• ঢাকা
  • বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ, ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ১৭ রমজান ১৪৪৫

ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু


পি আর প্ল্যাসিড
প্রকাশিত: মার্চ ১৭, ২০২২, ০৩:০৩ পিএম
ইতিহাসের মহানায়ক বঙ্গবন্ধু

আজ ১৭ মার্চ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মদিন। 

গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়ায় আমাদের জাতিসত্তার প্রতীক হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান নামের এই মহান নেতার জন্ম হয়েছে শত বছর আগে। জন্মের পর থেকে তিনি সেই অজপাড়াগাঁয়েই বেড়ে উঠেছেন। পড়ালেখা করেছেন সেখানকারই একটি মিশনারি স্কুলে। শৈশব থেকেই তিনি ন্যায়নীতি আর সত্যের জন্য লড়াই করেছেন বরাবর। তিনি ভেবেছেন নির্যাতিত মানুষের ভালো-মন্দ আর স্বার্থের কথা। একসময় রাজনীতিবিদদের হাত ধরে হয়ে উঠেছেন রাজনীতিবিদ। দেশের মানুষের স্বার্থ রক্ষার্থে কাজ করতে করতেই তিনি যখন সোচ্চার হয়ে উঠেছেন সর্বত্র, তখন দেশের মানুষ ভালোবাসা আর বিশ্বাসের কারণে তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধি দিয়েছেন। 

বঙ্গবন্ধু দেশের মানুষের এই ভালোবাসার কথা কখনো ভুলে যাননি। সর্বদাই তাদের অধিকার আদায়ের কথা বলেছেন, রাজপথে থেকেছেন তাদের দাবি আদায়ের জন্য। এমনকি অধিকার আদায়ের জন্য যখন মিটিং-মিছিল করেছেন, তখন পাকিস্তানের শাসকদের রোষানলেও পড়েছেন। জীবনের অধিকাংশ সময় তাঁকে জেলে কাটাতে হয়েছে। তারপরও তিনি অন্যায়ের সঙ্গে আপস করেননি। মাথা নত করেননি পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠীর কাছে। 

একসময় পূর্ব বাংলা (পূর্ব পাকিস্তানের) জনগণের দাবি আদায়ের আন্দোলন গিয়ে রূপ নেয় স্বাধীনতা আন্দোলনে, অতঃপর স্বাধীনতাযুদ্ধের। যুদ্ধ বাধে একই পাকিস্তানের পূর্ব আর পশ্চিম দুই অংশের মানুষের মধ্যে জাতিগত বৈষম্য নিরসনের জন্য। সেই যুদ্ধে হেরে যায় পাকিস্তানি সেনারা। পরাজয় বরণ করে পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী। নতুন মানচিত্রের এক ভূখণ্ডের নাম বাংলাদেশ। আমরা সেই বাংলাদেশের বাঙালি। আমরা বাংলায় কথা বলি, বাংলায় লেখি, বাংলায় পড়ি। বাংলায় গান গাই। এই বাংলা ভাষার জন্যই হয়েছিল স্বাধীনতাযুদ্ধের  সূত্রপাত। আর তৎকালে বাংলাকে মায়ের ভাষা হিসেবে স্বীকৃতি তথা রাষ্ট্রভাষার মর্যাদার লড়াইয়ে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান ছিল বাঙালির মুখে মুখে। সবকিছুর জয় ছিনিয়ে এনেছিলেন যে ব্যক্তির নেতৃত্বে, তাঁর নাম শেখ মুজিবুর রহমান।

বঙ্গবন্ধুর জন্মদিনে আবারও শুভেচ্ছা।
 
ইতিহাসের স্বর্ণাক্ষরে লেখা থাকবে তাঁর নাম, 
‘যতকাল রবে পদ্মা যমুনা গৌরী মেঘনা বহমান
ততকাল রবে কীর্তি তোমার শেখ মুজিবুর রহমান।’
—অন্যদাশঙ্কর রায়।

বিবিসির এক পরিসংখ্যানে দেখা যায় বাঙালি জাতি তাঁর মৃত্যুর পরও আরেকবার কৃতজ্ঞতাস্বরূপ স্বীকৃতি দিয়েছে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি হিসেবে, যা চাইলেই কখনো বাংলাদেশের মানুষ কেন, বিশ্বের কোনো মানুষই অস্বীকার করতে পারবে না। বিশেষ করে যারা এই বাংলা আর বাংলাদেশের কথা জানে, তারা।

বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে ১৯৭১ সালে বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে। তার আগে আমাদের এই দেশ ছিল পাকিস্তানের অংশ। তখন এই অংশকে পূর্ব বাংলা, পূর্ব পাকিস্তান, বঙ্গদেশ বলেও ডাকা হতো। যেহেতু তাঁর নেতৃত্বে আমরা একটি স্বাধীন দেশ পেয়েছি, তাই তাঁকে আমাদের সম্মানের সঙ্গে স্মরণ করতেই হয়। 

যারা বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে, তাদের সম্পর্কে আলাদা করে কিছু বলা দরকার পড়ে না। কারণ, এই দেশের জন্মকাল থেকেই কতিপয় লোক স্বাধীনতাযুদ্ধের বিপক্ষে অর্থাৎ পাকিস্তানিদের পক্ষে কাজ করেছে। তাদেরই বংশধরেরা যে এখনো সরব এই বাংলায়। তবে বঙ্গবন্ধুর নাম উচ্চারণ এই বাংলায় করতেই হবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু। জয় হোক বাংলার মেহনতি মানুষের।

লেখক : জাপানপ্রবাসী লেখক, সাংবাদিক।
 

Link copied!