চাহিদামতো বকশিশ না পেয়ে অক্সিজেন মাস্ক খুলে কিশোরকে হত্যার অভিযোগ উঠেছে হাসপাতালের এক কর্মচারীর বিরুদ্ধে।
মঙ্গলবার (৯ নভেম্বর) রাতে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সার্জারি বিভাগে এ ঘটনা ঘটে বলে মৃত কিশোরের স্বজনদের অভিযোগ।
এদিকে এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করেছে।
নিহত কিশোরের নাম বিকাশ চন্দ্র কর্মকার (১৫)। আর অভিযুক্ত আসাদুজ্জামান শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের খণ্ডকালীন কর্মচারী। ঘটনার পর থেকে তিনি পলাতক।
গণমাধ্যমকে তদন্ত কমিটি গঠনের খবরটি নিশ্চিত করেছেন হাসপাতালের উপপরিচালক আবদুল ওয়াদুদ।
নিহত বিকাশের পরিবারের অভিযোগ, গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার পুঁটিমারি গ্রামে তাদের বাড়ি। উপজেলার একটি বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী সে। অভাবের সংসারে লেখাপড়ার পাশাপাশি একটি ওয়ার্কশপে কাজ করত বিকাশ। ওয়ার্কশপ থেকে বাড়ি ফেরার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত হয় সে। পরে তাকে সাঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নেওয়া হয়। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিকাশকে শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান তার স্বজনরা।
বিকাশের সঙ্গে থাকা তার ছোট চাচা শচীন চন্দ্র কর্মকার দাবি করেন, দুর্ঘটনায় আহত বিকাশের শ্বাসকষ্ট হচ্ছিল। এ কারণে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক বিকাশের জন্য মুখে মাস্ক লাগিয়ে অক্সিজেনের ব্যবস্থা করেন। এরপর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কার্যক্রম শেষে অক্সিজেন সিলিন্ডারসহ তাকে ট্রলিতে করে হাসপাতালের তৃতীয় তলায় নেওয়া হয়। হাসপাতালের কর্মচারী আসাদুজ্জামান ট্রলি ঠেলে লিফটে করে তৃতীয় তলায় পৌঁছে দেন। এরপর তিনি ২০০ টাকা বকশিশ দাবি করেন। আসাদুজ্জামানকে ১৫০ টাকা দেওয়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই কর্মচারী রোগীর মুখ থেকে মাস্ক খুলে ফেলেন। ছটফট করতে করতে তার ভাতিজা বিকাশ মারা যায়।
এ বিষয়ে হাসপাতালের উপ-পরিচালক আবদুল ওয়াদুদ গণমাধ্যমকে বলেন, “চার সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এর প্রধান করা হয়েছে ইমার্জেন্সি মেডিকেল অফিসার মনিরুজ্জামানকে।”
পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে কমিটিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি।