• ঢাকা
  • বুধবার, ২০ আগস্ট, ২০২৫, ৫ ভাদ্র ১৪৩২, ২৫ সফর ১৪৪৬

সৌদি আরবে ‘বড় সমস্যায়’ প্রবাসী বাংলাদেশিরা


সংবাদ প্রকাশ ডেস্ক
প্রকাশিত: এপ্রিল ২৫, ২০২৫, ০৩:৩৩ পিএম
সৌদি আরবে ‘বড় সমস্যায়’ প্রবাসী বাংলাদেশিরা
ছবি : সংগৃহীত

দেশের অর্থনীতিতে প্রবাসীদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকলেও সময়ের সঙ্গে বাড়ছে প্রবাসীদের সমস্যা। দালাল ও অসাধু চক্রের খপ্পরে প্রবাসীরা বিশ্বের বিভিন্ন দেশে গিয়ে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন তারা।

বিশেষ করে সৌদি শ্রমবাজারে প্রবাসী বাংলাদেশিরা বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। মধ্যপ্রাচ্যের এই দেশে বাংলাদেশ থেকে সর্বোচ্চ সংখ্যক প্রবাসীর বসবাস। এই ধারা সময়ের সঙ্গে বাড়ছে। দেশটিতে প্রবাসী শ্রমিকের সংখ্যা বাড়লেও কমছে রেমিট্যান্স প্রবাহ, যার প্রধান কারণ ‘ওয়ার্ক পারমিট ও আকামা’ সমস্যা।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সৌদি আরব শ্রমবাজারে বাংলাদেশি প্রবাসী কর্মীদের সব থেকে বড় সমস্যা ওয়ার্ক পারমিট। দালালরা কাজের কথা বলে দেশটিতে নিলেও কাজ দিতে ব্যর্থ হয় বা ভুক্তভোগী প্রবাসীকে কাজ খোঁজার জন্য বলে থাকে। এ ছাড়া এক বছরের আকামার কথা মুখে বললেও দিয়ে থাকেন তিন মাস। ফলে নির্ষিষ্ট সময় পর প্রবাসীরা অবৈধ হয়ে যান। অনেকে বাড়ি থেকে আকামা করতে পারলেও অধিকাংশ প্রবাসী অর্থের অভাবে আকামা করতে ব্যর্থ হন। পরে সৌদি আরবের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেকে কাজ করার চেষ্টা করেন। কিন্তু একসময় তারা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আটক হয়ে দেশে ফিরতে বাধ্য হন। এ ছাড়া অনেকে নিজ উদ্যোগে দেশে ফিরে আসেন।

জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর তথ্যমতে, চলতি বছরে এখন পর্যন্ত সৌদি আরবে গেছেন ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭৬ জন, গত বছর দেশটিতে গেছেন ৬ লাখ ২৮ হাজার ৫৬৪ জন এবং ২০১৩ সালে গেছেন ৪ লাখ ৯৭ হাজার ৬৭৪ জন বাংলাদেশি। দেশটিতে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী গেলেও ফিরে আসার হারটাও অনেক বেশি। ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের তথ্যমতে, সৌদি আরব থেকে ২০২৪ সালে আউটপাসে দেশে ফেরত পাঠানো হয়েছে ৫০ হাজার ২৩১ জনকে। আর ২০২৩ সালে ফেরত আসেন ৫৮ হাজার ৮৯৭ প্রবাসী। এই প্রবাসীদের অধিকাংশই অবৈধ হয়ে দেশটিতে ছিলেন।

জানা যায়, প্রতিদিন শত শত প্রবাসী আকামা-সংকটের সমাধানে সৌদি আরবে বাংলাদেশের দূতাবাসে ভিড় করেন। কিন্তু দূতাবাস থেকে পর্যাপ্ত সহযোগিতা মেলে না এমনটি অভিযোগ করেন। শ্রমিকদের প্রধান অভিযোগ, ঢাকা থেকে রিক্রুটিং এজেন্সি ও তাদের দালালরা প্রতারণা করে শ্রমিকদের সৌদিতে পাঠান। এখানে ১ হাজার বা তারও বেশি রিয়ালের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও দেওয়া হয় ৫০০ কিংবা ৭০০ রিয়াল। সৌদি আরবের প্রবাসী বাংলাদেশি শ্রমিকদের বড় একটি অংশ এখন অবৈধ। এ দেশের পুলিশের অভিযানে প্রায়ই বাংলাদেশি গ্রেপ্তার হচ্ছেন।’

সৌদি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক আবাসন, শ্রম ও সীমান্ত আইন লঙ্ঘনের অভিযোগে দেশটিতে প্রতিনিয়ত গ্রেপ্তার অভিযান চালানো হয়। এসব অভিযানে বাংলাদেশিরা নিয়মিত আটক হচ্ছেন। আকামা মেয়াদ না থাকা, শ্রম আইন লঙ্ঘনের জন্য বাংলাদেশিদের গ্রেপ্তার করা হয়। পরে সাজা শেষে অনেককে দেশে পাঠানো হয়।

অভিবাসন বিশেষজ্ঞদের মতে, সৌদি শ্রমবাজার অবৈধ শ্রমিকের সংখ্যা বাড়ছে। একইসঙ্গে বাড়ছে জেলে যাওয়া শ্রমিকের সংখ্যা। এর নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে শ্রমবাজারটিতে। দেশটি থেকে বাংলাদেশিদের ফেরত পাঠানো হচ্ছে। আকামা না থাকা, প্রতারিত হয়ে জেল খেটে প্রবাসীরা দেশে ফিরছেন। এই অবস্থা থেকে উত্তোরণে সরকারকে উদ্যোগী হতে হবে। প্রবাসীদের স্বার্থ সুরক্ষায় আরো বেশি যত্নশীল হওয়া প্রয়োজন।’ 

Link copied!