রাষ্ট্রবিরোধী অপপ্রচার ও নাশকতায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগে পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। গ্রেপ্তাররা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্লোজড গ্রুপের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রমের পরিকল্পনা করত বলে জানা গেছে।
শুক্রবার (১০ ডিসেম্বর) সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানান র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন। রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাব মিডিয়া সেন্টারে এই সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
এর আগে বৃহস্পতিবার (৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর স্বামীবাগের মিতালী স্কুলের গলিতে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে র্যাব-৩। এ সময় তাদের কাছ থেকে ল্যাপটপ, পোর্টেবল হার্ডডিস্ক এবং দেশবিরোধী ও উসকানিমূলক বিভিন্ন লিফলেট জব্দ করা হয়।
গ্রেপ্তাররা হলেন চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার মো. আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ (২৯), রংপুরের পীরগাছা উপজেলার মো. ওয়ায়েজ কুরুনী (২৭), সিরাজগঞ্জ সদর উপজেলার মো. তাওহীদুল ইসলাম (২৬), ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার মো. গাজী সাখাওয়াত (২৯) ও সাতক্ষীরা সদর উপজেলার মো. হাবিবুর রহমান (৩০)।
গ্রেপ্তাররা প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে রাষ্ট্রবিরোধী চক্রান্ত ও নাশকতায় উসকানিমূলক কর্মকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে বলে জানায় র্যাব।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, গ্রেপ্তারদের কাছ থেকে জব্দকৃত আলামত বিশ্লেষণ ও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা রাষ্ট্রের উন্নয়নের গতি ধারাকে বানচাল ও নস্যাৎ করার জন্য এবং রাষ্ট্রের শান্তি-শৃঙ্খলায় বিঘ্ন ঘটাতে সরকারের বিরুদ্ধে নানা প্রকার অপপ্রচার ও ষড়যন্ত্র করে আসছিল। পাশাপাশি তারা সরকারি সম্পদ ও জনগণের জানমালের ক্ষতি করার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন পরিকল্পনা করত। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অপপ্রচারে লিপ্ত ছিল।
র্যাবের এই পরিচালক আরও জানান, গ্রেপ্তাররা বিভিন্ন মাধ্যমে দেশের বাইরে মিথ্যা তথ্য প্রদান এবং অপপ্রচার চালিয়ে দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করার চেষ্টা করত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে তারা দেশের বাইরে বিভিন্ন সংস্থার কাছে কল্পিত এবং বানোয়াট তথ্য পাঠাত। সাম্প্রতিক সময়ে ‘নিরাপদ সড়ক চাই’ আন্দোলনকে পুঁজি করে তারা তাদের অসৎ উদ্দেশ্য চরিতার্থ করারও অপচেষ্টা চালায়। আন্দোলনকে উস্কে দিয়ে তারা দেশের মধ্যে অরাজকতা সৃষ্টির অপচেষ্টা করে।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন আরও জানান, গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তারা দীর্ঘদিন ধরে রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ডে জড়িত ছিল। তারা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ক্লোজড গ্রুপের মাধ্যমে রাষ্ট্রবিরোধী কার্যক্রম পরিচালনা এবং এর জন্য অর্থ সংগ্রহ করত। তাদের এসব কর্মকাণ্ডের বিভিন্ন বিষয়বস্তু ল্যাপটপে সংরক্ষিত আছে। এমনকি তারা বিভিন্ন অডিও-ভিডিও কন্টেন্ট এডিট করে দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের অপচেষ্টায় লিপ্ত ছিল।
গ্রেপ্তার আব্দুল্লাহ আল মাহমুদ ও তাওহীদুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় রাষ্ট্রবিরোধী নাশকতা, সন্ত্রাস ও বিস্ফোরক আইনে একাধিক মামলা রয়েছে। গ্রেপ্তার প্রত্যেকের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ প্রক্রিয়াধীন আছে বলে জানায় র্যাব।