• ঢাকা
  • শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২৪, ২৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১২ জমাদিউস সানি ১৪৪৬

‘হত্যার পর শুধু মাকে ফোন করেন মাসুম’


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মার্চ ২৮, ২০২২, ০৪:৪১ পিএম
‘হত্যার পর শুধু মাকে ফোন করেন মাসুম’
ছবি: সংগৃহীত

ঢাকার শাহজাহানপুরে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু ও কলেজছাত্রী সামিয়া আফরান প্রীতিকে হত্যাকাণ্ডের পর মাসুম নিজের ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি হাতিরঝিলে নষ্ট করেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেন বগুড়া সদর পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) খোরশেদ আলম।

এর আগে রোববার (২৭ মার্চ) সকাল সোয়া ৭টার দিকে শহরের চারমাথা বাস টার্মিনালের পাশে খাজা আবাসিক হোটেলর দ্বিতীয় তালার ১০১ নম্বর কক্ষ থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়।

কিলার মাসুমের গ্রেপ্তার অভিযানে নেতৃত্বে থাকা পুলিশ পরিদর্শক তাজমিলুর রহমান বলেন, “হাতকড়া লাগানোর পর তিনি (মাসুম) নিজে থেকেই জোড়া খুনের বর্ণনা দেন। এর আগেও তিনি ঢাকাতে একজনকে গুলি করে হত্যা করেন বলে পুলিশকে জানান।”

পুলিশ পরিদর্শক আরও বলেন, “এছাড়া তার নামে ঢাকার বিভিন্ন থানায় পাঁচটি চাঁদাবাজি মামলা রয়েছে। জোড়া খুনের পর ওই রাতেই ব্যবহৃত মোবাইল ফোন ভেঙে সিমকার্ডসহ হাতিরঝিলে ফেলে দেন তিনি। পরদিন তিনটি নতুন মোবাইল সেট কেনেন এবং তিনটি সিম কার্ড সংগ্রহ করেন। যার একটি নম্বর মাসুম ব্যবহার শুরু করেন। এর আগে গত শুক্রবার ঢাকাতেই পালিয়ে থাকার পর শনিবার সন্ধ্যায় বাসযোগে বগুড়ার উদ্দেশে রওনা দেন। বগুড়া পৌঁছার আগেই রাত সাড়ে ১০টার দিকে তিনি মোবাইল ফোনে তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন। এরপর মাসুম মোবাইল ফোনে আর কারও সঙ্গে যোগাযোগ করেননি।”

এ বিষয়ে বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সেলিম রেজা বলেন, “ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়। আমাদের কাছে শনাক্ত করার জন্য শুধু খাজা নামটি ছিল। তবে দ্রুত সময়ে তার অবস্থান আমরা অ্যানালগভাবে শনাক্ত করি ও গ্রেপ্তারে সক্ষম হই।”

রাজধানীতে আওয়ামী লীগ নেতা জাহিদুল ইসলাম টিপু হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার মো. মাসুম ওরফে ‘কিলার’ মাসুমকে সাতদিনের রিমান্ডে পেয়েছে পুলিশ।

সোমবার (২৮ মার্চ) দুপুরে গ্রেপ্তার মাসুমকে আদালতে উপস্থিত করা হলে ঢাকার অতিরিক্ত মুখ্য মহানগর হাকিম তোফাজ্জল হোসেন সাতদিনের রিমান্ডের আদেশ দেন।

এর আগে রোববার (২৭ মার্চ) গ্রেপ্তারের বিষয়টি নিশ্চিত করে ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে এক সংবাদ সম্মেলনে ডিবির অতিরিক্ত কমিশনার এ কে এম হাফিজ আক্তার জানান, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মাসুম জানিয়েছেন হত্যাকাণ্ডের তিন দিন আগে টার্গেট ব্যক্তির (টিপু) নাম পান তিনি। মাসুম টিপুকে সরাসরি গুলি করে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান। গোয়েন্দা বিভাগ জানিয়েছে, হত্যাকাণ্ডের পর মাসুম দেশ ত্যাগ করতে সীমান্ত এলাকায় চলে গিয়েছিল।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতেই রোববার সকাল সোয়া ৭টার দিকে বগুড়া জেলা শহরের চারমাথা বাস টার্মিনালের পাশে খাজা আবাসিক হোটেলের দ্বিতীয় তালার ১০১ নম্বর কক্ষ থেকে মাসুমকে গ্রেপ্তার করা হয়। মাসুম ওই হোটেলে ‘মামুন’ পরিচয়ে রুম ভাড়া নিয়েছিলেন।

বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাতে দুর্বৃত্তদের গুলিতে নিহত হন টিপু। জাহিদুল ইসলাম টিপু মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক। এ সময় সামিয়া আফরিন প্রীতি (২৪) নামের একজন রিকশা আরোহী নিহত হয়েছেন। নিহত প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজের ছাত্রী ছিলেন বলে জানা গেছে। এ সময় গুলিবিদ্ধ হন টিপু গাড়িচালক মুন্না। তিনি বর্তমানে ঢামেকে চিকিৎসাধীন।

পরদিন সকালে শাজাহানপুর থানায় মামলা করেন নিহতের স্ত্রী ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১১, ১২, ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর ফারহানা ইসলাম ডলি। এ মামলায় তিনি কারো নাম উল্লেখ করেননি।

শাহজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনির হোসেন মোল্ল্যা জানান, নিহত জাহিদুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী ফারহানা ইসলাম ডলি শাজাহানপুর থানায় মামলা করেছেন।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!