আগামী অর্থবছরের বাজেটে সংবাদপত্রের প্রধান কাঁচামাল নিউজপ্রিন্টের ওপর শুল্ক ও বিভিন্ন কর প্রত্যাহারসহ কয়েকটি দাবি জানিয়েছে সংবাদপত্রের মালিকদের সংগঠন নিউজপেপার ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (নোয়াব)।
জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সঙ্গে প্রাক্-বাজেট আলোচনায় নোয়াবের পক্ষ থেকে এসব দাবি করা হয়েছে বলে বুধবার (৩১ মে) নোয়াবের বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়।
বাজেট তৈরির জন্য খাতভিত্তিক প্রতিনিধিত্বকারী প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনের সঙ্গে প্রাক্-বাজেট আলোচনা করে এনবিআর। এর অংশ হিসেবে নোয়াবের সঙ্গে আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়।
নোয়াবের সভাপতি এ. কে. আজাদের স্বাক্ষর করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্বায়ন ও ডিজিটাল মাধ্যমের যুগে ছাপা সংবাদপত্র এমনিতেই রুগ্ন শিল্পে পরিণত হয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে পত্রিকাগুলোর বিজ্ঞাপন ও প্রচারসংখ্যা ব্যাপকভাবে কমে যাওয়ায় বিজ্ঞাপনের আয় দিয়ে উৎপাদন ব্যয়ের ঘাটতি পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
নোয়াব বলেছে, দেড় বছর আগেও প্রতি টন বিদেশি নিউজপ্রিন্টের দাম ছিল ৫৭০ ডলার; তা এখন ৭০০ ডলারের বেশি। মার্কিন ডলারের বিনিময়মূল্য ছিল ৮৫ টাকা, যা এখন ১০৯ টাকায় উঠেছে। বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সংবাদপত্রকে ভয়ংকর সংকটের মুখে ফেলেছে।
এমন প্রেক্ষাপটেই সংবাদপত্র শিল্পকে বাঁচানোর জন্য নোয়াব কয়েকটি দাবি করেছে। নোয়াব বলছে, নিউজপ্রিন্টের ওপর বর্তমানে ৫ শতাংশ আমদানি শুল্ক দিতে হয়। তবে এর সঙ্গে অতিরিক্ত হিসাবে ১৫ শতাংশ মূল্য সংযোজন কর (মূসক/ভ্যাট), ৫ শতাংশ অগ্রিম আয়কর (এআইটি) ও ৫ শতাংশ অগ্রিম কর (এটি) রয়েছে। বীমা, ব্যাংক, পরিবহন ব্যয়সহ প্রকৃত ব্যয় (ল্যান্ডেড) দাঁড়াচ্ছে নিউজপ্রিন্টের দামের ওপর ৩০ শতাংশের বেশি। বর্তমানে সংবাদপত্র শিল্পের সংকটময় পরিস্থিতিতে এই শুল্ক-কর প্রত্যাহার খুবই জরুরি।
করপোরেট কর কমানোর দাবি জানিয়ে নোয়াব বলেছে, সংবাদপত্র সেবাশিল্প হওয়া সত্ত্বেও একে প্রাইভেট লিমিটেড কোম্পানি, অনিবন্ধিত কোম্পানি ও নন-রেসিডেনসিয়াল শ্রেণিতে রাখা হয়েছে এবং করপোরেট কর ৩০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়েছে। নোয়াব সংবাদপত্রের করপোরেট কর ১০ থেকে ১৫ শতাংশের মধ্যে নির্ধারণের দাবি জানিয়েছে।
সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন আয়ের ওপর উৎসে আয়কর (টিডিএস) ৪ শতাংশ, এআইটি ৫ শতাংশ। মোট কর ৯ শতাংশ ধরা হয়। নোয়াব বলছে, অধিকাংশ সংবাদপত্র প্রতিষ্ঠানের মোট আয়ের ৯ শতাংশ লভ্যাংশই থাকে না। তাই সংবাদপত্রের বিজ্ঞাপন আয়ের ওপর টিডিএস কমিয়ে ২ শতাংশ এবং কাঁচামালের ওপর উৎসে কর শূন্য শতাংশ করার দাবি জানিয়েছে নোয়াব।


































