের পরিমাণ মাত্র ১৬ লাখ ২১ হাজার ৫৬৬ টাকা। তার ১ কোটি ৮৪ লাখ ৫৩ হাজার ৯৮৪ টাকা মূল্যের সম্পদের মালিকানা অর্জন জ্ঞাত আয়ের উৎসের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ, যা দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪-এর ২৭(১) ধারার শাস্তিযোগ্য অপরাধ।

এদিকে, তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে একই অপরাধে পৃথক মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানিয়েছেন মামলার বাদী আমির হোসাইন।

Link copied!