• ঢাকা
  • মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫, ৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২, ২১ জ্বিলকদ ১৪৪৬

নির্বাচনে বিলম্ব কেন, সরকারকে ব্যাখ্যা দিতে হবে : নজরুল ইসলাম 


সংবাদ প্রকাশ প্রতিবেদক
প্রকাশিত: মে ১৯, ২০২৫, ০৯:২৯ পিএম
নির্বাচনে বিলম্ব কেন, সরকারকে ব্যাখ্যা দিতে হবে : নজরুল ইসলাম 

বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, “নির্বাচনে কেন দেরি হবে অন্তর্বর্তী সরকারকে তার ব্যাখ্যা অন্তত দিতে হবে। দীর্ঘ লড়াই-সংগ্রামের মাধ্যমে ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে, কিন্তু গণতন্ত্র এখনো পুনরুদ্ধার হয়নি।”

সোবার (১৯ মে) দুপুরে জাতীয় প্রেসক্লাবের আবদুস সালাম মিলনায়তনে এক আলোচনাসভা থেকে এ ব্যাখ্যা দাবি করেন তিনি।

নজরুল ইসলাম খান বলেন, “দীর্ঘ ১৬ বছরের বেশি সময় ধরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন করে যাচ্ছি। এই আন্দোলনে জাতিসংঘের রিপোর্ট অনুযায়ী ১৭ শতাধিক মানুষ মারা গেছেন। জুলাই আন্দোলনে সহস্রাধিক মানুষ খুন হয়েছেন। এই সময়ে লাখ লাখ মানুষের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। হাজারো মানুষ আহত ও অঙ্গহানির শিকার হয়েছে। অনেকেই হয়রানি ও নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এরপরও আন্দোলন করেছি। যার মূল লক্ষ্য ছিল গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করা ও ফ্যাসিবাদী সরকারের পতন ঘটানো। শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছেও। দলমত নির্বিশেষে দেশের সব গণতন্ত্রকামী মানুষ এই লড়াইয়ে শরিক হয়েছিল। তবে জনগণের নির্বাচিত সরকার তথা গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার হয়নি।”

শহীদদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে হলে দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে নির্বাচিত সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে হবে মন্তব্য করে তিনি বলেন, “অবশ্য এজন্য কিছু মেরামত প্রয়োজন। ফলে সংস্কারের দাবি ওঠে। অবশ্য যখন কেউ সংস্কার নিয়ে কথা বলেনি তখন ২০১৭ সালে খালেদা জিয়া ‘ভিশন-২০৩০‘ ঘোষণা দেন। এরপর ২০২৩ সালের ১৩ জুলাই তারেক রহমান ২৭ দফা রূপরেখা ঘোষণা করেন। যেটি সব দলের সঙ্গে আলোচনা করে পরে ৩১ দফা করা হয়েছে। আজ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সরকার যে সংস্কার প্রস্তাব করছে সেগুলো আমাদের ৩১ দফার মধ্যে রয়েছে। আমরা কখনো জনগণের ভোটে ক্ষমতায় গেলে সেই রূপরেখা বাস্তবায়ন করব ইনশাআল্লাহ।”

দুইবারের বেশি প্রধানমন্ত্রী থাকার প্রশ্ন সামনে এনে নজরুল ইসলাম খান বলেন, “দুইবারের বেশি কেউ প্রধানমন্ত্রী থাকতে পারবেন না, সেটি আমরাই প্রথম বলেছি। ক্ষমতায় ভারসাম্য আনার কথা বলেছি। কারণ আমরা চাই রাষ্ট্রটি ভালো চলুক, যেন কেউ একক ক্ষমতার অধিকারী এবং জনগণ ক্ষতিগ্রস্ত না হয়। আমরা সংস্কার চাই। তবে সেটি অবশ্যই প্রয়োজন এবং সক্ষমতা অনুযায়ী হতে হবে। সংবিধান সংশোধনের জন্য পরবর্তী সংসদের জন্য অপেক্ষা করতে হবে।”

জুলাই সনদ বিষয়ে তিনি বলেন, “ঐকমত্য কমিশনে আমরা যারা ঐকমত্য পোষণ করেছি সেটার একটা তালিকা করে সনদ করা হোক। তাহলেই তো সমস্যা থাকার কথা না। ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন করতে বাধা কেন? নির্বাচন দেরি কেন হবে তার ব্যাখ্যা তো আপনাদের দিতে হবে। আমরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত সংসদ ও সরকার চাই।”

বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপস নয় মন্তব্য করে নজরুল ইসলাম বলেন, “আমরা আওয়ামী পুনর্বাসন করছি বলে আলোচনা হচ্ছে। যেই দলটা সবচেয়ে বেশি নির্যাতিত, দলের চেয়ারপারসনকে বিনা কারণে কারাগারে রেখেছে। তারেক রহমানকে নির্বাসনে রেখেছে। ছোট ভাই মালয়েশিয়ায় মারা গেছেন। বিএনপির মহাসচিবসহ এমন কোনো নেতাকর্মী নেই যার বিরুদ্ধে মামলা দেয়নি। আর আমরা আওয়ামী লীগের পুনর্বাসন করছি! এটা কী সম্ভব? এসব ফাজলামোর শেষ হওয়া উচিত। আমরা বেঁচে থাকতে আওয়ামী লীগের সঙ্গে আপস হবে? কেউ করতে গেলেও আমরা বাধা দেবো।”

নির্বাচন বানচালের ষড়যন্ত্র প্রতিহত করা ও বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের প্রতিবন্ধকতা দূরীকরণের দাবিতে এই সভার আয়োজন করে ১২ দলীয় জোট। জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) চেয়ারম্যান ও ১২ দলীয় জোট প্রধান মোস্তফা জামাল হায়দারের সভাপতিত্বে ও বাংলাদেশ এলডিপির মহাসচিব তমিজ উদ্দিন টিটুর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন ১২ দলীয় জোটের মুখপাত্র বাংলাদেশ এলডিপির চেয়ারম্যান শাহাদাত হোসেন সেলিম, জোটের সমন্বয়ক বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, বক্তব্য দেন জমিয়াতে উলামায়ে ইসলাম বাংলাদেশের মহাসচিব মুফতি গোলাম মহিউদ্দিন ইকরাম, জাতীয় পার্টির (কাজী জাফর) মহাসচিব আহসান হাবিব লিংকন, লেবার পার্টি বাংলাদেশের চেয়ারম্যান লায়ন ফারুক রহমানসহ অনেকে।

জাতীয় বিভাগের আরো খবর

Link copied!