দেশে কোনো ধরনের অস্থিতিশীল পরিবেশ দেখতে চাই না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি বলেছেন, “আমরা দেশে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি দেখতে পাচ্ছি। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারে থাকা কিছু ব্যক্তির বক্তব্যে বিভিন্ন দিকে অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।”
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) কুমিল্লা নগরীর টাউন হল মাঠে কুমিল্লা মহানগর বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
তারেক রহমান বলেন, “আমরা রাজনৈতিক দলগুলো যদি বিভেদে জড়িয়ে পড়ি, তাহলে অপশক্তি সুযোগ নেবে। দেশ এবং জাতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। বহু ক্ষতির মধ্য দিয়ে বিগত ১৫টি বছর মানুষ অতিবাহিত করেছে। বাংলাদেশের স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের পক্ষ থেকে সকল প্রকার চেষ্টা আমরা অব্যাহত রাখব।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “আমরা খেয়াল করে দেখেছি, অন্তর্বর্তী সরকারের কিছু কর্মকাণ্ড নিয়ে মানুষের মাঝে বিভিন্ন ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। আমরা চাই এই সরকারকে সমর্থন করতে। আমরা চাই অন্তর্বর্তীকালীন সরকার মানুষের ভোটের অধিকার ফিরিয়ে দিবে। যেই ভোটের অধিকার লুণ্ঠন করে ফ্যাসিস্ট খুনি হাসিনা দেশ ছেড়ে পালিয়ে গেছে।”
তারেক রহমান বলেন, “বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। আমরা যত বেশি ঐক্যবদ্ধ থাকব গণতন্ত্র তত বেশি সুসংহত হবে। দেশবিরোধী এবং ষড়যন্ত্রকারীদের লক্ষ্য নস্যাৎ হয়ে যাবে। যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নিশ্চিত না হবে ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের সংগ্রাম অব্যাহত রাখতে হবে। আমরা আগামীতে দেশকে কীভাবে এগিয়ে নিতে চাই সেই পরিকল্পনাগুলো মানুষের কাছে তুলে ধরব। আমরা প্রত্যাশা করব অন্যান্য সব রাজনৈতিক দলগুলোও তাদের পরিকল্পনা দেশের মানুষের সামনে তুলে ধরবে। দেশের মানুষ হচ্ছে সব চেয়ে বড় বিচারক। তারাই সবকিছু যাচাই-বাছাই করে দেখবে। দেশের মানুষই সিদ্ধান্ত নেবে দেশ পরিচালনার জন্য আগামীতে কাদের দায়িত্ব দেবে।”
বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান বলেন, “দেশের মানুষের ভাগ্যের পরিবর্তন যদি করতে হয় তাহলে অবশ্যই দেশে স্থিতিশীলতা বজায় রাখতে হবে। আমরা দেখতে পাচ্ছি প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অস্থিতিশীলতা বিরাজ করছে। এই সরকারকে আমরা সহযোগিতা করতে চাই। যেই আস্থা এবং বিশ্বাস নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে মানুষ সমর্থন করেছে তারা যেন সেই আস্থা এবং তাদের নিরপেক্ষতা বজায় রাখেন।”
তারেক রহমান বলেন, “আমাদের কিছু রাজনৈতিক বন্ধু আমাদের সঙ্গে মতপার্থক্য করছে। মতপার্থক্য হতেই পারে। মতপার্থক্য থাকলে আমরা বসব। আলোচনা করব; যা দেশের মানুষের স্বার্থে এবং দেশের মানুষের কল্যাণে হয় তাই করব। এই মতপার্থক্যকে আমরা কোনোভাবেই বিভেদে রূপান্তর করতে চাই না। আমরা নিজেরা বিভেদে জড়িয়ে পড়লে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হবে দেশ এবং দেশের মানুষ।”
তারেক রহমান আরও বলেন, “গণতান্ত্রিক বিশ্বে একটি উত্তম পন্থা হচ্ছে ভোটের মাধ্যমে জনগণের রায় নিয়ে দেশ পরিচালনা করা। তাই একটি গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমাদেরও প্রধান লক্ষ্য হচ্ছে একটি অবাধ সুষ্ঠু নিরপেক্ষ নির্বাচন। আমরা ইতোপূর্বে লক্ষ্য করছি যে, কিছু রাজনৈতিক দলের বন্ধুরা বলছে বিএনপি শুধু নির্বাচন নির্বাচন করে। গণতান্ত্রিক দল হিসেবে আমরা নির্বাচন দাবি করব এবং জনগণের কাছে ভোট চাইব, এটাই স্বাভাবিক।”