• ঢাকা
  • শুক্রবার, ২৪ জানুয়ারি, ২০২৫, ১০ মাঘ ১৪৩০, ২৪ রজব ১৪৪৬

শুভ জন্মদিন মুস্তাফা মনোয়ার


আঁখি সিদ্দিকা
প্রকাশিত: সেপ্টেম্বর ১, ২০২১, ১০:৪৬ এএম
শুভ জন্মদিন মুস্তাফা মনোয়ার

শিল্পে ব্যতিক্রম ধারার নাম মুস্তাফা মনোয়ার। 

জন্ম ১৯৩৫ সালের ১ সেপ্টেম্বর মনোহরপুর গ্রামে। এটি ঝিনাইদহ জেলার শৈলকুপা থানার অন্তর্ভুক্ত। বাবা কবি গোলাম মোস্তফা, আর স্নেহময়ী মায়ের নাম জামিলা খাতুন, যাঁকে হারান খুব ছোট বয়সেই। 

সে সময় বাংলা প্রকৃতির যে সজীবতা, তার অপারতা তিনি দু’হাতে গ্রহণ করলেন কৈশোরেই। বড় হয়ে যেহেতু শিল্পী হবেন, সুতরাং সেই নবীন শিল্পমন খুঁজে নিতে থাকল, প্রকৃতি, নদী, সবুজ শস্যখেত, সঙ্গে কৈশোরের দুরন্তপনা। এটা পরবর্তীকালে এদেশে তাঁর যুগান্তকারী কর্ম পাপেটে প্রভাব ফেলে। 

তিনি আবহমান বাংলা থেকে প্রাপ্ত সৌন্দর্য তাতে প্রয়োগ করেন। এর ফলে প্রাকৃতিক দৃশ্যের সঙ্গে সঙ্গে বড় পুকুরে, বটগাছে আর নদীতে, বিলে হরিয়াল, শামুকভাঙা, চেগাপাখি, পানকৌড়ি, হাঁস আর লম্বা গলার বক দেখার স্মৃতি তাঁর আজও চোখে ভাসে। যে দেখার অভিজ্ঞতাকে তিনি তাঁর পাপেটে খুব বিস্তারে এবং বিশ্বাসে প্রয়োগ করে ‘ফান্দে পড়িয়া বগা কান্দেরে’ গানটির কাহিনীরূপ উপস্থাপন করেছেন।

বাংলাদেশে পাপেট তৈরি ও পাপেট প্রদর্শনের পথপ্রদর্শক তিনি। কৈশোরে দেখা পুতুল নাচ নতুনরূপে ধরা দেয় পাপেটে। ছাত্র থাকাকালীন এ নিয়ে তিনি বিস্তর অভিজ্ঞতা অর্জন করেছিলেন। তখন তিনি ভারতের বিভিন্ন প্রদেশের পাপেট দেখেন।

পরবর্তী সময়ে টেলিভিশনে কাজ করার সুবাদে পাপেট প্রদর্শনের বিরাট এক ক্ষেত্র পেয়ে গেলেন তিনি। বাংলাদেশ টেলিভিশনে ‘আজব দেশে’ অনুষ্ঠানে তিনি ‘বাঘা’ ও ‘মেনি’ নামে দুই চরিত্রের জন্ম দেন, শুরু করেন পাপেটের প্রদর্শনী। এ প্রদর্শনী বা আয়োজন বহু বছর দর্শকদের মনে থেকে গেছে। তবে পাপেটের মাধ্যমে শুধু শিশুশিক্ষা নয়, তুলে আনতেন সমসাময়িক নানা ঘটনা। এখানে ’৬৭-’৬৮ সালের দিকের একটি ঘটনা উল্লেখ করা যায়। 

তিনি পাপেটের মাধ্যমে বাংলাদেশের সংস্কৃতিবিরোধী পাকিস্তানি মনোভাবকে ব্যঙ্গ করেছেন বহুভাবে। পাপেট এদেশে একটি ব্যতিক্রমী উপস্থাপনা হিসেবে উপস্থিত হয় দর্শকের সামনে। এছাড়া নতুন কুঁড়িসহ নানা প্রতিভাবিকাশ এবং শিশুদের মননশীল আয়োজনের পরিকল্পক ছিলেন মুস্তাফা মনোয়ার। টেলিভিশনে নতুন নতুন অনুষ্ঠান নির্মাণে তিনি ছিলেন সিদ্ধহস্ত। 

তাঁর প্রযোজিত শেক্সপিয়র নাটক থেকে মুনীর চৌধুরীর অনুবাদে নাটক ‘মুখরা রমণী বশীকরণ’ এবং রবীন্দ্রনাথের ‘রক্তকরবী’ দারুণ সাড়া ফেলে। নাটক দুটি যুক্তরাজ্যের গ্রানাডা টিভির ওয়ার্ল্ড হিস্ট্রি অব টিভি ড্রামা’র জন্য মনোনীত হয়..!

শুভ জন্মদিন স্যার
১ সেপ্টেম্বর, ২০২১।

Link copied!