বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী অভিযোগ করেছেন, বর্তমান সরকার রাজনৈতিক বিভাজন তৈরি করেছে এবং নিবন্ধিত দলগুলোর মধ্য থেকে মাত্র তিনটিকে রাষ্ট্রীয় বৈঠকে ডাকছে। তিনি জানান, এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগে সরকারের আহ্বানে কোনও কর্মসূচিতে অংশ না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।
রোববার (১৬ নভেম্বর) বিকেলে আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে সিইসির সঙ্গে মতবিনিময় সভায় তিনি এসব মন্তব্য করেন। তবে নির্বাচন কমিশন সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান হওয়ায় তাদের ডাকে উপস্থিত হয়েছেন বলে জানান তিনি।
‘জুলাই আন্দোলনকারীদের শাস্তির সুযোগ নেই’
কাদের সিদ্দিকী বলেন, জুলাই আন্দোলনে যারা অংশ নিয়েছিলেন তাদের শাস্তি দেওয়ার সুযোগ নেই। তার ভাষায়, “৫ আগস্ট শেখ হাসিনার পতন মানুষের ক্ষোভ আর আল্লাহর গজবের ফল। আন্দোলনকারীদের শাস্তি দিলে সেটা আল্লাহর গজবকেও অস্বীকার করা হবে।”
তিনি আরও বলেন, শেখ হাসিনার বিদায় মানে আওয়ামী লীগ বা মুক্তিযুদ্ধের মূল্যবোধের পতন নয়।
জয়বাংলা স্লোগান নিয়ে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, “স্লোগান পছন্দ না-ও হতে পারে, কিন্তু জয়বাংলা বললে জেলে নিতে হবে—এমন পরিস্থিতির যৌক্তিকতা কী?”
জামায়াত ও এনসিপি প্রসঙ্গ
তিনি বলেন, ইসলামী ভাবাপন্ন সব মানুষকেই তিনি ভালোবাসেন। “জামায়াত ইসলামী সহিহ নিয়তে ক্ষমা চাইলে তাদেরও ভালোবাসতাম,” মন্তব্য করেন তিনি।
এছাড়া এনসিপি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, দলটি মুক্তিযুদ্ধকে সম্মান জানাতে ব্যর্থ হয়েছে।
ড. ইউনূসকে নিয়ে বক্তব্য
ড. ইউনূসকে ক্ষমতার সময় হয়রানি করা হয়েছিল দাবি করে কাদের সিদ্দিকী বলেন, “আমরা তার পাশে ছিলাম। তার কাছ থেকে অনেক আশা ছিল। কিন্তু ক্ষমতায় গিয়ে তিনিও বদলে গেছেন।”
গণভোট ও নির্বাচনী পরিস্থিতি
জাতীয় নির্বাচনের দিন ঘোষিত গণভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “৫ শতাংশও ভোট পড়বে না। মানুষ গণভোটে আগ্রহ দেখাবে না।”
আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টিকে নির্বাচনে অংশ নিতে না দেওয়ার গুঞ্জন নিয়েও উদ্বেগ জানান তিনি। তার মতে, “সংখ্যাগরিষ্ঠ দলকে বাইরে রেখে সরকার ভালো ভোট করতে পারবে না।”
লকডাউনকে রাজনৈতিক কর্মসূচি হিসেবে ঘোষণা করাকে তিনি ‘দৈন্যতার পরিচয়’ বলে মন্তব্য করেন।
শেষে তিনি সরকারকে উদ্দেশ্য করে বলেন, “ভালো ও নিরপেক্ষ নির্বাচন করতে পারলে জনগণের কাছে সম্মানিত হবেন।”
































