• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২২ অক্টোবর, ২০২৪, ৬ কার্তিক ১৪৩১, ১৮ রবিউস সানি ১৪৪৬

নুয়ে পড়া ধান নিয়ে বিপাকে ‍কৃষক


বগুড়া প্রতিনিধি
প্রকাশিত: মে ৯, ২০২২, ০৯:২৬ এএম
নুয়ে পড়া ধান নিয়ে বিপাকে ‍কৃষক

বগুড়ায় প্রায় দুই লাখ হেক্টর জমির পাকা ধান নিয়ে বিপাকে পড়েছেন কৃষক। শ্রমিক সংকট আর ঝড়-বৃষ্টিতে জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় পাকা ধান ঘরে তোলা নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটাতে হচ্ছে তাদের। এদিকে গত কয়েক বছরের তুলনায় এ বছর শ্রমিকদের মজুরি অনেক বেশি। ধান কাটা শ্রমিকরা বলছেন, শুকনো জমির চেয়ে জলাবদ্ধ জমির ধান কাটতে সময় বেশি লাগে, ফলে দিন শেষে কাজ করে পোষাতে পারেন না। এ ছাড়া জলাবদ্ধ জমিতে কাজ করতে কষ্ট বেশি। অন্যদিকে ধানকাটা এসব শ্রমিকের মজুরি বেশি হওয়ায় কৃষকদের মধ্যে উৎপাদন খরচ তোলা নিয়ে দেখা দিয়েছে শঙ্কা।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, বগুড়া জেলায় এবার ১ লাখ ৮৭ হাজার ৫১০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করা হয়েছে। এর মধ্যে এখন পর্যন্ত ১৩ শতাংশ জমির ধান কেটে ঘরে তুলতে পেরেছেন কৃষক। এবার ধানের উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৮ লাখ ৭ হাজার ৬২৩ মেট্রিক টন।

জয়পুরহাটের কালাই থানা থেকে আসা একটি ২৫ জনের একটি দলের সরদার আলম হোসেন বলেন, “প্রতিবছর তিন থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকায় এক বিঘা জমির ধান কাটতাম, এতে তেমন কষ্ট ছিল না। ধান জমিতে পড়ে গিয়েছে এ বছর প্রতি বিঘায় ৬ থেকে ৭ হাজার টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। তবু কষ্ট হচ্ছে বেশি।”

জমির মালিক সুকুমার বলেন, “শ্রমিক না পাওয়ায় ছেলেকে নিয়ে নিজেই ধান কাটছি। দ্রুত ধান ঘরে তুলতে না পারলে জমিতে চারা গজাচ্ছে। একদিকে ধান নষ্ট, অন্যদিকে খড়ও নষ্ট হচ্ছে। প্রতি বিঘা জমিতে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হচ্ছে।”

জমির মালিক ইয়াছিন আলী জানান, “প্রতি বিঘায় যেখানে ধান হয় ২৫ থেকে ২৬ মণ, সেখানে জমির ধান ঝড়-বৃষ্টিতে পড়ে গিয়ে ধান হচ্ছে ১৫ থেকে ১৬ মন। ফলন ঠিকই হয়েছিল, কিন্তু ঝড়-বৃষ্টিতে পড়ে গিয়ে জমিতে ধান নষ্ট হয়েছে। শ্রমিক সংকটে ধান কাটতে না পারায় জমিতেই ধানের চারা গজিয়েছে।”

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক (শস্য) এনামুল হক বলেন, “বৃষ্টিতে ধানের জমির কী পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, এটা আমরা সংগ্রহ করছি। তবে ধারণা করা হচ্ছে, ৫ থেকে ১০ শতাংশ ফলন কম আসতে পারে। কারণ, ঝড়-বৃষ্টির ফলে পাকা ধান ঝরে পড়েছে আবার জমির পাকা ধানগুলো শুয়ে পড়েছে। পানিতে ডুবে আছে। এই ধানগুলো থেকে শিকড় গজাচ্ছে।”

এনামুল হক আরও বলেন, “ধান পেকে যাওয়ায় একসঙ্গে সবারই শ্রমিকের চাহিদা দেখা দিয়েছে। যে কারণে এখন শ্রমিক কিছুটা সংকট। তবে চলতি সপ্তাহের মধ্যে সুনামগঞ্জসহ আরও অনেক জায়গাতেই ধান কাটা শেষ হয়ে যাবে তখন কিন্তু ওই শ্রমিকদের অনেকেই এদিকে আসবে। সুতরাং বলা যেতে পারে আগামী সপ্তাহ থেকে শ্রমিক সংকট থাকছে না। ফলে এখন যে শ্রমিকদের মজুরি একটু বেশি তখন কিছুটা কমবে।”

Link copied!