• ঢাকা
  • রবিবার, ১৫ ডিসেম্বর, ২০২৪, ৩০ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জমাদিউস সানি ১৪৪৬
গ্রিসে অবৈধযাত্রা

ঋণের বোঝা নিয়ে দেশে ফেরত ১৯ বাংলাদেশি


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: জানুয়ারি ৪, ২০২২, ০৪:৩৯ পিএম
ঋণের বোঝা নিয়ে দেশে ফেরত ১৯ বাংলাদেশি

সরকারের কাছে ক্ষতিপূরণের দাবিতে তিন দিন ধরে অনশন করছে ১৯ বাংলাদেশি। অবৈধভাবে ইউরোপের দেশ গ্রিসে প্রবেশ করে দীর্ঘ বন্দি দশা শেষে তাদের দেশে ফেরত পাঠানো হয়।

মঙ্গলবার (৪ ডিসেম্বর) সরেজমিনে দেখা গেছে, রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে তিন দিন ধরে অনশন ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করতে দেখা গেছে গ্রিস ফেরত ওই ১৯ জনকে। তাদের দাবি, জোর করে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।

ভুক্তভোগী  সোহেল জানান, ২০১৯ সালে ভিজিট ভিসায় প্রথমে দুবাই গিয়ে তারপর ইউরোপের গ্রিসে পৌঁছান তিনি। এরপর বৈধ কাগজপত্র থাকায় সেই দেশের সরকার তাদের সেখানকার আশ্রয় ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ক্যাম্পে নিয়ে যাওয়ার পর তাদের ১৮ মাস পর বৈধতা দেওয়া হয়। কিন্তু বাংলাদেশ দূতাবাসের কাউন্সিলর ইব্রাহিম খালেদ জোর করে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেন। ঋণ করে বিদেশ যাওয়ার ফলে সেই টাকা তারা পরিশোধ করতে পারছেন না। তাই গ্রামের বাড়িতেও যেতে পারছেন না।

গোপালগঞ্জ জেলার মো. মোশাররফ হোসেন বাড়ির জমি বন্ধক রেখে গ্রিসযাত্রা করেন। সংবাদ প্রকাশকে তিনি বলেন, “২০১৮ সালে সোহেলের মতো দুবাই হয়ে গ্রিসে প্রবেশ করলে ওই দেশের পুলিশ তাদের আশ্রয় ক্যাম্পে নিয়ে যায়। দীর্ঘদিন ক্যাম্পে থাকার পর জোর করে তাদের দেশে পাঠিয়ে দেয় বাংলাদেশ দূতাবাস।”

মোশাররফ আরো বলেন, “গ্রিস সরকার প্রত্যেক অবৈধ অধিবাসীর বৈধ হওয়ার একটা সুযোগ দেয়। আমাদের সেই সুযোগ দিয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশের দূতাবাস আমাদের দেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। ১৯ ডিসেম্বর দেশে ফেরার পর এখন পর্যন্ত গ্রামের বাড়ি যেতে পারিনি। গ্রামের বাড়ি গেলে ঋণদাতারা বাড়িতে আসেন।”

অনশনরত ভুক্তভোগীরা সংবাদ প্রকাশকে বলেন, “বর্তমানে আমরা খুব অসহায় অবস্থায় আছি। কারণ আমরা গ্রিস যাওয়ার জন্য প্রত্যেকে ১৫ লাখ টাকার উপরে খরচ করেছি। ওই টাকা আমরা ধার করে, জমি বিক্রি করে বা বন্ধক রেখে সুদে টাকা নিয়ে গিয়েছি। এসব ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে দেশে ফিরে আমরা সর্বহারা হয়ে পথে পথে ঘুরছি।”

ভুক্তভোগীদের দাবি, ক্ষতিপূরণ হিসেবে এবং ঋণের হাত থেকে মুক্ত হতে সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যেকে কমপক্ষে দশ লাখ টাকা করে দেওয়া হোক। গ্রিসে পুনরায় ভিসা প্রক্রিয়া চালু হলে তাদের অগ্রাধিকারভিত্তিতে সুযোগ দেওয়া হোক।

অনশনকারীরা হলেন, মো. সোহেল, হাবিবুর রহমান (ভোলা), মো. মোশাররফ (গোপালগঞ্জ),  মোতাহার মিয়া (সিলেট), তানবীর আহমেদ (সিলেট), মো. রাজু (লক্ষ্মীপুর), মো. ইয়াদুর (সিলেট), মো. শাহাজাহান (মাগুরা), ইমরান (সিলেট), মো. মোজাম্মেল (ফেনী), টিটন দেব (সিলেট), আফদাল হোসেন (সিলেট), তানজীল আহমেদ (সিলেট), মো. আলী (সিলেট), রোকন (সিলেট), আফজাল (ঢাকা), কবির (কিশোরগঞ্জ), মোজাম্মেল (কিশোরগঞ্জ), শাহ আলম (খুলনা)।

Link copied!