মানুষ রিজার্ভের বিষয়ে বিশেষজ্ঞ হয়ে উঠছেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেছেন, “এখন মানুষ চা-স্টল ছাড়াও বিভিন্ন জায়গায় রিজার্ভ নিয়ে আলোচনা করছে। কোভিড-১৯, ভর্তুকি দেওয়া, প্রকল্পে বিনিয়োগ এবং বিদেশি ঋণ পরিশোধে এ টাকা ব্যয় হয়েছে।”
শুক্রবার (২৫ নভেম্বর) বিকালে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদের (স্বাচিপ) পঞ্চম জাতীয় সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
খালেদা জিয়া ৫ বিলিয়নের কিছু ওপরে রিজার্ভ রেখে গিয়েছিলেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “করোনাকালে যেহেতু আমদানি বন্ধ ছিল, রেমিট্যান্স সরকারিভাবে এসেছে, কোনো হুন্ডি ব্যবসা ছিল না, কোনো খরচ ছিল না তাই আমাদের রিজার্ভ ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়েছিল। তবে, বাংলাদেশ তাদের সব ঋণ সব সময় সঠিকভাবে পরিশোধ করে এসেছে এবং একবারের জন্যও ঋণখেলাপি হয়নি।”
তিনি বলেন, “আমাদের কাছে এত পরিমাণ রিজার্ভ মানি আছে যে, আমরা পাঁচ মাসের জন্য খাদ্য আমদানি করতে পারি, যদিও যেকোনো দুর্যোগ কাটিয়ে উঠতে তিন মাসের জন্য খাদ্য আমদানির রিজার্ভ থাকতে হয়।”
প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোভিড কমে আসার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের আমদানি-রপ্তানি বেড়েছে। ভ্যাকসিন ক্রয় এবং করোনা মোকাবিলার আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে হয়েছে। চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্যকর্মীদের প্রশিক্ষণ দিতে হয়েছে। এগুলোর জন্য পানির মতো টাকা খরচ হয়েছে। তারপরে এখন আমাদের খাদ্য আমদানি করতে হচ্ছে। তার জন্য অধিক দামে আমদানিতে অর্থ ব্যয় হচ্ছে।”
২০০ ডলারের গম ৬০০ ডলারে কিনতে হচ্ছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, “ভোজ্যতেল সেই ব্রাজিল থেকে শুরু করে পৃথিবীর যে দেশে পাওয়া যায় আমরা নিয়ে আসছি। মানুষের ভোগ্যপণ্য প্রাপ্তিতে যাতে কোনো সমস্যা না হয় সে জন্য কার্যকর পদক্ষেপ নিয়েছি।”
শেখ হাসিনা বলেন, “এখন যেটুকু রিজার্ভ সেটা আমাদের দেশের জন্য প্রয়োজন, সেটা আমাদের রাখতে হবে। রিজার্ভ শুধু আমাদের দেশে নয় পৃথিবীর অনেক দেশের রিজার্ভ কমে গেছে। সরকার শ্রীলঙ্কাকে কিছু সহযোগিতা করেছে এবং আরও অনেক দেশ বাংলাদেশের কাছে সহযোগিতা চেয়েছে।”
এক ইঞ্চি জমি ফেলে রাখবেন না উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “যে যা পারেন উৎপাদন করেন। নিজেরা সাশ্রয় করেন। নিজের খাদ্য নিজে জোগান দিন। আমি জানি সবাই তা করতে পারেন।”
তিনি বলেন, “একটা গুজব ছড়াচ্ছে ব্যাংকে টাকা নাই, ব্যাংকে টাকা পাওয়া যাবে না। এইটা শুনে সবাই টাকা ব্যাংক থেকে তুলে ঘরে রাখছেন। আসলে ঘরে টাকা রাখা মানে চোরকে সুযোগ করে দেওয়া। কাজেই চোরকে সুযোগ করে দেবেন না।”
তিনি আরও বলেন, “সরকার এই বিশ্বমন্দার মাঝেও উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে এবং এ ক্ষেত্রে কিছু অগ্রগতিও রয়েছে। তবে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।”
অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্বাচিপের সভাপতি অধ্যাপক ডা. এম ইকবাল আর্সলান ও মহাসচিব অধ্যাপক ডা. এম এ আজিজ বক্তৃতা রাখেন। এছাড়া মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী অধ্যাপক ডা. আ ফ ম রুহুল হক।
আপনার মতামত লিখুন :